বিতর্ক-বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম-পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থোপার্জনের সুযোগ।প্রতিকার: অন্ধ ব্যক্তিকে সাদা ... বিশদ
শয়নে স্বপনে জাগরণে মানুষ তৃপ্তি ও সুখ খোঁজে। মাটি ছেড়ে আকাশ-মহাকাশ, আকার-নিরাকার, অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ সবখানেই তার তৃপ্তি ও সুখের সাম্রাজ্য। মানুষকে তখন পরিচালনা করে তার মন, মনোজগৎ। মানুষ যা চায়, তা তো সবসময় পায় না। পাওয়াটা সম্ভবও নয়। অপ্রাপ্তি মানুষকে কষ্ট দেয়। মানুষ যন্ত্রণা অনুভব করে। যন্ত্রণামুক্তির উপায় খোঁজে। তাতে কিছু মানুষ অসফল হয়। তখন তারা হতাশায় ভোগে। নিজেদেরকে ব্যর্থ ভাবে। জীবনের পক্ষে এটা ভীষণ ভারী হয়ে যায় কখনও, কারও ক্ষেত্রে। আমি বাঁচব। আমি বাঁচতে চাই। এই যে অনুভব তখন আর মানুষকে প্রাণিত করে না। বরং জীবনের বিপরীত দিকে তাকে ঠেলে দেয়। জীবনের উল্টো দিকে যা নিশ্চুপে দাঁড়িয়ে থাকে, সে-ই তো মৃত্যু। মৃত্যু হল সেই অবস্থা—যা জীবকে জড়পদার্থে রূপান্তরিত করে দেয় এক মুহূর্তে। পূর্ব মুহূর্তের সত্যিটাকেও মিথ্যে করে দেয়। সারা জীবনের অর্জন উপার্জন থেকে মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ‘আমার’ বলে গর্বের স্থাবর অস্থাবর সম্পদ, সবকিছু অন্যের হয়ে যায়। সেখানে উড়ে এসে জুড়ে বসে উত্তরাধিকার!
এই অনিবার্য অবস্থা পরিণত বয়সে এবং স্বাভাবিক হলে অবশ্য মেনে নিতে কষ্ট হয় না। কিন্তু তা যদি অস্বাভাবিক এবং সামান্য বয়সে স্বনির্বাচিত হয়? সেটা মেনে নেওয়া কঠিন। ভীষণ কঠিন। আজ সেটাই ঘটছে। পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ করা যাচ্ছে যে অল্পয়সিদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর সর্বশেষ রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, রোজ গড়ে একজন পড়ুয়া আত্মহত্যার শিকার হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীন আইসিএমআর জানাচ্ছে, শিশু ও কিশোরদের মধ্যে ১৩ শতাংশকে গ্রাস করেছে মানসিক সমস্যা। সারা পৃথিবীতে বছরে হতাশার শিকার মানুষ সাড়ে পাঁচ কোটির বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, করোনা উত্তরকালে এই সমস্যা আর বাড়তে পারে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের তরফে ‘মনোদর্পণ’ কর্মসূচি গ্রহণ এক প্রশংসনীয় উদ্যোগ। পড়ুয়া, শিক্ষক, অভিভাবক প্রভৃতি সকলে এর মাধ্যমে উপকৃত হবেন বলে উদ্যোক্তারা আশা করেন। কিন্তু সমস্যা হল, কর্মসূচিটা ইন্টারনেট এবং তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর। প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে এই পরিষেবা এখনও ভালো নয়। দেশে মোট পড়ুয়া ২৮ কোটি। তাদের সকলের মনোবল, আত্মবিশ্বাস অটুট রাখার স্বার্থে উপরোক্ত পরিষেবাটিকেও অবিলম্বে সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উপর গুরুত্ব দিতে হবে।