বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
সব মিলিয়ে রাজ্য সরকারের লাগাতার আন্তরিক প্রচেষ্টায় কোভিড ভীতিটা কমে গিয়েছে। তাই বলে যা-খুশি করার লাইসেন্সও দেওয়া হয়নি। মানুষকে সবরকমে সতর্ক পদক্ষেপ করার ব্যাপারেই উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। সবাই না-হলেও বেশিরভাগ মানুষ তাতে সাড়া দিচ্ছেন। মাস্ক মাস্ট—এই চেতনাই সরকারের বড় ভরসা। আর বেড়েছে হাতধোয়া এবং স্যানিটাইজার ব্যবহারের প্রতি আগ্রহ। অর্থাৎ কোভিড আজ আতঙ্কের বদলে একটি চেতনায় রূপান্তরিত হয়েছে। মানুষও বুঝে গিয়েছে, এই বাস্তব চেতনা ছাড়া কোভিডের সঙ্গে লাগাতার লড়াই করা সম্ভব নয়। অন্তত যতদিন না ভ্যাকসিন সবাই পান, ততদিন এই লড়াই নিখুঁতভাবে চালিয়ে যেতেই হবে। লড়াইটা সিস্টেমেটিকভাবে চালানোর মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে, স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারটা নিশ্চিত করা। কথায় বলে, বসে খেলে রাজার ভাণ্ডারও শূন্য হয়ে যেতে বেশি দেরি হয় না। অর্থাৎ সরকারি কোষাগার থেকে দান খয়রাতিরও একটা সীমা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সবচেয়ে গরিব শ্রেণীকে শুধু কোষাগারের টাকা বিলিয়ে জোগান বাড়ানোর যে কথাটা বলা হচ্ছে, সেটা নিতান্তই কৃত্রিম এক ব্যবস্থা এবং তাতে যে সুরাহা হতে পারে সেটাও সাময়িক।
দীর্ঘমেয়াদি সুরাহা হল সবাইকেই নিজ নিজ চাকরি, পেশা বা ব্যবসায় ফিরে যেতেই হবে। আর সেটা যত দ্রুত সম্ভব হয় তত মঙ্গল। নয় নয় করে সাত মাস পেরিয়ে গিয়েছে। প্রথমদিকে ইমারজেন্সি ডিউটিগুলোই চালু ছিল। আনলক পর্ব থেকে বাকি অনেক ক্ষেত্রে মানুষ যোগ দিচ্ছেন। কাজে ফিরে যাওয়ার প্রবণতা রোজ বাড়ছে। তবু, এখনও স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, লাইব্রেরি, গবেষণা প্রতিষ্ঠান-সহ অনেক জায়গা বন্ধ। সবচেয়ে বড় সমস্যা হল—ভারতের লাইফ লাইন যে লোকাল ট্রেন, সেটা চালু হয়নি। বাস এবং মেট্রো রেল পরিষেবাও আংশিক সচল হয়েছে মাত্র। ফলে, বহু সাধারণ মানুষ আন্তরিকভাবে চাইলেও কাজে ফিরতে পারছেন না। পুজো কেটে যাওয়ায় কাজে ফেরার তাগিদ বেড়েছে। বাংলার মানুষের এই মনোভাব এবং উৎসাহ যথার্থ পরিমাপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এটাকে বিশেষভাবে কাজে লাগাতে চান। তাঁর সরকারের মাধ্যমে রাজ্যজুড়ে বিপুল উন্নয়নমূলক কাজকর্মের সুযোগ রয়েছে। প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়ার উদ্দেশ্যে ৫ নভেম্বর নবান্নে মিটিং ডেকেছেন তিনি। সব দপ্তরের মন্ত্রী এবং আমলারা উপস্থিত থাকবেন। সেদিন নেওয়া হবে এযাবৎ হওয়া কাজকর্মের বিস্তারিত হিসেব। লক্ষ্য, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে উন্নয়নের যাবতীয় ঘাটতি পূরণ করে ফেলা। বিধানসভা ভোটের ঢাকি কাঠি-পড়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। সন্দেহ নেই, এইসময় উন্নয়নের সঙ্গে কোনওরকম আপস করবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধীরা এর মধ্যে ভোটের রাজনীতি দেখবেন নিশ্চয়। তবু এই উদ্যোগ স্বাগত। যে-রাজনীতি উন্নয়নে গতিসঞ্চারে সক্ষম সেই রাজনীতি লাগাতার হোক।