কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
সস্তায় কিস্তিমাত করতে সরকার প্যাকেজের পর প্যাকেজ ঘোষণা করছে। কিন্তু তাতে দেশের অর্থনীতির অগ্রগতি আদৌ হচ্ছে না। আনলক পর্বের সূচনাতেও অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ধোঁয়াশায় ভরা ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। তারপর চার মাস কেটে গেলেও তার কোনও প্রভাব লক্ষ করা যায়নি। সাফল্যের ধ্বজা ওড়ালেও খারাপ অর্থনীতির দেশের ইমেজ ভারতের উপর ক্রমশই চেপে বসছে। সেইসঙ্গে বিপজ্জনকভাবে বেড়েছে খাদ্যপণের দাম, যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হল বাজার। মানুষকে বাজারমুখী করতে কেন্দ্র যে প্যাকেজ ঘোষণা করছে তা কখনও আমজনতার স্বার্থে নয়। এমনকী যে শ্রেণীর অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য এই প্যাকেজ ঘোষণা হল তাঁরা সকলেই এর সুযোগ নিয়ে বাজারমুখী হবেন কি না সে ব্যাপারেও যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ আছে। কারণ এলটিএ-র পাওনাতে সরকার কেনাকাটার শর্ত চাপিয়েছে। কখনও ধোঁয়াশা রেখে, কখনও শর্ত চাপিয়ে, কখনওবা ঋণ নেওয়ার কথা বলে প্যাকেজ ঘোষণা করে অর্থমন্ত্রী কল্পতরু সাজার চেষ্টা করছেন, কিন্তু তাতে দেশের সাধারণ মানুষের আখেরে কোনও লাভ হচ্ছে না। হয়তো এলটিএ-র টাকা নগদে দেওয়া হলে বাজারে তার প্রভাব পড়ত। কেনাবেচা বাড়াতে মানুষের হাতে নগদ টাকা জোগানের বিকল্প আর কিছুই হতে পারে না। তবে মূল সমস্যা থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টায় ত্রুটি রাখছে না সরকার। জিএসটি’র ক্ষতিপূরণের প্রাপ্য টাকা না দিয়ে রাজ্যগুলিকে বিনা সুদে ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার কথা বলেছে। লকডাউনের জেরে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলিকে নাকি ৫০ বছরের মেয়াদে ঋণ দেওয়া হবে। শতাংশের হিসেব করলে পশ্চিমবঙ্গের প্রাপ্য দাঁড়াচ্ছে ৫২৫ কোটি টাকা যা যৎসামান্যই। এও এক ধরনের রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা। কারণ জিএসটি ক্ষতিপূরণের টাকাও রাজ্যের ন্যায্য পাওনা। তার সঙ্গে ঋণের টাকার প্রসঙ্গটি টেনে বিষয়টি গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠা অহেতুক নয়। কেন্দ্রীয় সরকার তার কর্মীদের পর্যটনের পরিবর্তে কেনাকাটায় উৎসাহ দিয়ে হোটেল পর্যটন শিল্পকেও খাদের কিনারে ঠেলে দিচ্ছে। এমনিতেই লকডাউনপর্বে হোটেল পর্যটনের ব্যবসা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আনলক পর্বে সবে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। তখন সরকারের এমন ভূমিকায় নিঃসন্দেহে ধাক্কা খাবে হোটেল পর্যটন শিল্প।
আচ্ছে দিনের স্বপ্ন দেখিয়ে দেশে এখন যে সরকার চলছে তাদের কথায় ও কাজে চূড়ান্ত অমিল। বাস্তবোচিত পরিকল্পনা ও উপযুক্ত পদক্ষেপের অভাব স্পষ্ট। অর্থনীতির পুনরুজ্জীবনের জন্য তাদের পদক্ষেপ কোনও বিশেষ শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষা করলেও তা সকলের জন্য নয়। এই একপেশে দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন দরকার। লোকদেখানো এমন প্যাকেজের বদলে অর্থনীতি চাঙ্গা করার নতুন বিকল্প উপায় বের করতে হবে সরকারকে। নাহলে দেশের অর্থনীতি আরও ডুবলে অবাক হওয়ার নয়।