রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
এই একটি প্রকল্প বুঝিয়ে দিয়েছে, গরিব মানুষকে সামনের দিকে একটু একটু করে এগিয়ে নিয়ে যেতে একটি মানবিক সরকারই যথেষ্ট। দেশ স্বাধীন হয়েছে সাত দশকের বেশি হয়ে গেল। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলির মাধ্যমে এই সুদীর্ঘ সময়ে রাজকোষের কত লক্ষ কোটি টাকা খরচ হয়েছে? চট করে কেউ বলতে পারব না। কিন্তু, অনুমান করতে পারি যে এর মধ্যে বাজে খরচ বা অপচয় হয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। কন্যাশ্রীর জন্য এই সাত বছরে মোট খরচের পরিমাণ কিন্তু তার এক ভগ্নাংশ মাত্র। তথ্যটি থেকে এই সিদ্ধান্তে আসা যায় না কি—কোনও সরকার চাইলেই তার বাজে খরচ কমিয়েও একটি বিপ্লব সংঘটিত করে ফেলতে পারে? তার জন্য জরুরি শুধু—মানুষের কল্যাণ চিন্তা এবং কিছু উদ্ভাবনী বুদ্ধি। কন্যাশ্রী হল তার সর্বশ্রেষ্ঠ উদাহরণ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য শুধু কন্যাশ্রী উপহার দিয়েই থেমে যাননি। গরিব মানুষের জন্য নিরন্তর ভেবে চলেছেন—একের পর এক প্রকল্প/কর্মসূচি নিয়েছেন। কোনও সন্দেহ নেই, কন্যাশ্রীর ঠিক পরেই স্থান পাওয়ার যোগ্য তাঁর সবুজসাথী প্রকল্প। ২০১৫ সালের শেষদিকে এই প্রকল্পটি নেওয়া হয়। তৃণমূল সরকারের প্রথম টার্ম প্রায় শেষের মুখে। ২০১৬-তে ফের ক্ষমতাসীন হয়ে প্রকল্পটির বেনিফিট রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সারা দেশের ভিতর এটিও এক অভিনব প্রকল্প। স্কুলপড়ুয়া (নবম-দ্বাদশ শ্রেণী) মেয়েদের হাতে একটি করে সাইকেল তুলে দিয়েছে রাজ্য সরকার। সবার বাড়ির কাছে স্কুল থাকে না। মেয়েরা এই সাইকেল চড়েই স্কুলে যাতায়াত করছে। ব্যক্তিগত নানা কাজেও সাইকেলটি ব্যবহার করতে পারছে তারা। এই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় অবদান হল—লক্ষ লক্ষ মেয়ের ‘স্কুলছুট’ হওয়া ঠেকিয়েছে। স্কুলছুটের সমস্যা নিয়ে হাজার হাজার পাতার গবেষণাপত্র লেখা হয়েছে। কয়েক নদী চোখের জলও ফেলেছে এই পৃথিবী। কিন্তু কেউ ভাবেনি, কত সহজে এই অভিশাপ থেকে সমাজকে কিছুটা হলেও রক্ষা করা যায়। আরও খোঁজ নিলে দেখা যাবে—দীর্ঘ লকডাউনের কালে অসংখ্য পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র উপায় হয়ে উঠেছে এই সবুজসাথী। সব মিলিয়ে সবুজসাথীই সবুজসাথীর তুলনা। বাংলার প্রতিটি মানুষের জন্য আনন্দের খবর এই যে, গত সোমবার ফের রাষ্ট্রসংঘই পুরস্কৃত করেছে সবুজসাথীকে। ১৬০টি দেশের ৮০০টি প্রকল্পের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের বিচারে ‘সেরার সেরা’ সম্মান লাভ করেছে সবুজসাথী। এবার আর অপ্রত্যাশিত মনে হয়নি কারও। কন্যাশ্রী, সবুজসাথী, ... সত্যিই একটি ছন্দে এগিয়ে চলেছে। সবুজসাথীও গর্বিত করেছে সারা ভারতকে। সবুজের অভিযানে বাংলার এই নেতৃত্ব অক্ষুণ্ণ রাখতে আন্তরিক হতে হবে আমাদের সকলকেই।