বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
একথা ঠিক, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার নানা চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু তা বাস্তবমুখী হওয়া দরকার ছিল। দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্রের অধিকাংশ পরিকল্পনাই দীর্ঘমেয়াদি এবং ঋণ নির্ভর। যার ফল পেতে সময় লাগবে। তা আশু সমস্যা সমাধানের উপায় নয়। এই যেমন, তৃতীয় দফার ২.৬৫ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজের অর্ধেক টাকা হয়তো আগামী পাঁচ বছর ধরে খরচ হবে। হ্যাঁ, প্যাকেজের ইতিবাচক দিক অবশ্যই কিছু রয়েছে। উল্টোদিকে, বাজারে খাদ্যপণ্যের আগুন দাম নিয়ন্ত্রণের কোনও চেষ্টাই সরকারকে করতে দেখা যাচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবে দেশের অর্থনীতির এই বেহাল দশার কোপ এসে পড়ছে রাজ্যগুলির উপর। তাদের কোষাগারের হালও সঙ্গীন। ব্যতিক্রম নয় পশ্চিমবঙ্গও। করোনা মহামারীকে সামাল দেওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি রাজ্য সরকারের সামাজিক প্রকল্পগুলিকে চালু রেখেই বাংলাকে সচল রাখার মরিয়া যে চেষ্টা মমতার সরকার করছে তা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করারই একটি উপায়।
কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারই অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে বদ্ধপরিকর। তবে ভিন্ন পথে। সামনেই বিয়ের মরশুম। বিয়ের মরশুমে কেনাকাটা বাড়ে। এই সুযোগকেও কাজে লাগানোর চেষ্টায় বাংলার সরকার। আর্থিক অনটনে বিয়ে যাতে ভেঙে বা আটকে না যায় সে কারণে রাজ্য সরকারের রূপশ্রী প্রকল্পের অর্থ যাতে আবেদনকারীরা পেতে পারেন তার জন্য বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। করোনাকালে আর্থিক সমস্যার মধ্যেও এই প্রকল্পের টাকায় কোনও কাটছাঁট করেনি রাজ্য। যা বহু পরিবারের স্বপ্নকে বাঁচাতে সাহায্য করেছে। এটি একটুকরো উদাহরণ মাত্র। বিয়ে বা অন্যান্য অনুষ্ঠানের সঙ্গে কেনাবেচার অঙ্গাঙ্গি সম্পর্ক আছে। বাস্তবসম্মত এই দৃষ্টিভঙ্গি তাই রাজ্যের অর্থনীতির চাকা ঘোরানোর সহায়ক হতে পারে। এমন বাস্তবমুখী কোনও পরিকল্পনা নিতে কেন্দ্রকে দেখা যাচ্ছে না। কেন্দ্রের তৃতীয় ‘আত্মনির্ভর’ প্যাকেজে কর্মসংস্থান চাঙ্গা করার উদ্যোগটি আশা জাগালেও নতুন নিযুক্ত কর্মীদের পিএফ প্রসঙ্গে বিধি ও শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে পিএফ প্রিমিয়াম বহন করার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ১ অক্টোবর থেকে পরের বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত যে কর্মীদের নিয়োগ করা হবে (বেতন ১৫ হাজার টাকার কম হলে) তাঁদের জন্য পিএফ ভর্তুকি দেওয়া হবে দু’বছরের জন্য। যাতে আরও বেশি নিয়োগে উৎসাহী হয় সংস্থাগুলি। প্রশ্ন হল, যখন ছোট মাঝারি বহু কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তখন এই প্যাকেজের সুযোগ নিতে কতটা আগ্রহী হবে বিভিন্ন সংস্থা? এমনিতেই অনেকে কর্মীদের বেতন দিতে পারছে না, বেতনে কাটছাঁট করছে। তাই অর্থাভাবে ধুঁকতে থাকা সংস্থার পক্ষে কি নতুন করে কর্মী নিয়োগ করা আদৌ সম্ভব? তাই প্যাকেজ ঘোষণার জেরে নতুন চাকরি কতটা হবে তা বলা শক্ত। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাই বাস্তবমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করাটা বেশি জরুরি।