গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
এই প্রসঙ্গে যোগী আদিত্যনাথের শ্রীমুখটি একবার মিলিয়ে নেওয়া যায়। ভোট হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। তিনি বারবার ছুটে আসছেন এখানে। তিনি বাংলার মানুষকে সাবধান করছেন, তাঁরা যেন আসল পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দেন। অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে উল্টে দিয়ে তাঁরা যেন বিজেপির সরকার তৈরি করার পক্ষে রায় দেন। কারণ, তাঁরাই ‘সোনার বাংলা’ গড়ে দেবেন। স্বাধীনতার পর থেকে কংগ্রেস, কমিউনিস্ট, তৃণমূল প্রভৃতি কেউই যা পারেনি, মোদির পার্টিই নাকি এবার তা করে দেখাবে। তারা কেমন রাজ্য বানাবে? উত্তরপ্রদেশের মতো রামরাজ্য। কিন্তু বাংলার দশ কোটি নরনারী যে তাঁদের নিজের রাজ্যকে জানেন। পাশাপাশি জানেন, যোগীরাজ্যের কথাটিও। আরএসএসের পোস্টার বয় যোগী আদিত্যনাথের আমলেই তো উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা যাকে বলে একেবারে রসাতলে চলে যাওয়া, সেটাই হয়েছে। ওই রাজ্যের নারীর বিরুদ্ধের অপরাধের খতিয়ান সারা ভারতকে অধোবদন করে দেয়। এ কোনও বিরোধী দলের কুৎসা নয়। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) গত কয়েক বছরের তথ্যেই সাজানো রয়েছে মোদি-শাহ-যোগী ত্রয়ীর সাধের রামরাজ্যের ছবিটি। হাতরাসের নৃশংসতার জন্য কুখ্যাত ওই রাজ্যে ২০০৯-২০১৯ সালের ভিতরে ধর্ষণের ঘটনা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। ২০১৯ সালে ৩ হাজারের বেশি নারীধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছিল সেখানে। লিঙ্গবৈষম্যের ব্যাপারে উত্তরপ্রদেশের তুলনা শুধু উত্তরপ্রদেশই। এখনও প্রতি মাসে শ’য়ে শ’য়ে নারীনির্যাতনের অভিযোগ পুলিসে নথিবদ্ধ হয়। ২০১৯ সালে মহিলাদের উপর অপরাধের প্রায় ৬০ হাজার কেস নথিবদ্ধ হয়েছিল সেখানে, যা সারা দেশে ওই ধরনের মোট অপরাধের ১৪ শতাংশ! আর সেই রাজ্যের অভিভাবক আদিত্যনাথ কিছুদিন অন্তর বাংলায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনের দিকে তর্জনী তুলছেন। অথচ তিনি খোঁজও নেন না তাঁরই রাজ্যের আগ্রায় এবং মিরাটে কী অনাচারের শিকার গৃহবধূ থেকে কিশোরী নানা বয়সি নারীরা।
নির্লজ্জ যোগীর এই রকমসকম দেখে এটাই মনে হয় যে তিনি স্টিফেন লিককের তিরেই আত্মনিগ্রহ করে চলেছেন। নিতান্ত পলকা কাচের ঘরের বাসিন্দা অন্যের দিকে ঢিল ছুড়তে গিয়ে আসলে নিজের ঘরের অত্যন্ত কদর্য চেহারাটাই ফুটিয়ে তুলছেন বারবার। তাঁদের সম্মিলিত চিৎকার এটাও বুঝিয়ে দিচ্ছে, তাঁদের ঝুলিতে গোধরা-খ্যাত গুজরাত এবং এনআরসি-খ্যাত অসমের মতো আরও কিছু রত্নই লুক্কায়িত শুধু। অতএব, সাধু সাবধান! বাংলায় ভোটের এখনও বাকি ছয়দফা। এই সর্বনাশা রাজনীতির হাত থেকে বাংলাকে বাঁচাবার যথেষ্ট সুযোগ এখনও বাঙালিরই হাতে।