কর্মপ্রার্থীরা বেশ কিছু সুযোগের সংবাদে আনন্দিত হবেন। বিদ্যার্থীরা পরিশ্রমের সুফল নিশ্চয় পাবে। ভুল সিদ্ধান্ত থেকে ... বিশদ
বিজ্ঞানীরা বুঝে পাচ্ছেন না, ঠিক কোন প্রতিষেধক দিয়ে করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে মানুষকে বাঁচাবেন। অন্যদিকে, চিকিৎসক মহল ভেবে কূল করতে পারছেন না আক্রমণের শিকার মানুষগুলোকে ঠিক কোন ওষুধে সুস্থ করে তুলবেন। মান্য প্রতিষেধক এখনও পর্যন্ত অধরা। নিরন্তর গবেষণা চলছে। পৃথিবীজুড়ে। আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া বসে নেই প্রায় কেউ। মাঝে মধ্যে কোনও কোনও গবেষণা সংস্থার তরফে দাবি করা হচ্ছে, প্রতিষেধক বা টিকার সন্ধান তারা পেয়ে গিয়েছে। মানব দেহে তার প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। টিকা
খুব শিগগির বাণিজ্যিকভাবে বাজারে পৌঁছে যাবে। এদের কাউকেই অবিশ্বাস বা ছোট করে দেখা হচ্ছে না। তবু, চিকিৎসাবিজ্ঞান জগৎ
এখনও নিশ্চিত হয়নি। ব্যাপারটা অনেকাংশেই গবেষক বা গবেষক সংস্থাগুলোর দাবির স্তরেই রয়েছে।
কোভিড-১৯-এর প্রথম সংক্রমণ লক্ষ করা যায় চীনে। গত বছরের শেষদিকে। নতুন রোগটি সম্পর্কে সারা দুনিয়ার কারও কিছুই জানা ছিল না তখন। সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে দেখে আতঙ্কিত চীন প্রশাসন লকডাউনের আশ্রয় নেয়। তাতে কিছুটা সুফল তারা পেয়েছিল। সংশ্লিষ্ট মহল বুঝল, লকডাউন একটা হাতিয়ার। অন্তত প্রাথমিক পর্যায়ে। ভয়ানক সংক্রামক ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে এটা ভালো দাওয়াই। রোগটা চীনের সীমান্ত অতিক্রম করার পর অন্য দেশগুলোও এই ব্যাপারে চীনকে অনুসরণ করেছে। লকডাউনের অনেক খারাপ দিক আছে। বিশেষ করে আর্থিক বিকাশের ক্ষেত্রে। তবু লকডাউনকে কেউ উপেক্ষা করতে পারেনি। একবগ্গা হয়ে যারাই উপেক্ষা করেছে, তাদেরকেই বিরাট মূল্য চোকাতে হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি নিয়েও নানা সময়ে নানা মত বেরিয়ে এসেছে। এমনকী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (হু) একাধিকবার বিভ্রান্ত করেছে। শেষমেশ মনে হয়েছে, করোনা ভাইরাসকে এখনও কেউ ঠিকমতো চিনে উঠতে পারেনি। এখনও পর্যন্ত অন্ধের হস্তিদর্শন গোছের ব্যাপার চলছে। তাই করোনা সংক্রমণ এবং এর থেকে মৃত্যু—কোনওটাই বন্ধ হয়নি। বরং বেড়েই চলেছে। বেশিরভাগ দেশে। সংক্রমণ নিয়ে হইচইয়ের ছ’মাস ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত। মানুষকে বাঁচানোর জন্য নিত্যনতুন পন্থা নেওয়া হচ্ছে। তার পরেও জুলাইয়ের গোড়ায় এসে দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীতে আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। মৃতের সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি। দুটোরই বৃদ্ধির প্রবণতা এখনও স্পষ্ট। ভারতের মতো দেশ ‘আনলক-২’-তে প্রবেশ করেও সব জায়গায় লোকাল ট্রেন, মেট্রোরেল প্রভৃতি চালাতে সাহস পাচ্ছে না। অথচ, স্তব্ধপ্রায় অর্থনীতিকে একটু সচল রাখার জন্য এসব ভীষণ প্রয়োজন।
তারই মধ্যে জি-৪ ভাইরাস লাল চোখ দেখাচ্ছে! এই ভয়ানক ভাইরাসটা কয়েক বছরের পুরনো হলেও এর নতুন রূপের খোঁজ মিলেছে। বিজ্ঞানীরা ভয় পাচ্ছেন, জি-৪ তার নতুন অবতারে করোনার মতো কিংবা তার চেয়েও বেশি বিধ্বংসী হবে না তো! এই নতুন বিপদেরও উৎস সেই চীন। কাকতালীয় হলেও সত্যি। চীনা গবেষকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য এই রকম: শুয়োরের লালারসে এই ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে। শুয়োর থেকেই জি-৪ ভাইরাসে কিছু মানুষ সংক্রামিত হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত মানুষ থেকে মানুষে জি-৪ সংক্রমণের প্রমাণ অবশ্য পাওয়া যায়নি। তেমন দৃষ্টান্ত আছে কি না জানার চেষ্টা করছেন গবেষকরা। সে ভালো কথা। কিন্তু, এতেই নিশ্চিন্ত হওয়া যায় না। রোগটা চীনের বলেও উপেক্ষা করা চলে না। ভারতসহ সারা পৃথিবীর উচিত, জি-৪ নিয়েও সতর্ক হওয়া। রোগটির প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার পরিকাঠামো আগাম প্রস্তুত রাখা। করোনা-বিপর্যয়ের পিছনে আমাদের একাংশের গাফিলতিই দায়ী। সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে জি-৪ সংক্রমণ ঠেকাতেই হবে। আন্তরিকভাবে দেখতে হবে, করোনার মতো জি-৪ মহামারী হয়ে ওঠার সামান্যতম সুযোগও যেন না পায়। মানব সভ্যতার স্বার্থেই এই সাবধানতা জরুরি।