বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বুধবার মমতারই নেতৃত্বে দেশজুড়ে পালিত হল সেই ঘটনার স্মরণে ২৮তম ‘শহিদ দিবস’। এই রাজনৈতিক কর্মসূচির তাৎপর্য আর কেউ না বুঝুক, যথার্থ উপলব্ধি করেছেন নয়া ‘ভারতেশ্বর’ নরেন্দ্র মোদি। সদ্য সদ্য বাংলায় রামধাক্কা খাওয়া বিজেপির কাণ্ডারী বেশ জানেন, মমতার পাখির চোখ এখন দিল্লি। বাংলার অভাবনীয় সাফল্যকে সামনে রেখে তামাম ভারতে গণতন্ত্র ফেরাতে সুযোগ্য নেতৃত্ব দেবেন তিনি। ত্রিপুরা, উত্তরপ্রদেশ হয়ে কাশ্মীর পর্যন্ত নানা রাজ্যের মানুষ ইতিমধ্যেই বাংলার ইউনিক স্লোগান ‘খেলা হবে’র সঙ্গে গলা মিলিয়েছে। বিজেপি-বিরোধী বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল মমতারই নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে দ্রুত সহমত হতে চাইছে। তাই বুঝতে বাকি থাকে না, কেন একই দিনে মমতা-বিরোধী রাজনৈতিক কর্মসূচি নিতে হল বিজেপিকে। ‘রাজনৈতিক সন্ত্রাস-মুক্ত বাংলা চাই’ প্লাকার্ড সামনে রেখে দিলীপ ঘোষরা আওয়াজ তুললেও আশঙ্কামতোই তা ‘সুপার ফ্লপ’ হয়েছে। বাংলা দখলের খোয়াব নিয়ে ক’দিন আগেও যাঁরা আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে দিচ্ছিলেন, বুধবারের গেরুয়া আন্দোলনে সেই নেতানেত্রীদের বেশিরভাগই ছিলেন গরহাজির। বোঝা যায়, বাংলা দখল করতে না-পারার ‘শক’ তারা কাটিয়ে উঠতে পারছেন না কিছুতেই। বরং সবার প্রত্যাশা ছাপিয়ে অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ চেহারা দেখাতে পেরেছেন বিজেপি-বিরোধী নেতারা।
অর্থনীতি, সমাজব্যবস্থা, গণতন্ত্র, বিদেশনীতির ঐতিহ্য প্রভৃতি একযোগে ধ্বংসের নায়ককে ক্ষমতার উচ্চাসন থেকে টেনে নামাবার সঙ্কল্প নিয়ে তাঁরা এক হয়েছেন। পরবর্তী লোকসভার নির্বাচন এখনও আড়াই বছর দূরে। মোদি সরকার বরাবর দিশাহীন। এই সরকারি ক্ষমতার দম্ভে যে পার্টি দেশে দুরমুশ চালাবার চালাকি করে যাচ্ছে সে ততোধিক সন্ত্রস্ত। অনুমান করা যায়, ভোট যত এগিয়ে আসবে এদের মিলিত ভুলও বাড়তে থাকবে। তাদেরই হাতে রচিত হবে স্বখাতসলিলে ডুবে যাওয়ার প্ল্যান। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে গণতন্ত্রকামী শক্তিকে। বিজেপি-বিরোধীরা যেন কোনওভাবেই লক্ষ্যচ্যুত না-হন। মনে রাখতে হবে, মোদি জমানা কালো টাকার খেলায় অনেক বেশি দড়! ঘোড়া বেচাকেনার কারবারে জোয়ার আনতে আরও ক্লান্তিহীন হবে তারা। ২০২৪-কে পাখির চোখ করে যে সলতে পাকানো শুরু হয়েছে, আশা করা যায়, দেশের গণতান্ত্রিক মানুষ ইত্যবসরে সেই লক্ষ্যপূরণের যোগ্য হয়ে উঠবেন। গণতন্ত্রের জুলাই হবে দীর্ঘতর।