সন্তানের সাফল্যে গর্ব বোধ। আর্থিক অগ্রগতি হবে। কর্মে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। ঘাড়, মাথায় যন্ত্রণা বৃদ্ধিতে বিব্রত ... বিশদ
এখানেই রাষ্ট্রের দায়িত্ব। নাগরিকরা সারাজীবন নানাভাবে করভার বহন করেন। সেই অর্থে রাজকোষ ভরে। সরকার বাজেট তৈরি করে। বাজেট অনুযায়ী সরকারি কাজকর্ম হয় এবং উন্নয়নের চাকা গতিশীল থাকে। কিন্তু সেই নাগরিকরাই যখন নানাভাবে বিপন্ন তখন তাঁদের বাঁচানোর দায়িত্ব সরকারকেই স্বীকার করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ দায়টি গ্রহণের কথা সরকার যখন নিজের মুখে ঘোষণা করে না তখনই নাগরিককে আইনের দ্বারস্থ হতে হয়। এরকমই একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার সুপারিশ করেছে, কোভিডে মৃত্যুতে সংশ্লিষ্ট পরিবার ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পাবে। তবে সেই টাকার দায় কেন্দ্র নেবে না। এই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে রাজ্যের আপৎকালীন তহবিল বা স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ফান্ড থেকে। বুধবার এই মর্মে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেখানে ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির (এনডিএমএ) গাইডলাইন অনুসারে বলা হয়েছে, প্রত্যক্ষভাবে কোভিডে তো বটেই, করোনাত্রাণের সঙ্গে যুক্ত কারও মৃত্যুতেও পরিবার একইরকম ক্ষতিপূরণ পাবে। ৩০ জুন কেন্দ্রকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে আর্থিক ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত গাইডলাইন তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিন সেটিই আদালতকে জানানো হয়। কোভিডে মৃতের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি উঠেছিল। তারই ভিত্তিতে এই মামলার শুনানিতে কেন্দ্রকে গাইডলাইনটি তৈরি করতে বলা হয়। সংক্রমণের একেবারে গোড়ার দিকে করোনায় মৃতের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছিল। কিন্তু, মৃতের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকায় কেন্দ্র সেই মানবিক সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহার করে নেয়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আর্থিক ক্ষতিপূরণ রাজ্যের তহবিল থেকে দিতে হবে কেন? রাজ্যের কোষাগারে এত টাকার জোগান কোত্থেকে আসবে? সীমিত আর্থিক ক্ষমতার মধ্যেই রাজ্যগুলিকে বিপুল অর্থ খরচ করতে হয়েছে এবং হচ্ছে। সেখানে নতুন এই বিরাট ব্যয়ভার রাজ্যগুলির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া অন্যায়। স্বভাবতই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন সংস্থার এই মনোভাবে তাদের আপত্তির কথা স্পষ্ট করেছে বাংলা। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলাদা তহবিল গঠন করেছেন। ওইসঙ্গে আরও একাধিক পদক্ষেপ করেছেন তিনি। কিন্তু, কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রাপ্য টাকা রাজ্য পাচ্ছে না। তারপরও সবকিছু রাজ্যের উপর চাপিয়ে দিলে চলবে কী করে? মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পিনারাই বিজয়নও একই সুরে কেরলের আপত্তির কথা জানিয়ে দিয়েছেন। বাংলা এবং কেরলের এই আপত্তি কোনওভাবেই অসঙ্গত নয়। কোনও সুপারিশ নয়, উপযুক্ত অঙ্কের আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের পুরো দায়িত্ব নিতে হবে মোদি সরকারকেই। কেন্দ্র যদি সেটা না মানে তবে ধরে নিতে হবে যে আসল সময়ে তারা একটি মানবিক দায়িত্ব অস্বীকার করছে। একটি অসম্ভব দায় রাজ্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে মানুষের কাছে রাজ্য সরকারগুলিকে খারাপ করার কৌশল নয় তো এটি? তাই একটি বাংলা প্রবাদ ধার করে মোদি সরকারকে যথাযথভাবে চিহ্নিত যায়, খেতে দেওয়ার মুরোদ নেই কিল মারার গোঁসাই!