বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
আইসিস-এর মতো ভয়ানক শক্তিকে বিচলিত দেখে স্বস্তি বোধ করেছিল শান্তিকামী দুনিয়া। তারা ভেবেছিল, যাক বাঁচা গেল! বিশ্বজুড়ে জঙ্গি তৎপরতায় এবার ভাটা পড়বে। হানাহানি রক্তপাত কিছুটা হলেও কমবে। কিন্তু ভুল ভাঙতে দেরি হয়নি পৃথিবীর। আইসিস-সহ বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠী স্বমূর্তি ধরে অল্পদিনের মধ্যেই। আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, পশ্চিম এশিয়া, আফ্রিকা এবং ইউরোপেরও একাংশে তারা এখনও সক্রিয়। বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে এও ধরা পড়েছে যে করোনা পরিস্থিতিতে জঙ্গি নাশকতা অনেক বেশি ‘ইনোভেটিভ’ হয়েছে। পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, জঙ্গি গোষ্ঠীদের শান্তির পথে প্রত্যাবর্তনটা যে মস্ত বড় এক ‘প্যারাডক্স’ সেটাই আজকের পৃথিবীর খাঁটি উপলব্ধি। কয়েক বছর আগে আমাদের নিকট প্রতিবেশী বাংলাদেশ জঙ্গি কার্যকলাপে ব্যতিব্যস্ত হয়ে গিয়েছিল। জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের পর সে-দেশে জঙ্গি নৃশংসতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে। তাদের নিয়ে অনেকদিন কোনও উচ্চবাচ্য কানে আসেনি। শোনা যাচ্ছে, ফের তৎপর হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের দু’টি কুখ্যাত জঙ্গি গোষ্ঠী জেএমবি এবং হেফাজতে ইসলাম। সম্প্রতি কলকাতায় এসটিএফের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে জেএমবির তিন কুখ্যাত জঙ্গি। শুধু তারাই নয়, ভারতের প্রবেশ করেছে ওই সংগঠনের জনা পনেরো সদস্য। মূলত এদেশে সদস্য সংগ্রহ, তহবিল গঠন এবং স্লিপার সেলের পুনরুজ্জীবনের দায়িত্ব নিয়েই তারা সীমান্ত পেরিয়েছে। ভারতের মাটিতে নষ্টামি করার প্ল্যান নিয়েছে হেফাজতে ইসলামও। ঢাকা সূত্রে ভারতীয় গোয়েন্দারা খবর পেয়েছেন যে, বাংলাদেশের দু’টি সংগঠনের অন্তত ৫০ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গি এ-দেশে ঢুকেছে। তারা অসম এবং পশ্চিমবঙ্গে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে।
মুম্বই এবং দিল্লি সবচেয়ে ভালো জানে জঙ্গি নাশকতার বিপদ কত বড়। জঙ্গি-নষ্টামি কাশ্মীর উপত্যকায় দৈনন্দিন ঘটনা। জঙ্গিদের কার্যকলাপ ভূস্বর্গে বিশিষ্টতা হারিয়েছে। পাশের রাজ্য পাঞ্জাবে খালিস্তানপন্থীদের ফের উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে পাকিস্তান। পশ্চিমবঙ্গ, অসমও বারবার রক্তাক্ত হয়েছে একাধিক জঙ্গি সংগঠনের হাতে। করোনার বিপদকে আর আমল দিতে রাজি নয়, ফের তারা চাঙ্গা হয়ে উঠতে চায়। হাত যেন নিশপিশ করছে তাদের। ‘কিছু একটা’ ঘটিয়ে ফেলার জন্যই কি মরিয়া হয়ে উঠেছে তারা? এই প্রশ্নই তাড়া করে ফিরছে। সামনে এপার বাংলার সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো। করোনা পরিস্থিতিতেও বহু মানুষ নিশ্চয় রাস্তায় বেরবেন বলে ধরে নেওয়া যায়। মানবিকতার ধার ধারে না যারা তারা এমন মওকাই খোঁজে। তাই ধোঁয়া দেখেই সতর্ক হতে হবে, পর্বতের কোথাও আগুন লাগছে না তো!