কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
নিয়মিত লাভের মুখ দেখতে হলে ভারতীয় রেলকে তার নেটওয়ার্ক ক্যাপাসিটির সর্বাধিক ব্যবহারের চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে মালিগাড়িগুলির গতিবেগ বৃদ্ধির উপর নজর দিতেই হবে। বিশেষজ্ঞরা অনেক বছর ধরে বলে আসছেন, মালগাড়িগুলির ২৪ কিমি গতিবেগটাকে অন্তত ৫০ কিমিতে নিয়ে যেতে হবে। যাত্রীবাহী ট্রেন এবং মালগাড়ি দুই ক্ষেত্রেই সর্বোচ্চ গতিবেগ ৯০ কিমি করার ক্ষেত্রে খাতাকলমে কোনও বাধা নেই। যেমন শতাব্দী, রাজধানী, দুরন্ত প্রভৃতি লাক্সারি ট্রেন ৮০-১০০ কিমি গতিবেগে চলে। অন্য মেল/এক্সপ্রেসগুলি চলে ৫০-৬০ কিমি গতিবেগে। ৩৬ কিমি গতিবেগে লোকাল ট্রেনগুলি। তাহলে দেখা যাচ্ছে, গতিবেগের অগ্রাধিকারে মালগাড়িগুলি সবার পিছনে। একবিংশ শতকের দু’-দু’টি দশক পেরতে চলেছি আমরা। আজ আমরা প্রশ্ন করব না, কেন এই দুরবস্থা? ট্র্যাক সব জায়গায় নিরাপদ নয়। সিগন্যাল সিস্টেমেও রয়েছে অনেক গলদ। গত কয়েক দশকে সংঘটিত রেল দুর্ঘটনাগুলিই এর জলজ্যান্ত প্রমাণ। ভারতীয় রেলের ‘সেফটি সিস্টেম’ বারবার সমালোচিত হচ্ছে। তবু রেল কর্তৃপক্ষের চৈতন্যোদয় হয় না। এতকাল সরকারের তরফে বলা হয়েছে যে, যাত্রী এবং পণ্য পরিষেবা চালু রেখে এই কাজ করা কঠিন। সেই দিক থেকে করোনা পরিস্থিতি ভারতীয় রেলের সামনে এক বিরাট সুযোগ এনে দিয়েছিল। ছ’-সাত মাস তো কম সময় নয়! সদিচ্ছা থাকলে এই সুদীর্ঘ সময়ের সদ্ব্যবহার করে ভারতীয় রেলের ভোল বদলে দেওয়া যেত।
হায়! সরকার সে-পথে হাঁটতে অক্ষম, বুঝিয়ে দিল। বেছে নিল সবচেয়ে নিরাপদ রাস্তাটি। তুলে দিল ৩৮টি কনসেশন। উল্লেখযোগ্যভাবে কোপ পড়েছে প্রবীণ নাগরিকদের উপর। একে সঞ্চয়ের উপর সুদের হারে দেওয়া হচ্ছে কোপের উপর কোপ। এবার তাতে খাঁড়ার ঘায়ের মতোই নেমে এল রেল কনসেনশন বাতিলের সিদ্ধান্ত। সব দায় কিছু প্রবীণ মানুষের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে আত্মরক্ষা করতে পারবে কি ভারতীয় রেল? প্রবীণ এবং স্বনামধন্য কিছু গুণী মানুষের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধে কেড়ে নিয়ে রেল কি রাতারাতি বিপুল আয় বাড়াতে পারবে? সারা পৃথিবী বিশ্বাস করে, ছাত্ররাই হল ভবিষ্যৎ। সব সরকারের উচিত, সব রকমে ছাত্র সমাজের পাশে দাঁড়ানো। মোদি সরকারের রেল এক্ষেত্রেও উল্টো পথের যাত্রী। দেশবাসী পরিতাপের সঙ্গে আরও লক্ষ করল—এমএলএ, এমপিদের এই বন্ধনীতে রাখার সাহস হল না। সেটা করলে অন্তত এই পদক্ষেপের মধ্যে সরকারের সততা খুঁজে পাওয়া যেত। যাই হোক, রেলের এই পদক্ষেপের মধ্যে ঘুরে দাঁড়াবার কোনও ইঙ্গিত নেই। ফের পরিষ্কার হল যে ভারতীয় রেল অনির্দিষ্টকালের জন্য বিপুল ‘বাজেট সাবসিডি’তেই তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার পক্ষে। এমন পরগাছার কাছে নাগরিকদের কোন প্রত্যাশাই-বা থাকতে পারে!