সন্তানের সাফল্যে গর্ব বোধ। আর্থিক অগ্রগতি হবে। কর্মে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। ঘাড়, মাথায় যন্ত্রণা বৃদ্ধিতে বিব্রত ... বিশদ
এনসিআরবি-র ক্রাইম ইন ইন্ডিয়া ২০১৯ রিপোর্ট থেকে আরও পরিষ্কার, ওই একই সময়ে তফসিলি জাতি (এসসি) এবং তফসিলি জনজাতির (এসটি) বিরুদ্ধেও অপরাধের হার বেড়েছে ৭.৩ শতাংশ হারে। এই দুই অপরাধের খতিয়ানে ‘টপ করেছে’ সেই উত্তরপ্রদেশ! ২০১৯-এ সারা দেশে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের কেস রেকর্ড হয়েছিল ৪ লক্ষ ৫ হাজার ৮৬১টি। তার মধ্যে পারিবারিক হিংসা ৩০.৯ শতাংশ, শ্লীলতাহানি ২১.৮ শতাংশ, অপহরণ ১৭.৯ শতাংশ এবং ধর্ষণ ৭.৯ শতাংশ। ২০১৮ সালের পুলিস রেকর্ড অনুসারে, প্রতি ১ লক্ষ নারীর মধ্যে ৫৮.৮ জন অপরাধের শিকার হয়েছিলেন। পরের বছরই সংখ্যাটি বেড়ে হয়েছিল ৬২.৪। ২০১৯-এ উত্তরপ্রদেশে মহিলাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৫৯ হাজার ৮৫৩। সংখ্যাটি দেশের যেকোনও রাজ্যের মধ্যে সর্বাধিক। শতাংশের হিসেবেও হাড় হিম করা—সারা দেশের ১৪.৭ শতাংশ! শিশুকন্যাদের হালও যে যোগীরাজ্যে অত্যন্ত করুণ সেটাও খোলসা করেছে এনসিআরবি। ২০১৯ সালে পকসো আইনে সেখানে শিশুকন্যাদের বিরুদ্ধে অপরাধ রেকর্ড হয়েছিল ৭ হাজার ৪৪৪টি। পণপ্রথার শিকার কত সেখানে? এনসিআরবি রিপোর্ট ২০১৯ বলছে—২ হাজার ৪১০টি। প্রতি লক্ষ জনসংখ্যায় ২.২। এটাও তামাম ভারতে সর্বোচ্চ। ওই বছর সারা দেশে অ্যাসিড আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন ১৫০ জন মহিলা। তাঁদের মধ্যে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন ৪২ জন বা সারা দেশের ২৮ শতাংশ!
হঠাৎ ২০২০ সালে এসে এনসিআরবি রিপোর্টে উল্টো সুর দেখা গেল। অমিত শাহের দপ্তররের রিপোর্ট দাবি করল, দেশের সর্বাধিক জনসংখ্যার রাজ্য হওয়া সত্ত্বেও উত্তরপ্রদেশে ক্রাইম কমছে! বিশেষ করে বেড়ে গিয়েছে মহিলাদের নিরাপত্তা! বিজেপি নেতৃত্বের সুরে সংবাদ মাধ্যমেরও একাংশকে দিয়ে দাবি করানো হল, বিরোধীরা স্রেফ কুৎসা করছেন। আসলে যোগী-জমানা বেশ ভালো। যোগী আদিত্যনাথের ‘সুশাসন’ নিয়ে মোদির কান ঝালাপালা হচ্ছিল কয়েক বছর যাবৎ, তাই প্রশ্ন উঠেছে সারা দেশে, এনসিআরবি-র সর্বশেষ রিপোর্টে কি তারই কোনও প্রতিফলন আমরা দেখছি? অমিত শাহ কিংবা যোগী আদিত্যনাথ জবাবদিহি করতে প্রস্তুত নন, দেশ জানে। কিন্তু, এনসিআরবি-র সর্বশেষ রিপোর্টটি যে গেরুয়া রঙেই চুবানো তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশনের সর্বশেষ রিপোর্টে। চলতি বছরের প্রথম আটমাসে কমিশন সারা দেশে যত অভিযোগ রেকর্ড করেছে তার বেশিরভাগটই উত্তরপ্রদেশের—১৯ হাজার ৯৫৩টির মধ্যে ১০ হাজার ৮৪টি বা ৫০.৫৪ শতাংশ! গতবছরের তুলনায় নারীনির্যাতন সংক্রান্ত অভিযোগ বৃদ্ধির হারটিও মারাত্মক—৪৬ শতাংশ। সব মিলিয়ে মোদির শাসনে ভারতের এবং যোগী-যুগে বৃহত্তম রাজ্যের যে চিত্র ফুটে উঠেছে তাতে শুধু বিজেপির মুখ পোড়েনি, সারা পৃথিবীর সামনে ভীষণ নিচু হয়ে গিয়েছে ভারতেরও মাথাটি। উত্তরপ্রদেশের আসন্ন বিধানসভা এবং পরবর্তী লোকসভার ভোট গেরুয়া শিবিরের কাছে এর মূল্য দাবি করবেই।