পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
একথা ঠিক, নয়া কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কৃষকদের আন্দোলন এ পর্যন্ত কোনওদিন হিংসাত্মক হয়নি। শান্তিতেই চলছে। আন্দোলনকারীরা তাঁদের দাবি মীমাংসার জন্য আদালতের হস্তক্ষেপও চাননি বা আদালতের দ্বারস্থ হননি। আন্দোলন করার অধিকার তাঁদের আছে। কিন্তু মোদি সরকার নানা কৌশলে কৃষকদের অধিকার খর্ব করতে সচেষ্ট। সরকার ভুলে যায়, রাজনীতি, আইন, বিচারব্যবস্থার বাইরেও একটি বিষয় থাকে। তা হল মানবিকতা। মানবিক দিক থেকে বিচার করলে অনেক কঠিন সমস্যার সমাধানও সহজে হয়। কিন্তু সে পথে হাঁটতে নারাজ এই সরকার। তাই বিতর্কিত কৃষি আইনকে ঘিরে মানুষের জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি হচ্ছে জেনেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একবারের জন্যও আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেননি। বরং কর্পোরেট বন্ধুদের স্বার্থরক্ষার স্বার্থে নানা কৌশল করে আন্দোলন বানচাল করার চেষ্টা চালিয়েছে শাসক দল। আন্দোলনের পিছনে তারা কখনও খুঁজেছে এর ওর তার যোগ, অথবা কারও চক্রান্ত! এ পর্যন্ত ফন্দি করেও জব্দ করা যায়নি আন্দোলনকারীদের। তাই আইন কার্যকর করার উপর আদালতের আপাত স্থগিতাদেশে মোদি সরকার কতটা ধাক্কা খেল সেটা এখন বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় হল মোদি জমানায় দেশের কৃষকের স্বার্থ কতটা সুরক্ষিত থাকবে সেই মূল প্রশ্নটাই। কৃষকরা কীভাবে সুবিচার পাবেন সে প্রশ্নটাই বড়। অভিযোগ, কমিটির চার সদস্যই সরকারের ধামাধরা ব্যক্তি বলে পরিচিত। তাই শুরুতেই ‘নিরপেক্ষতার’ প্রশ্নটিকে সামনে রেখে কমিটির কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। কৃষকের স্বার্থ সুরক্ষিত করার দায়িত্ব কিন্তু সরকারের। সেই দায়িত্ব পালন করেই সরকারকে কৃষি সংস্কারের কাজ করতে হবে। অনমনীয় মনোভাব নিয়ে চললে কাজটি সহজ হবে না। কারণ কৃষকদের দাবিটি আদালতের কাছে ছিল না, ছিল সরকারের কাছে। তাই সরকার পক্ষের কোনও চতুর কৌশল আন্দোলন ভেঙে কাজ হাসিল করবে বলে ভাবলে তা বিচক্ষণতার পরিচয় নয়।
স্থগিতাদেশের খবরটি আন্দোলনকারীদের জন্য আপাত খুশির বার্তা আনলেও তাঁরা যে আন্দোলনের পথ ছাড়ছেন না তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছেন। সরকারের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়ে তাঁরা বলেছেন, ২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবসে ঘোষিত কর্মসূচি অনুসারে রাজধানীতে ট্রাক্টর মিছিল হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না ভারতের সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করবে গোটা বিশ্ব। সেখানে কৃষকের ক্ষোভ প্রশমনে সরকারের ব্যর্থতার দিকটি সামনে এলে তা লজ্জার হবে, যা মোদি জমানার পক্ষে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। তাই দেশের কৃষক আন্দোলনের ইতিহাসকে স্মরণে রেখে শাসকের এখন উচিত নতুনভাবে ভাবনাচিন্তা করা, প্রয়োজনে বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার। তাতে কৃষকরাও স্বস্তি পাবেন, দেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল থাকবে।