বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
কারণ, একদিন, দু’দিন তো নয়, মাসের পর মাস কি জরুরি কাজ ফেলে রাখা যায়? রুটিরুজির তাগিদ রুখে দেওয়া যায় কতদিন? অতএব, মানুষ বাধ্য হয়েছেন রাস্তায় বেরতে। স্বাভাবিক জীবনে ফেরার তাগিদে। মানুষকে ব্যবসা করতে হবে। অফিসে বা কর্মক্ষেত্রে পৌঁছতে হবে। ব্যবসা, চাকরি বা নিজ নিজ পেশা ছাড়া নিত্য খরচের জন্য অর্থের জোগান আসবে কোত্থেকে? গবেষণা সংস্থা সিএমআইই ইতিমধ্যেই দেখিয়েছে, অক্টোবরে বেকারত্বের হার ফের বেড়েছে। গত মাসে পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্বের হার জাতীয় গড়ের থেকে কিছুটা বেশিই ছিল। অথচ লকডাউনের ধাক্কা কাজের বাজার দ্রুত কাটিয়ে উঠছিল। সেপ্টেম্বরে বেকারত্বের হার সাম্প্রতিককালের ভিতরে সর্বনিম্ন হয়েছিল। অক্টোবরে সেটা ফের বেড়েছে। ইঙ্গিতটা সুখকর নয়। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে মানুষকে আরও বেশি করে নিজ নিজ কাজে মন দিতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা গণপরিবহণের সঙ্কট। রেল হল ভারতের লাইফ লাইন। আমাদের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় ভরসা। ভারতের ৫০ কোটির বেশি মানুষ বড্ড গরিব। মধ্যবিত্ত এবং গরিব মানুষের চাকরি-বাকরি, নিত্য যাতায়াত বজায় রেখেছে লোকাল ট্রেন। বিশেষ করে শহরতলির মধ্যবিত্ত এবং গরিব বাড়ির ছেলেমেয়েদের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা, গবেষণা, ট্রেনিং ইত্যাদি সম্ভব হয় সস্তায় লোকাল ট্রেনে যাতায়াতের সুযোগটা আছে বলে। অদূর ভবিষ্যতে শিক্ষায়তনগুলিতে ফের যাতায়াতের অনুমতি মিললে ছাত্রছাত্রীদেরকেও কলকাতায় ছুটতে হবে।
সুতরাং, লোকাল ট্রেন চালু করার এই সিদ্ধান্ত স্বাগত। সরকার জানিয়েছে, আজ থেকে অফিস টাইমে ৮৪ শতাংশ ট্রেন চলবে। বিশেষ জোর দেওয়া হবে কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর। প্রয়োজনে অদূর ভবিষ্যতে ১০০ শতাংশ লোকাল ট্রেনই চলবে। রেল এবং রাজ্য প্রশাসন নিশ্চয় চেষ্টা করবে। সিভিল ডিফেন্স, সিভিক ভলান্টিয়ার্স, জিআরপি
দিয়ে রাজ্য সরকার সহযোগিতা করবে। রেলকর্মীদের পাশাপাশি রেলের তরফে থাকবে আরপিএফ। নিশ্চয় সমন্বয় করেই কাজ করবে দুই পক্ষ। সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করতে হবে কিন্তু যাত্রীদের। অতীতে যতটা সহযোগিতা তাঁরা করেছেন, এখন তার থেকে বেশিই করতে হবে।
কারণ, আজকের পরিস্থিতি একেবারে অন্য। যাত্রীরা বাড়তি সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে চললে সমস্ত লোকাল ট্রেন সুশৃঙ্খলভাবে চলতে
পারবে। অথচ, সংক্রমণের বিপদ বাড়বে না। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে কোনও কোনও মহল যে আশঙ্কা করছে, সেটাও অমূলক প্রমাণিত হবে। কোভিডের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জারি রেখেও পুরো বাংলা স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। এ এক চ্যালেঞ্জ। বিরাট চ্যালেঞ্জ। আজ প্রথম দিনেই দেখিয়ে দিতে হবে, কোনও জল্পনা নয়—আমরা সাধারণ মানুষ সত্যিই শৃঙ্খলাপরায়ণ, আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, এই চ্যালেঞ্জে জয়ী হওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।