পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
কাজেকর্মে স্বচ্ছতা একটি সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে। দল ও সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে মমতা সরকারের সামগ্রিক উদ্যোগ লক্ষণীয়। দেশে ভয়াবহ বেকার পরিস্থিতির মধ্যে যদি যোগ্য প্রার্থীকে বঞ্চিত করে জনপ্রতিনিধিদের আত্মীয়-পরিজন চাকরি পান তা জনমানসে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এটা বুঝেই শৃঙ্খলারক্ষার প্রশ্নে আগেভাগেই পুর দপ্তর কঠোর। গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ করতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পুরসভা বা পুর নিগমে কোনও জনপ্রতিনিধির পরিবার, আত্মীয়স্বজন আর চাকরি পাবে না। যদি কারও নাম সেক্ষেত্রে থেকে থাকে তাহলে গোটা প্যানেলই বাতিল করা হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে ডিরেক্টরেট অব লোকাল বডিজকে (ডিএলবি)। নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বজনপোষণ দুর্নীতি রোধের জন্য ছাঁকনির কাজটি ঠিকমতো করা সম্ভব হলে আখেরে তৃণমূল লাভবান হবে। এতে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলই হবে। তাতে মুষ্টিমেয় কিছু ক্ষমতালোভী সুযোগসন্ধানী ক্ষুব্ধ হবেন। তাহলেও এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এক ঢিলে দুই পাখি মারার যথোচিত কাজটি করা হল। চুঁচুড়া পুরসভার নিয়োগের প্যানেল বাতিলের ঘটনায় দলের ভাবমূর্তির রক্ষার পাশাপাশি সতর্ক করা হল অন্যান্য দুর্নীতিগ্রস্তদেরও। শুদ্ধকরণের কথা মুখে বলেও সিপিএমের মতো একটি দল যে কাজটি করার সাহস দেখাতে পারেনি সেই কাজটিই অনায়াসে করে দেখাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনপ্রতিনিধিদের আত্মীয়স্বজনকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বজনপোষণ বন্ধ করা সম্ভব হলে মমতা সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা যে অনেকখানি বেড়ে যাবে তা বলাই বাহুল্য। ওই সিদ্ধান্তে বৃহত্তর লাভ হবে সরকারের। কারণ এই আমলেই তোলাবাজি, সিন্ডিকেট, কাটমানি ইত্যাদি নিয়ে বহু মানুষের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কড়া হুঁশিয়ারির পর সেক্ষেত্রেও রাশ টানা গেছে। আসলে সদিচ্ছা থাকলে অনেক দুর্নীতিই রোধ করা সম্ভব। সে পথই দেখাচ্ছে মমতার সরকার।
তৃণমূল সরকারের আমলে রাজ্যে উন্নয়ন হয়নি, এমন কথা অতি বড় নিন্দুকও বলতে পারে না। এই সরকারের নানা সহায়তা প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন রাজ্যের কোটি কোটি মানুষ। ক্ষমতাসীন সরকারের জনস্বার্থে গৃহীত নীতির আকর্ষণ দিন দিন বাড়ছে। সরকারের কাছে দাবি-প্রত্যাশাও তাই বাড়ছে। মানুষের স্বার্থরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হলে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মাথাচাড়া দেওয়ার বিষয়টাকে আটকাতেই হবে। এই সারসত্যটি বুঝেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধানসভা ভোটের আগে এই কাজটি ঠিকমতো করতে পারলে সুফল মিলবে। না-হলে তা হবে এক কলসি দুধে এই ফোঁটা চোনার মতো। নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি বন্ধ করাটা তাই খুবই জরুরি। সেটা সম্ভব হলে সাধারণ চাকরিপ্রার্থীরা যেমন উপকৃত হবেন তেমনি আস্থা বাড়বে সরকারের উপরও।