উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। হিসেব করে চললে তেমন আর্থিক সমস্যায় পড়তে হবে না। ব্যবসায় উন্নতি ... বিশদ
সত্য যতই অপ্রিয় হোক তা স্বীকার করে নেওয়ার মধ্যে কোনও লজ্জা নেই। সেই স্বীকারোক্তি বুদ্ধিমানের কাজ। আসল সত্যটি প্রকাশ পেলে অনেক সময় বিভ্রান্তিও কাটে। দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে কিনা তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণে না গিয়েও বলা যায় এ নিয়ে মানুষের মনে একটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়নি বলে উল্লেখ করেছে। রাজ্যে মমতার সরকার কিন্তু কিছু এলাকায় গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরুর আশঙ্কার কথা বলে মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন করার চেষ্টা করেছে। সত্যকে এভাবে স্বীকার করার সাহসিকতা দেখিয়েছে নবান্ন। নেতৃত্বের দূরদর্শিতায় ইতিবাচক ফলও মিলেছে হাতেনাতে। প্রশাসনের কড়া নজরদারি ও শাসনে বেপরোয়া কিছু মানুষ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল। তাঁদের এই গৃহবন্দি থাকাটা যদি সচেতনতার বহিঃপ্রকাশ হয় তাহলে তা মঙ্গলজনক। খণ্ডিত আকারে লকডাউনের এই প্রথম দিনটিতে পুলিসের সঙ্গে লুকোচুরি খেলা ছিল বন্ধ। বন্ধ ছিল চায়ের দোকান। তাই হয়নি পাড়ার চায়ের দোকানে বাঙালির অতি প্রিয় মজলিসি আড্ডা। বিরল এই ঘটনার সাক্ষী থাকল রাজ্যবাসী। এমন শুনশান দৃশ্য বাংলার মানুষ শেষ কবে দেখেছেন বলা শক্ত। এমন সফল লকডাউন গত ২৩ মার্চ থেকে ৭০ দিনের লকডাউন পর্বকে হার মানিয়ে দিল। মানুষ হয়তো বুঝতে পারল আর্থিক মূল্যের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বড়।
আনলক পর্বে রাজ্যে করোনা সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যার পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রাজ্যকে যথাসম্ভব সচল রেখে সপ্তাহে মাত্র দু’দিন যেভাবে কড়া বিধিনিষেধের লকডাউন ব্যবস্থা প্রশাসন করল তাতে হয়তো সাপ মরবে, লাঠিও ভাঙবে না। সংক্রমণের শৃঙ্খল ভেঙে দেওয়ার উদ্দেশে হপ্তা মাঝের প্রথাভাঙা লকডাউনের সিদ্ধান্তে বুদ্ধিমত্তার ছাপ স্পষ্ট। এতে আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা কম। দরকারি জিনিস কেনার চাহিদা কমার আশঙ্কা প্রায় নেই বললেই চলে। মানুষও তেমন অসুবিধাতেও পড়বেন না। কারণ সপ্তাহের অন্য দিনে বিক্রিবাটার সুযোগ রয়েছে। করোনা আবহে নাগরিকদের একাংশের মধ্যে যখন অত্যন্ত জরুরি সুরক্ষাবিধি মেনে চলার অর্থাৎ স্বাস্থ্য সচেতনতা বোধ নিজে থেকে আসে না তখনই কড়া শাসনের প্রয়োজন পড়ে। সেটাই স্পষ্ট করেছে নবান্ন। তাই সক্রিয় হয়েছে পুলিসও। কারণ এতদিন পর্যন্ত কিছু মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মানার নিত্য নতুন কৌশল নিয়ে চলছিলেন। যা আর হতে দেওয়া যায় না। তাই সরকারি শাসন আর সচেতনতার মিশেলে তিলোত্তমার ছবিটাই বদলে গিয়েছিল নতুন করে গৃহবন্দির এই প্রথম দিনটিতে। স্বাস্থ্য বিধি ভাঙলেই কারও কপালে জুটেছে কড়া শাস্তি, কোথা বা রুজু হয়েছে মামলা। এদিনের সাফল্যের নেপথ্য নায়ক অবশ্যই আইনরক্ষকরা। আইন ও মানবিকতার লক্ষ্মণরেখা অতিক্রম না করেই দেখিয়ে দিলেন মানুষের সার্বিক নিরাপত্তারক্ষার স্বার্থে তাঁরা কতটা দায়িত্বশীল। এর জন্য তাঁদের প্রশংসা প্রাপ্য। পুলিসের কড়া শাসনেই কিছু বেপরোয়া মানুষকে সবক শেখানোরও ব্যবস্থা হল। আগামী লকডাউনের দিনগুলিতেও পুলিসের এমন ভূমিকাই দেখতে চায় রাজ্যবাসী।