উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে মধ্যম ফল আশা করা যায়। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে নতুনত্ব আছে। কর্মরতদের ... বিশদ
দ্বিচারিতার চূড়ান্ত নজির রাখছেন বিজেপি নেতৃত্ব। মোদি সরকারের সেকেন্ড ইন কমান্ড বাংলার আইনশৃঙ্খলার অবনতির কথা বলছেন। এই তিনিই কিন্তু বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের ব্যাপারে অদ্ভুতরকম নীরব। অথচ সেখানে নারী নির্যাতন, দলিত নিগ্রহ নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। উত্তরপ্রদেশের ব্যাপারে তাঁর নীরবতাই প্রমাণ করছে তিনি পক্ষপাত দোষে দুষ্ট। পদের সম্মান রক্ষার্থে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গী কাম্য ছিল। বাংলা জয় করতে হলে সবার আগে বাংলার মানুষের মন জয় করা দরকার। ভেবে দেখেছেন কি রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে যে মন্তব্য তিনি করেছেন তা কতটা গ্রহণযোগ্য বাংলার মানুষের কাছে? বঙ্গবাসীর মনের খবর কি তিনি রাখেন? ওই মন্তব্যে পুলিসের কাজের প্রতিও অসম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে। কারণ তাঁরাই আইনরক্ষায় নিয়োজিত থাকেন। তাঁর চিন্তাধারার এমন বহিঃপ্রকাশে কার্যত তৃণমূলের লাভই হল। এ নিয়ে প্রচারের সুযোগও হাতে পেল তৃণমূল নেতৃত্ব।
প্রতিবারই ভোটের আগে কেন্দ্রের শাসকদল তার আস্তিন থেকে একেক রকম লুকানো অস্ত্র বের করে। যেমন গতবার ভোটের আগে সিবিআই অস্ত্রে ঘায়েল করার চেষ্টা করেছিল তৃণমূলকে। জেরা, ধরপাকড়, গ্রেপ্তার, সিবিআই হানা—এসব করেও সফল হয়নি। সম্ভবত শক্তিশালী সেই অস্ত্রটি এবার ভোঁতা হয়েছে। তাই রাষ্ট্রপতি শাসনের ভয় দেখানোটাই হয়তো নয়া অস্ত্র বিজেপির। এটি রাজ্যকে চাপে রাখার কৌশল। রাষ্ট্রপতি শাসন প্রসঙ্গটি নিছক কথার কথা হতে পারে না। নিয়ম পদ্ধতি সংবিধান সবকিছু মেনেই এ ব্যাপারে এগতে হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তা বিলক্ষণ জানেন। ভোট এগিয়ে আসায় রাজ্য প্রশাসনকে নাস্তানাবুদ করার যে রণকৌশল বিজেপি নিয়েছে তার মধ্যে এটি অন্যতম। বিতর্কিত কৃষি আইন, উত্তরপ্রদেশে দলিত নির্যাতন, দেশের অর্থনীতির বেহাল দশা, নাগরিকদের অধিকার খর্ব, গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করার প্রচেষ্টা, ভয়াবহ বেকারত্ব, কাজ হারানো মানুষের যন্ত্রণা—এমন হাজারো সমস্যাকে আড়াল করতেই কি বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন চাওয়ার মধ্যে কোনও ভুল নেই বলে মন্তব্য করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? আসলে এটাও মূল সমস্যা থেকে দৃষ্টি ঘোরানোরই প্রচেষ্টা। কখনও হিন্দু ভাবাবেগকে উস্কে দিয়ে, কখনও বা সার্জিকাল স্ট্রাইক করে সরকারের ব্যর্থতাকে আড়ালের চেষ্টা করতে দেখা গেছে কেন্দ্রের শাসককে। এবারও বঙ্গ বিজেপি নেতাদের রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবিকে ন্যায়সঙ্গত বলে মন্তব্যের পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে। রাজ্যের মানুষ কিন্তু যথেষ্ট রাজনীতি সচেতন। সাধারণ খুনের ঘটনাকেও কীভাবে রাজনৈতিক হত্যার তকমা দিতে পারেন কোনও কোনও রাজনৈতিক নেতা তা তাঁদের অজানা নয়। তাঁরা এও জানতে চান বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কি বাংলার থেকে ভালো? এর কী জবাব দেবেন তিনি? বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে অভিযোগ তুললে এসে পড়তেই পারে উত্তরপ্রদেশের প্রসঙ্গ। তাই বাংলা নিয়ে কোনও মন্তব্য করার আগে আরও একটু সতর্ক হওয়া দরকার ছিল।