পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার কয়েক মাসের মধ্যেই করোনার কোপে পড়েছে গোটা দেশ। আর এই প্রাণঘাতী সংক্রমণ ঠেকাতে নজিরবিহীন ব্যর্থতা দেখিয়ে চলেছে মোদি সরকার। গত দু’বছরে কৃষির মতো শ্রমক্ষেত্রের ছবিটাও ক্রমশ বিবর্ণ হয়েছে। করোনাকালে বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কেন্দ্রের ভূমিকা, শ্রম আইন সংস্কারের ধুয়ো তুলে শ্রমিকস্বার্থ-বিরোধী পদক্ষেপ, মহামারীতে কর্মচ্যুত ও শ্রমিকের মজুরি হ্রাস, মহিলা শ্রমিকদের সংখ্যা কমে যাওয়া, অসংগঠিত শ্রমিকদের ভয়াবহ অবস্থার মতো নানা ইস্যুতে বিদ্ধ এই সরকার। অথচ শ্রম সম্মেলন বন্ধ থাকায় সেসব নিয়ে আলোচনার সুযোগও নেই। ভাগ্যের কী পরিহাস! বিরোধী কংগ্রেসপন্থী বা বামপন্থী সংগঠন নয়, এবার খোদ আরএসএসের শ্রমিক সংগঠনকে বলতে হচ্ছে, ‘দেশের দুর্দশাগ্রস্ত শ্রমিকদের স্বার্থে দয়া করে ভারতীয় শ্রম সম্মেলন ডাকুন।’ একদা নিজেকে চা-ওয়ালা বলে দাবি করা মানুষটির অবশ্য এ নিয়ে কোনও হেলদোল নেই। আর তাই বছরের পর বছর শ্রম সম্মেলন বন্ধ রয়েছে। শোনা হচ্ছে না শ্রমজীবী মানুষের কথা। সম্মেলনের ঐতিহ্য গুরুত্ব মোদি জমানায় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। এই কারণেই সম্ভবত কংগ্রেস জমানার জরুরি অবস্থার সময়ের খোঁচা দিতেও ছাড়ছে না আরএসএসের শ্রমিক সংগঠন। মোদি জমানায় শ্রমিকদের অসহায় অবস্থা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিএমএস নেতৃত্বের বক্তব্য, ২০১৫ সালে মোদির উপস্থিতিতে জাতীয় শ্রম সম্মেলন হয়েছে। কিন্তু গত কয়েক বছরে শ্রমিক অসন্তোষ তীব্র হলেও সম্মেলন বাদ রাখা হয়েছে। স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন উঠছে, শ্রম আইন সংস্কারের নামে এই সরকার যা করেছে তা নিয়ে সমালোচনা এড়িয়ে যেতেই কি এই সম্মেলন করা হচ্ছে না? অর্থাৎ এ নিয়ে কি কোনও অপ্রিয় প্রশ্নের মুখোমুখি হতে চাইছেন না মোদি?
শ্রম সম্মেলন ডাকার দাবিতে সঙ্ঘ পরিবারের আওতায় থাকা সংগঠনের চিঠিকে ঘিরে নানা প্রশ্ন দানা বাঁধছে। কারণ ব্যাঙ্ক, বিমা, একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার যে মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে মোদি সরকার তা শ্রমিকস্বার্থ-বিরোধী বলেই বিরোধীদের অভিমত। এবার শ্রম সম্মেলন ডাকার বিষয়টিকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীকে যেভাবে কাঠগড়ায় তোলার রাস্তায় হাঁটতে চাইছে সঙ্ঘ তাতে সরকারের উপর চাপ ক্রমশ বাড়ছে। ঘরের ভিতর থেকে এমন দাবি ও অসন্তোষ ধূমায়িত হওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। সন্দেহ নেই, এতদিন বাইরের যাবতীয় আক্রমণ পাশ কাটানোর চেষ্টা হলেও এবার দলীয় সংগঠনের অভ্যন্তর থেকে আওয়াজ ওঠায় চাপ ও অস্বস্তি বাড়বে নরেন্দ্র মোদির।