পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
পরীক্ষা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত অবস্থান দেখে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক প্রভৃতি রাজ্যও বলেছে, ছেলেমেয়েদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়টি তারা বিশেষ গুরুত্ব দেবে। অতএব বেশিরভাগ রাজ্যেই যে দশম এবং দ্বাদশের বোর্ড পরীক্ষা বাতিলের পক্ষে জনমত ভারী হচ্ছে তাতে সন্দেহ নেই। রাহুল গান্ধী দিন কয়েক আগেই বোর্ডের পরীক্ষা বাতিলের দাবি তোলেন। একই দাবিতে প্রিয়াঙ্কা ওয়াধেরা চিঠি লেখেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ছাত্র পরিষদও এরাজ্যে পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়েছে। এবার উত্তরপ্রদেশে দ্বাদশের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৬ লক্ষ। বোর্ড পরীক্ষার বিকল্প হিসেবে চূড়ান্ত মূল্যায়নের ক্ষেত্রে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নই সেখানে মূলত গুরুত্ব পেতে চলেছে। সিবিএসই, সিআইএসসিই-র কাছেও এটা অন্যতম একটা বিকল্প মত। মূল্যায়ন পদ্ধতির উপর নজর রেখেছে দেশের শীর্ষ আদালতও। একটি জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট দু’সপ্তাহের মধ্যে জানতে চেয়েছে মূল্যায়নের পদ্ধতিটা ঠিক কী হবে। গত বছরও দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা গ্রহণ সারা দেশেই কমবেশি ব্যাহত হয়। নিচু ক্লাসের পঠনপাঠন থেকে পরীক্ষা গ্রহণেও অনুরূপ সমস্যা ছিল। কোনও সন্দেহ নেই, ২০২১ সালের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থা আরও বেশি পরিস্থিতির শিকার হল। করোনা পরিস্থিতিতে বস্তুত স্কুলশিক্ষার মান ধরে রাখাই দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।
কিন্তু তাই বলে হাল ছেড়ে দেওয়ার অবকাশ নেই। সারা দেশের কয়েক কোটি ছেলেমেয়ের ভবিষ্যৎ এর সঙ্গে যুক্ত। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল পশ্চিমবঙ্গের ছেলেমেয়েরা। এখানে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরক্ষার্থী যথাক্রমে ১০ লক্ষাধিক ও প্রায় ৭ লক্ষ। আগামী দিনের শিক্ষক, অধ্যাপক, গবেষক, বিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, প্রযুক্তিবিদ, সাংবাদিক, অ্যাকাউন্ট্যান্ট, আইনজীবী, শিল্পী, শিল্পপতি, রাজনীতিক প্রভৃতি এদের মধ্যে থেকেই আমাদের পেতে হবে। তাই এদের স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা অবশ্যই সবার আগে দেখতে হবে। একইসঙ্গে গুরুত্ব দিতে হবে কেউ যেন কোনওভাবেই বঞ্চিত না হয়। প্রকৃত মেধাবীদের মেধা ও যোগ্যতার প্রতিফলন যেন তাদের বিকল্প মূল্যায়ন ব্যবস্থার মধ্যে অবশ্যই থাকে। উচ্চশিক্ষার প্রবেশদ্বারে গিয়ে তারা যেন কোনওভাবেই ভেঙে না পড়ে। এই দু’বছর ধরে বড়দের চেয়ে অনেক বেশি ত্যাগ স্বীকার বয়সে ছোট ছেলেমেয়েরাই করছে। বাস্তবে তারাই সবচেয়ে বড় কোভিড যোদ্ধা। সরকারি প্রশাসনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভুল বা ত্রুটির কারণে তারা যেন নতুন কোনও বঞ্চনা বা অন্যায়ের শিকার না-হয়, সেটা সব সরকারকেই অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। বিশেষ করে খেয়াল রাখতে হবে, দিল্লির দু’টি বোর্ড এবং বিভিন্ন রাজ্যের মূল্যায়ন পদ্ধতির মধ্যে যেন সাম্য থাকে। বোর্ডের বিভিন্নতার কারণে কোমলমতি ছেলেমেয়েদের যেন বৈষম্যের শিকার হতে না হয়। কারণ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কাছে সরকারিভাবে তাদের সকলেরই গ্রহণযোগ্যতা সমান।