কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
অত্যন্ত নতুন কোভিড-১৯ রোগটি ভয়ঙ্কর সংক্রামক। এখনও পরিষ্কার নয় এর সংক্রমণের ক্ষমতা ঠিক কতটা। ঠিক কতটা সতর্ক হলে সংক্রমণের বিপদ থেকে নিজেকে রক্ষা করা যাবে। বিশেষজ্ঞদের উপলব্ধি, মত এবং স্বভাবতই নির্দেশও কিছুদিন অন্তর পাল্টে যাচ্ছে। আলাদা আলাদাভাবে সুরক্ষিত থাকা প্রতিটা মানুষের কর্তব্য। ব্যক্তি সুরক্ষিত সুস্থ থাকলে পরিবার, অফিস, প্রতিবেশী প্রভৃতি সকলে ভালো থাকবে। কিন্তু, এই গরিব দেশের সকলকে সুরক্ষিত রাখার জন্য যে সাধারণ পরিকাঠামো দরকার তা সহজলভ্য নয়। মাস্ক, ফেসশিল্ড, স্যানিটাজার, হ্যান্ডওয়াশ প্রভৃতি কেনার ক্ষমতা সকলের নেই। গরিব পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি হলে পরিবারের সবার জন্য কেনা আরও কঠিন ব্যাপার। পিপিই কেনার কথা ছেড়েই দেওয়া যায়। দেশের প্রায় সর্বত্র সংক্রমণের হার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আগের দিনের রেকর্ড ভেঙে যাচ্ছে পরের দিন! এইভাবে আমরা ঠিক কোথায় যে চলেছি, তার উত্তর বিশেষজ্ঞদেরও অজানা। এই পরিস্থিতির একটা বড় কারণ সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাব। আবার কিছু মানুষের এসব কেনার সঙ্গতি আছে এবং এগুলো ব্যক্তিগত সংগ্রহেও আছে। তবু তাঁরা ঠিকমতো ব্যবহার করেন না। তাঁদের কথা আলাদা। কিন্তু আর্থিক দৈন্যের কারণেই যে বহু মানুষ এসব কিনতে এবং ব্যবহার করতে পারছেন না, এটা এক নির্মম বাস্তব। রাজ্য সরকার এই বিষয়ে কেন্দ্রকে গোড়াতেই সতর্ক করেছিল। মাস্ক-সহ সমস্ত ধরনের সুরক্ষা সরঞ্জাম রাজ্যকে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু প্রয়োজন মতো কোনওটাই কেন্দ্র দেয়নি।
কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের বাধ্যবাধকতা মোদি সরকার অনেক সময়ই ভুলে যায় অথবা ইচ্ছা করে মানে না। তাই বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিষ্ক্রিয় থাকতে পারেন না। কেন্দ্রীয় সহায়তার বিকল্প খুঁজে নিতেই অভ্যস্ত তিনি। যেমন লকডাউনের সময় থেকে প্রথম তিন মাসে দেশজুড়ে যখন কাজের হাহাকার তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বাংলায় ১১ কোটি ৫৩ লক্ষ কর্মদিবস সৃষ্টি করে সাড়া ফেলে দেয়। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পকে হাতিয়ার করেই এই অসাধ্য সাধন করে বাংলা। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কোভিড-১৯ প্রতিরোধের সরঞ্জাম, যেমন মাস্ক ও পিপিই তৈরির ব্যবস্থা পশ্চিমবঙ্গেই করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকারের মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজেস (এমএসএমই) ডিপার্টমেন্টকে কাজে লাগানো হয়েছে। লক্ষ্য, তিন কোটি মাস্ক তৈরি করা। এতে দেড় কোটি কর্মদিবস সৃষ্টি হবে এবং প্রায় ২০ হাজার মানুষ কাজ পাবে বলে সরকার মনে করছে। বেশি কাজ পাবেন গ্রামের গরিব মহিলারা। মাস্কগুলো স্কুলপড়ুয়া, আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের মধ্যে বিলি করা হবে। বাংলায় তৈরি মাস্ক ভবিষ্যতে প্রতিটি নাগরিকের মুখে শোভা পাবে। সবাই মিলে বিরাট সুরক্ষা বলয় গড়বেন। স্বপ্ন দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যবাসী চায়, তাঁর এই স্বপ্ন পূরণ হোক। করোনা-জয়ের সঙ্গে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রের বিপর্যয়ও কাটিয়ে উঠুক বাংলা।