পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
এইভাবে আরও কয়েক শতক পেরিয়ে যায়। অবশেষে আঠারো শতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ কাগজের মুদ্রা গ্রহণ করে। ভারতীয় উপমহাদেশে কাগজের টাকার প্রচলন হয় পরের শতকে। দু’দশকের বেশি হল আড়াইশো বছরের অভ্যাস পাল্টে ফেলার প্রয়োজন অনুভব করেছে ভারত। অবশেষে ভারতও ডিজিটাল লেনদেনের গুরুত্ব স্বীকার করে নিয়েছে। নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় এসে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ গড়ে তোলার অঙ্গীকার ঘোষণা করেন। কিন্তু তাতে প্রধান বাধা অর্থনীতির দুর্বল চেহারা এবং আনুষঙ্গিক পরিকাঠামোর সীমাবদ্ধতা। তবু বিভিন্ন ক্ষেত্রে পেমেন্ট ব্যাঙ্কের মাধ্যমে করা আবশ্যিক করে দেওয়া হল। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল—একশো দিনের কাজের মজুরি, বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা, বেকার ভাতা, নানা ধরনের ছাত্রবৃত্তি, রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি প্রভৃতি। এজন্য দেশজুড়ে বিনা খরচে (জিরো ব্যালান্স) ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট (জন ধন যোজনায়) খোলার স্কিম নিল কেন্দ্র। গরিব এবং সামান্য লেখাপড়া জানা কোটি কোটি মানুষও কার্ডের মাধ্যমে লেনদেনে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন। একথা সত্যি। কিন্তু সমস্যা হল, এই পুরো ব্যবস্থাটাই বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা নির্ভর। দেশের বিরাট অংশ এখনও বিদ্যুৎহীন। ইন্টারনেটযুক্ত মোবাইল ফোন পরিষেবা থেকেও বঞ্চিত কয়েক কোটি পরিবার। সুতরাং ডিজিটাল ইন্ডিয়ার বাস্তবায়ন থেকে এখনও কয়েক যোজন দূরে অবস্থান করছে আজকের ভারত।
তার মধ্যে রয়েছে অনলাইন লেনেদেনে জালিয়াতি দুর্নীতির কোপ। এমনকী, দুর্নীতি জালিয়াতির খপ্পরে না পড়েও বহু মানুষকে লেনদেন অসম্পূর্ণ থাকার দুর্ভোগ সইতে হয়। অর্থাৎ গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ডেবিট হয়ে যাওয়ার (কাটার) পরও নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হয় না। এটিএম থেকে টাকা তোলার সময়েও এই ধরনের বিপত্তি হয়ে থাকে। এমনিতে মানুষ এখন তীব্র অর্থসঙ্কটের মধ্যে রয়েছেন। তার মধ্যে যদি এই উটকো ঝামেলা চলতে থাকে তবে দুর্ভোগ অনেক বেড়ে যায়। কমবেশি সব ব্যাঙ্ক এবং ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের নিষ্পত্তি অনেকের ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হয় না। যথাসময়ে হস্তক্ষেপ করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ডিজিটাল লেনদেনের এই সমস্যার দ্রুত নিষ্পত্তি চায় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। তাই আরবিআই সংশ্লিষ্ট সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে দিয়েই ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা এগচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলির তরফে এই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করা উচিত। তা না-হলে ডিজিটাল অর্থনীতির পথে এই কষ্টার্জিত অগ্রগতিটুকুও ব্যাহত হতে পারে। ডিজিটাল দুনিয়ার সামনে ভারতের জন্য এটি হবে খুব খারাপ বিজ্ঞাপন।