উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে মধ্যম ফল আশা করা যায়। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে নতুনত্ব আছে। কর্মরতদের ... বিশদ
বিজেপির দলিত দরদি ভাবমূর্তিতে কালি লাগিয়েছে হাতরাসের ঘটনা। ওই ঘটনার পরও আশ্চর্যজনকভাবে প্রধানমন্ত্রী নীরব। দেশজুড়ে কৃষক বিক্ষোভ আর বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে একের পর এক দলিত মহিলা নির্যাতনের ঘটনা নিঃসন্দেহে শাসক শিবিরে অস্বস্তি বাড়িয়েছে। বিহার নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষিত হওয়ায় এই মুহূর্তে নতুন কোনও সরকারি প্রকল্প ঘোষণা করার সুযোগও কেন্দ্রের সরকারের হাতে নেই। তাই কখনও সরকারি অনুষ্ঠানকে কাজে লাগিয়ে কখনওবা দ্রুত খরিফ শস্য সংগ্রহে জোর দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন মোদি। তবে এই অসন্তোষ মেটানোর কাজটা সহজ হবে না। তা বুঝেই কৃষক অসন্তোষ ঠেকাতে উৎসব মরশুমে তাদের হাতে টাকার জোগান বাড়ানোর চেষ্টায় মোদি সরকার। ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে খরিফ শস্য সংগ্রহে গতি বাড়িয়ে কেন্দ্র সরকার কৃষকদের হাতে অর্থ তুলে দিয়ে তাদের মন জয় করতে মরিয়া। কিন্তু এই মরিয়া প্রচেষ্টায় কতটা সাফল্য মিলবে? কৃষি আইন কৃষকস্বার্থের পরিপন্থী মনে করেই আন্দোলনের ময়দানে দেশের অগুনতি কৃষক। বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্যেও একই ছবি। এই ইস্যুকে সামনে রেখে বিরোধীদের চাপ যেভাবে ফাঁসের মতো চেপে বসছে তার থেকে মুক্তির উপায় কি শুধুমাত্র ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে খরিফ শস্য সংগ্রহের বিষয়টি হতে পারে? সাময়িক এই ব্যবস্থা কি কৃষকের মুখে হাসি ফোটাবে? সরকারকে তা ভেবে দেখতে হবে। বিহার বিধানসভা ভোট আর কিন্তু রাজ্যে উপনির্বাচনের আগে এভাবে কৃষকদের হাতে নগদ টাকার জোগানের ব্যবস্থা করে আদৌ কি ভোট বৈতরণী পার করা সম্ভব? কারণ মুখ থেকে মুখোশ সরে গেছে। মোদি-ম্যাজিকও সেভাবে কাজ করছে না। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে পুওরম্যানস প্রোটিন বলে পরিচিত ডাল দেওয়ার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দরিদ্র শ্রেণীকে খুশি করার চেষ্টা করছে সরকার। সত্যিই যদি কৃষককে তার ফসলের ভালো দাম দেওয়ার উদ্দেশ্য সরকারের থাকত তাহলে কেন কৃষি আইনে উল্লেখ করা হল না ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের চেয়ে কম দামে কেউ ফসল কিনতে পারবে না? এই প্রশ্নটি কিন্তু কৃষকের মনে উঠবেই। এর কোনও সদুত্তর দেয়নি সরকার। তাই দলিত, পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়, গরিব, কৃষক স্বার্থ রক্ষার কথা প্রধানমন্ত্রীর মুখে বেমানান। উঠছে বিশ্বাসযোগ্যতার প্রশ্ন।
মোদি জমানায় ‘ঐতিহাসিক’ পদক্ষেপ বা ‘সংস্কারের’ নামে এখনও পর্যন্ত যতগুলি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পরবর্তীকালে তার ফল ভুগতে হয়েছে আমজনতাকে। নোটবন্দি, জিএসটির পক্ষেও গুনগান করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এখন কৃষি আইনের পক্ষে সওয়াল করছেন। দেশের অর্থনীতি তাঁর আমলেই সবচেয়ে খারাপ হয়েছে। প্রকৃত সত্যকে কিন্তু আড়াল করা যায়নি। তাই ভোটের আগে কৃষকের স্বার্থরক্ষার কথা বলে বা দলিত গরিব দরদি বার্তা দিলেও পরিস্থিতি বদলাবে না। ক্রমশই ভরসার জায়গাটা হারিয়ে ফেলছে দেশের শাসক। তা ফিরে পেতে হলে জনস্বার্থে পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে পায়ের তলা থেকে মাটি ক্রমশই সরতে থাকবে। তাই এখনই সতর্ক হওয়া দরকার।