কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
রাজ্য উভয়েই আত্মবিশ্বাসী।
তবু মাথায় রাখতে হচ্ছে—লকডাউনের শুরু থেকে রাজ্যের প্রায় সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। গত বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা কোনওক্রমে মিটেছিল। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা থেকেই শুরু হয়েছিল বিপত্তি। তার ফলে রেজাল্ট বের করা নিয়েও অনিশ্চয়তা ছিল। স্বভাবতই প্রথম দু’টি বোর্ডের পরীক্ষার রেজাল্ট অনেক দেরিতে বেরয়। তারপর চলে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়ার জটিলতা, যা এখনও পুরো কাটেনি। গত শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষা নিয়ে যা চলেছে তা এক প্রকার যুদ্ধ। কেন্দ্র-রাজ্য যুদ্ধে এক নতুন সংযোজন। সেসব কোনওভাবে ম্যানেজ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এই ন’মাসেও শিক্ষাক্ষেত্রে স্বাভাবিক পরিবেশ ফেরেনি। এখনও পর্যন্ত খবর, পিছিয়ে যাচ্ছে আগামী বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। কোনওটাই জুনের আগে শুরু হওয়ার আশা নেই। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে দাবি করছে মোদি সরকার। তবু সারা দেশে চাকরি-বাকরির পরিস্থিতি এখনও খারাপ। শিল্প এবং নানাবিধ পরিষেবা ক্ষেত্র এখনও কিছুটা মুষড়ে রয়েছে। মানুষের হাতে টাকাপয়সা কম। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী। কেন এই স্ববিরোধিতা, অস্বাভাবিকতা—ব্যাখ্যা হারিয়ে ফেলছে অর্থনীতি। বেরিয়ে আসা নানা মতের শেষে যে টীকা-টিপ্পনী পাওয়া যাচ্ছে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ—কোভিড-মুক্ত হওয়াটাই জরুরি। দেশ পুরোপুরি কোভিড-মুক্ত না-হলে কোনও ক্ষেত্রই স্বাভাবিক আচরণ করবে না।
পরিসংখ্যানের উপরেও নজর রাখতে হচ্ছে। কোভিড সংক্রমণের নিরিখে ভারত এখনও দ্বিতীয় স্থানে। দৈনিক সংক্রমণের হার ৩৫-৩৬ হাজারের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। দৈনিক মৃতের সংখ্যাও ৫০০-র বেশি। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে মহারাষ্ট্রে, সারা দেশে মৃতদের এক তৃতীয়াংশ ওই রাজ্যের। মৃত্যুর পরিসংখ্যানের দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চম স্থানে। সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বাংলা তিনজন ডাক্তারকেও হারিয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন কলকাতা সংলগ্ন একটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষা। কোভিড-১৯ এই নিয়ে এরাজ্যের প্রায় ৭০ জন ডাক্তারকে কেড়ে নিল। তবে সংক্রমণের হারটা আপাতত ৩ শতাংশের সামান্য বেশি। প্রতি ১০০ জনের টেস্ট থেকে ‘পজিটিভ’ চিহ্নিতদের নিয়ে সংক্রমণের হার নির্ধারণ করা হয়। এই বিপদ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে ভ্যাকসিনই একমাত্র পথ নয়, আরও বেশি টেস্ট হওয়া প্রয়োজন। তাতে সংক্রমণের হার যত কম দেখা যাবে কিংবা শূন্যে নেমে এলে তবেই স্বস্তি। কিন্তু সরকারি জায়গায় টেস্ট করার সুযোগ অনেক পরিবারের নাগালে নয়। আবার পয়সার অভাবেও তারা টেস্ট করাচ্ছে না। এতেই করোনা ভাইরাস বেশি হারে ছড়িয়ে যাওয়ার ভয়টা থাকছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার একটি অত্যন্ত মানবিক পদক্ষেপ করেছে—কোভিড টেস্টের খরচ এক ধাক্কায় অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। বেসরকারি হাসপাতাল বা ল্যাবে পরীক্ষা করাতেও এখন থেকে ৯৫০ টাকা দিতে হবে। আমরা জানি, আরটি-পিসিআর টেস্টের জন্য গোড়ার দিকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা গুনতে হয়েছে। তারপর আরও দু’টি ধাপে তা কমিয়ে করা হয় যথাক্রমে ২,২৫০ টাকা ও ১,৫০০ টাকা। এবার সর্বনিম্ন ৯৫০ টাকা। আশা করা যায়, অপারগতা জনিত রোগ লুকনোর প্রবণতা এবার কমবে। মানুষ বেশি করে টেস্ট করে নিশ্চিত হবে। প্রয়োজনে নেবে চিকিৎসার সুযোগ। কোনও সংশয় নেই কোভিড নির্মূলকরণে রাজ্যের এই ভূমিকা বিশেষভাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।