বিতর্ক-বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম-পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থোপার্জনের সুযোগ।প্রতিকার: অন্ধ ব্যক্তিকে সাদা ... বিশদ
এদিকে সংক্রমণের গতিও বাড়ছে। করোনার সঙ্গে যুদ্ধে জিততে হলে প্রয়োজন ওষুধের। ভ্যাকসিন এখনও বাজারে আসেনি। এর মধ্যেই অ্যাজিথ্রোমাইসিন, নিমুসুলামাইড, প্যারাসিটামলের মতো কিছু জরুরি ওষুধের দাম বাড়তে শুরু করেছে। কোভিডের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় একটি ইঞ্জেকশনের দাম একেবারে প্রায় ৫০ শতাংশ নাকি বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি। বলাই বাহুল্য এই ইঞ্জেকশন ব্যবহার করা হলে স্বাভাবিকভাবেই হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে চিকিৎসার খরচ বাড়বে। পকেটে টান পড়বে রোগীর আত্মীয় পরিজনের। গত ডিসেম্বর মাসে এবং চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেও বেশ কিছু ওষুধের দাম একপ্রস্থ বেড়ে গেছে। চলতি মাস থেকেই বেড়েছে করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত অন্যতম একটি ওষুধের দাম। দেশের সরকার যেন নীরব দর্শক। মানুষ যখন বিপদের মধ্যে রয়েছে তখন ফের আরও একঝাঁক ওষুধের দাম বাড়ার সম্ভাবনা উদ্বেগ আরও বাড়াচ্ছে। এই সঙ্কট মোকাবিলায় কেন্দ্রের ঘুম ভাঙবে কবে? ওষুধের মূল্যের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত যে ঊর্ধ্বসীমা আছে তার পরিবর্তন করে দামবৃদ্ধির অনুমোদন যদি সরকার দেয় তাহলে কোটি কোটি দেশবাসীকে আরও বিপদের মুখেই ঠেলে দেওয়া হবে। এই সত্যটি সরকারের মাথায় রাখা উচিত।
লকডাউনের জেরে মানুষের হাতে নগদ টাকার অভাব। তারপর দফায় দফায় পেট্রল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় নিত্যপণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। মানুষ সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধিরোধেও কেন্দ্রের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও ইতিবাচক উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। তারা ওষুধের দামবৃদ্ধি আটকাতে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। যেক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে লাগাম টানা দরকার সেখানে এত উদাসীনতা কেন? একদিকে স্বল্প সঞ্চয় সহ ব্যাঙ্ক পোস্টঅফিসে জমানো টাকায় সুদের হার ক্রমাগত কমছে, অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং ওষুধের দাম বাড়ছে। একেবারে শাঁখের করাত। তবু দেশের সরকারের টনক নড়ছে না। অথচ দেশবাসীকে অর্থাৎ নাগরিকদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার দায়িত্ব তাদেরই। গোদের উপর বিষ ফোড়ার মতো এই সময়েই সীমান্ত সুরক্ষার প্রশ্নটি সামনে এসে পড়ায় ভারত-চীন সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। সেই কারণে ওষুধ শিল্পের উপর তার মারাত্মক প্রভাবও পড়েছে। আর্থিক সঙ্কটের আবহেই ওষুধ তৈরির উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাস সংক্রমণের পর চীন থেকে কাঁচামালের জোগান কমতে শুরু করেছে। সেইসঙ্গে চীনা সামগ্রী বয়কটের কর্মসূচির জেরে যেভাবে সঙ্কট আরও ঘনীভূত হয়েছে তার মোকাবিলা করতে হবে সরকারকেই। ওষুধের দামবৃদ্ধির পক্ষে ওষুধ সংস্থাগুলি যেসব যুক্তি দিচ্ছে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুক সরকার, যাতে সাধারণ মানুষের উপর আর কোপ না পড়ে। এমনিতেই মানুষের এখন ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা। দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে এবং জীবনদায়ী ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারি ব্যর্থতা নজরে আসছে। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা দরকার। সেই পরিকল্পনার অভাব বারবার দেখা হচ্ছে। দেশবাসীকে আরও বিপদের মুখে ঠেলে না দিয়ে ওষুধ শিল্পের ক্ষেত্রে উদ্ভুত সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করতে হবে কেন্দ্রকে। স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে তারা যেন লক্ষ্যভ্রষ্ট না হয়। সেক্ষেত্রে এতটুকু ঘাটতি থাকলে বিপদ কিন্তু আরও বাড়বে।