বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
আসল সত্যটি হল, উজ্জ্বলা যোজনার সুফল পেতে প্রথম দিকে গরিব পরিবারের মধ্যে প্রবল উৎসাহ দেখা দেয়। দিন যত গড়িয়েছে গ্যাসের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। তথ্য বলছে, এই কলকাতা শহরেই গত বছরের সেপ্টেম্বরে ১৪.২ লিটার রান্নার গ্যাসের দাম ছিল ৬২০.৫০ টাকা। তারপর দশমাসে এখন তা বেড়ে হয়েছে ৮৬১ টাকা। স্বভাবতই গ্রামে আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা বহু মানুষের মাটির দাওয়ায় জ্বালানি হিসেবে গ্যাসের জায়গা এখন নিচ্ছে কাঠ। রাজ্যের গা-গঞ্জে বহু পরিবারের বক্তব্য—এক, এত দাম দিয়ে কী করে কিনবো গ্যাস? তাই কষ্ট হলেও প্রতিদিন কয়েক ক্রোশ পেরিয়ে বনে যেতে হচ্ছে কাঠ সংগ্রহের জন্য। এর জেরে বৃক্ষনিধন হলেও অবাক হওয়ার নেই। অথচ কেন্দ্রের সরকার নির্বিকার। প্রচারের ঢক্কানিনাদে মোদি সরকার যতটা আগ্রহী তার একাংশও আগ্রহী নয় বাস্তব সমস্যা অনুধাবন করে প্রতিকারের উপায় বের করতে। যদি তারা আগ্রহী হতো তাহলে অন্তত গ্যাসের দাম এমন ঊর্ধ্বমুখী হতো না। গরিবের কথা এই সরকার ভাবে না। লক্ষণীয় যে, মোদি জমানায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাদের জনসংযোগের অভাব প্রকট। তাই বাস্তব সত্যটি সরকারের ধর্তব্যের মধ্যে নেই। অথচ গ্যাসের দামের কারণে বাংলায় যে উজ্জ্বলার গ্রাহক সংখ্যা কমছে তা কেন্দ্রর তথ্যেই উঠে এসেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২০২০ সালের অর্থবর্ষে এপ্রিল-জুন মাসের ত্রৈমাসিকে উজ্জ্বলা প্রকল্পে গ্রাহক ছিল ১ কোটি ৫৬ লক্ষ। পরের তিনমাসে তা কমে দাঁড়ায় ৯৫ লক্ষে। আর আর্থিক বছরের শেষ তিনমাস অর্থাৎ চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে আরও কমে হয়েছে ৭৫ লক্ষ। গ্রাহকের সংখ্যার মতোই গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির হারও কমেছে চোখে পড়ার মতো। করোনার জন্য গতবছর তিনমাসের জন্য বিনামূল্যে গ্যাস সরবরাহ করেছিল কেন্দ্র। সেই পর্ব মিটতেই গ্রাহক ও গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি দুয়েরই রেখাচিত্র নিম্নমুখী।
বলার অপেক্ষা রাখে না, কেন্দ্রের জনস্বার্থবিরোধী নীতির কারণেই মোদির সাধের উজ্জ্বলা প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়তে চলেছে। হয়নি মহিলাদের দুর্দশার অবসান। আসলে গরিব মানুষকে গ্যাসে রান্নার সুযোগ দিতে হলে সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই তা দিতে হবে। তা না-হলে উজ্জ্বলা প্রকল্প সাফল্যের মুখ কখনওই দেখবে না।