পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
‘ড্রাগ একান্তই একটি শহুরে সমস্যা’—এই মিথ ভেঙে দিয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ এবং ভারত সরকারের যৌথ সমীক্ষা। ইউএন অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম-এ দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক প্রতিনিধি গ্যারি লিউসের বক্তব্য, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ড্রাগ নেওয়া এবং নেশা সংক্রান্ত ভয়ানক ঝুঁকির ব্যাপার-স্যাপারে শহরে-গ্রামে প্রভেদ নেই। ইঞ্জেকশনের প্রশ্নে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বদনাম আছে বটে, কিন্তু সমস্যাটি কমবেশি সারা দেশেরই। বরং অবাক করা ঘটনা এটাই যে হেরোইন এবং ইঞ্জেক্টিং ড্রাগ ইউজার্সের সন্ধান গ্রামাঞ্চলেও যথেষ্ট পাওয়া গিয়েছে। সম্প্রতি এক স্টারপুত্রকে নিয়ে টানাহ্যাঁচড়ার পর নিষিদ্ধ মাদকগ্রহণের অভিশাপটি আবার সর্বসমক্ষে এসেছে। জানা যাচ্ছে, বিনোদন জগতের অনেক জনপ্রিয় মুখই আসলে কালো। তাঁরা এইসব মাদক গ্রহণ করেন এবং অন্ধকার জগতের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক রয়েছে। সমস্যা এই যে, এই কুঅভ্যাস ও অপরাধ শুধু তাঁদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, তাঁরা নানাভাবে সাধারণ যুবসমাজকে প্রভাবিত করে ফেলেন। তার ফলে বিনোদন জগতের সঙ্গে বাস্তব জীবনের ফারাকটা দ্রুত মুছে যাচ্ছে।
ভারত সরকারের একটি হিসেব অনুসারে, গত দু-দশকে নানাবিধ নেশাখোরের সংখ্যা হ্রাসের বদলে অনেক বেড়ে গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে হেরোইন নেওয়ার ঝোঁক। ২০০৪ সালে হেরোইনখোর চিহ্নিত হয়েছিল ৯ হাজারের মতো। ২০১৮ সালে সেটা বেড়ে হয় আড়াই লক্ষ প্রায়। গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিস স্টাডি অনুসারে, শুধু ২০১৭ সালেই সারা পৃথিবীতে নিষিদ্ধ মাদকের বলি হয় সাড়ে ৭ লক্ষ নরনারী। তাদের মধ্যে ভারতীয়ের সংখ্যা ছিল ২২ হাজারের মতো। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, বিশ্বজুড়ে নিষিদ্ধ মাদকের যে বাণিজ্য চলে তার পরিমাণ ৬৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার! সহজ কথায়, ভারত এখন নিষিদ্ধ মাদক বাজারেরও টার্গেট। পশ্চিমবঙ্গকেও আর আলাদাভাবে আগলে রাখার সুযোগ নেই। ড্রাগ কারবারিদের শ্যেনদৃষ্টিতে আজ বাংলাও। তাই সাধু সাবধান! নিজেদের ঘর নিজেদেরই সামলাতে। নিষিদ্ধ ড্রাগ মানচিত্রে ঢুকে পড়ল এবার শান্ত মফস্সল বর্ধমান শহরও। সেখানে শুধু ট্রেডিং হয় না, ওই শহরে তৈরি হয়েছে আস্ত এক হেরোইন কারখানাও! এই দুষ্কৃতীদের যাতে দৃষ্টান্তমূলক সাজা হতে পারে তার ব্যবস্থাই সরকারকে করতে হবে। শুধু বর্ধমান নয়, খোঁজ নিতে হবে বাংলার আর কোন কোন জায়গায় এই পাপ কারবার শিকড় গাড়বার চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রয়োজনে অন্য সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়েই এই আন্তর্জাতিক চক্রের বিরুদ্ধে অল আউট অভিযানে নামতে হবে। এই ব্যাপারে কোনও তরফের সামান্যতম দুর্বলতাও ভারতীয় যুবসমাজের ভবিষ্যৎ বিপন্ন করে তুলতে পারে।