কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
বিজেপি পার্টি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের অন্তত এটা ভেবে দেখা দরকার ছিল, অকালি দল নেতৃত্ব কেন এতটা কঠিন কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়ে তাতে অবিচল রইল। ভারত এখনও কৃষিপ্রধান দেশ। ৬৪ শতাংশ মানুষের জীবন-জীবিকা প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। বেশিরভাগ রাজ্যের জিডিপির মেজর শেয়ার কৃষি থেকেই আসে। তবু কিন্তু নয়া কৃষি আইনের প্রভাব সব রাজ্যে সমান নয়। তাই এই আইনের বিরোধিতা সর্বত্র সমানভাবে হয়নি। বিরোধিতা সবচেয়ে বেশি হয়েছে পাঞ্জাবে। উত্তর ভারতের মধ্যে হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশের কৃষকরাও বেশ সরব হয়েছেন। দক্ষিণে জোরদার বিরোধিতা করেছে তামিলনাড়ু। কৃষি হল ভারতীয় অর্থনীতির প্রাণভোমরা, কোনও সন্দেহ নেই। বিশেষ করে কোভিড পরিস্থিতিতে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে কৃষির শক্তি কতটা। যখন বেশিরভাগ শিল্প এবং পরিষেবা ক্ষেত্র আত্মসমর্পণ করে বসেছে, তখন একমাত্র কৃষিক্ষেত্রই মাথা তুলে ছিল। লকডাউন পিরিয়ডেও জিডিপি গ্রোথ ধরে রেখেছিল কৃষি একা। তবু কিন্তু ভারেতের বেশিরভাগ অঞ্চলে কৃষি এখনও অ্যামেচার টাইপের। সংগঠিত আর্থিক ক্ষেত্র বলতে যা বোঝায়, ভারতীয় কৃষি তা থেকে অনেক দূরে রয়ে গিয়েছে। সেই দিক থেকে ব্যতিক্রম পাঞ্জাব। ভারতে কৃষিবিপ্লবের সফলতম কারিগর পাঞ্জাবের কৃষি অনেকাংশেই পশ্চিমি ধাঁচে সংগঠিত। এই রাজ্যটি কৃষিকে সার্থকভাবে অর্থকরী একটি ক্ষেত্রের রূপ দিতে পেরেছে। উত্তর ভারতের আরও দু’টি নিকটবর্তী রাজ্যেও (হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ) তার আংশিক প্রভাব রয়েছে। এই প্রশ্নে দক্ষিণে আংশিক সংগঠিত একটি রাজ্য হল তামিলনাড়ু।
মোদি সরকারের তথাকথিত কৃষি সংস্কার এই রাজ্যগুলির কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে। এই আইনের পক্ষে সরকার হাজার সাফাই গাইলেও কৃষকদের দুশ্চিন্তা কমছে না। তাঁরা মনে করছেন, কৃষি এবং কৃষক দরদের আড়ালে মোদি সরকার আসলে কর্পোরেটদের স্বার্থ সুরক্ষিত করেছে। যেটা এই সরকারের মূল নীতি। ব্যাঙ্ক, বিমা, যোগাযোগ-সহ সমস্ত শিল্প ও ব্যবসা, শিক্ষা, চিকিৎসা প্রভৃতি সব ক্ষেত্রেই এই সরকার কর্পোরেটদের অঙ্গুলি হেলনে চলছে। বাকি ছিল কৃষি। এবার সেই ষোলোকলা পূর্ণ করার পথেই বিতর্কিত কৃষি আইনগুলি পাশ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে বুঝতে হবে, গরিব কৃষকদের এই আন্দোলন দু’মাসেও থামানো গেল না কেন? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আসরে নামিয়েও চিঁড়ে ভেজেনি। প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’-এও খুব লাভ হবে না। আইনগুলি বাতিল করার দাবিতেই অনড় কৃষকরা। কৃষকস্বার্থ নিয়ে আর ছেলেখেলা বা কালহরণ করবেন না প্রধানমন্ত্রী, আপনি সরাসরি তাঁদের সঙ্গে কথা বলুন। সত্যিকার কৃষি সংস্কার বলতে যা বোঝায়, তার জন্যই উদ্যোগী হোন। কৃষক খেপানোর রাজনৈতিক পরিণাম বাংলার কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন। আপনারাও জানেন, এটাই চলমান ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।