পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
আমরা জানি, গত এপ্রিল-মে মাসে বেকারত্বের হার ২৩.৫ শতাংশে চড়েছিল। সংখ্যাটি জুলাইতে নেমে এসেছিল ৭.৪ শতাংশে। উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করা যাচ্ছে যে, সংখ্যাটি আগস্টে ফের ঊর্ধ্বমুখী—৮.৪ শতাংশ। অর্থাৎ কাজের সুযোগ কমছে। সোজা কথায়, বেকারের সংখ্যা ফের বাড়ছে। জুলাই মাস যে স্বস্তি দিয়েছিল, আগস্ট মাস সেটাই কেড়ে নিয়েছে। এখন সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি। গবেষণা সংস্থার মাস শেষের সমীক্ষা রিপোর্টে ভালো কিছু অপেক্ষা করবে বলে ভরসা হয় না। কারণ, গ্রামীণ ভারত হাত তুলে দিতে শুরু করেছে। এই ভয়টাই পাচ্ছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা মোদি সরকারকে বার বার বলেছেন, এবার গ্রামের দিকেও নজর দিক সরকার। চাহিদা বৃদ্ধির দিকে নজর দিতে হবে। তার জন্য ন্যূনতম ফিসকাল স্টিমুলাসের ব্যবস্থা কেন্দ্রকে করতেই হবে। রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এটা না করার অর্থ নতুন করে বিপদ ডেকে আনা। এই মুহূর্তে বেকারত্বের যে চেহারা সারা দেশ দেখাচ্ছে সেটা ২০১৬ থেকে লকডাউন পূর্ববর্তী যে-কোনও মাসের থেকে খারাপ! গত জুলাইয়ের তুলনায় সার্বিকভাবে ২ লক্ষাধিক মানুষের কাজের সুযোগ আগস্টে এসে কমে গিয়েছে। বিষয়টি যদি ২০১৯-এর আগস্টের সঙ্গে তুলনা করা যায় তবে দেখা যাবে এই এক বছরে ১ কোটি ৭ লক্ষ মানুষের কাজের সুযোগ কমেছে।
সব মিলিয়ে করোনার চেয়ে বড় বিপদের নাম এখন বেকারত্ব। প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং বিজেপির রকমারি নেতারা শুধু কথার ফুলঝুরি ছুটিয়ে চলেছেন। মোদি সরকার কাজের কাজ কিছুই যে করছে না তার প্রমাণ ধসে পড়া অর্থনীতি এবং ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব। এখানেই উল্টো পথের পথিক বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি হয়তো বুঝে গিয়েছেন, এই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন-নিবেদন করে কোনও লাভ নেই। কারণ, এই সরকার যুক্তরাষ্ট্রীয় রীতিনীতির ধার ধারে না। ছায়ার সঙ্গে লড়াই করে গাত্র ব্যথার ভুল তিনি করতে চান না। বরং রাজ্য সরকারের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেই কর্মসংস্থানের বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতিয়ার তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প কর্মসাথী। ২ লক্ষ টাকা অবধি মূলধনের ছোটখাটো ব্যবসার মাধ্যমে মানুষকে স্বনির্ভর করাই এই স্কিমের উদ্দেশ্য। প্রতি বছর এক লক্ষ বেকার যুবক-যুবতীকে এই স্কিমের সুবিধা দেওয়া হবে। প্রতিটি পরিবারের একজন করে এই স্কিমে যুক্ত হবেন। আগামী তিন বছর এই স্কিম চলবে। প্রাথমিকভাবে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। এই মুহূর্তে এর চেয়ে জরুরি পদক্ষেপ আর কী হতে পারে! এজন্য সাধুবাদ প্রাপ্য মুখ্যমন্ত্রীর। যথাসম্ভব নিরপেক্ষ এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি রেখে স্কিমটি দ্রুত বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করতে হবে সরকারি অফিসারদের। খেয়াল রাখতে হবে, দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের চেনা অভিযোগে এমন সুন্দর একটি স্কিম যেন কোনওভাবেই ব্যাহত না হয়।