গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
৩৩ মিনিটের মন কি বাতে গোল গোল অনেক কথাই তিনি বলেছেন। চীনের নাম করতে এত দ্বিধা কেন? অথচ বলছেন, ভারতের ভূখণ্ডের দিকে যারা তাকাবে তাদের চোখে চোখ রেখে যোগ্য জবাব দেওয়ার সাহস এদেশের আছে। কিন্তু সত্যিই ইন্দো-চীন সেনার রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের দিন ভারতের ভূখণ্ডে লালফৌজের অনুপ্রবেশ ঘটেছিল কিনা সে প্রশ্নের উত্তর এখনও দেশবাসীর অজানা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যিনি ঘরে ঢুকে মেরে আসার হুঁশিয়ারি দেন সেই কড়া হুঙ্কার কিন্তু শোনা যাচ্ছে না চীনের ক্ষেত্রে। তাই একটা সংশয় দানা বাঁধছে। যে কোনও কারণেই হোক চীনের ক্ষেত্রে তাহলে কি তিনি একটু নরম! এর পিছনে কি অন্য কোনও কারণ আছে? প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য স্পষ্ট হওয়া দরকার। এক্ষেত্রে কোনও ধোঁয়াশা রাখলে আমজনতার উদ্দেশে বাগ্মী প্রধানমন্ত্রীর ভাষণটি নিছকই কথার কথা হয়ে যাবে। চীন সীমান্ত লঙ্ঘন করেছিল কিনা তা তিনি স্পষ্ট না করলেও একাধিক উপগ্রহ চিত্রে নাকি ভারতীয় ভূখণ্ডে চীনা সেনার অস্তিত্ব ধরা পড়েছে। তাই প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনের দায় থেকে যাচ্ছে কেন্দ্রের সরকারের।
তাহলে ভারতে চীনা সেনার অনুপ্রবেশের জবাব কীভাবে দেওয়া হল? প্রশ্ন উঠবেই। অনুপ্রবেশ বা আগ্রাসন প্রশ্নে একাধিক বক্তব্য এসে পড়ায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে যদি বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেন তা কি নিছকই তাঁদের কূট রাজনীতি? অনুপ্রবেশের সঙ্গে কি দেশের স্বার্থ জড়িত নয়? বাকপটুতা দিয়ে মন জয় করার চেষ্টা হলেও সংশয় কিন্তু একটা থেকে যাচ্ছে। লালফৌজ যদি সীমান্ত লঙ্ঘনই না করে থাকে তাহলে কীসের এত লড়াই? কেন নিরাপত্তাবাহিনীর এত বৈঠক? সমরাস্ত্রে জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি? বিশেষ অত্যাধুনিক অস্ত্র সম্ভারও তৈরি রাখছে ভারত। এই পরিস্থিতির যথাযথ ব্যাখ্যার প্রয়োজন। মন কি বাতের ভাষণে সারবত্তা যতটা না আছে নাটকীয়তা রয়েছে তার অনেক বেশি। বিদেশি দ্রব্য ছেড়ে লোকালের জন্য ভোকাল হওয়ার উপর গুরুত্ব বা আত্মনির্ভর ভারত গঠনের বক্তব্যে নেই কোনও নতুনত্ব। এতো বিজেপি সরকারের এজেন্ডাই। আর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় সেনা সতর্ক থাকবে সেটাও স্বাভাবিক। সরকারকে আরও একটি প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। গত মে মাসে সীমান্তে ইন্দো-চীন সেনার দফায় দফায় সংঘর্ষের পরও বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়নি কেন? এক্ষেত্রেও নীরবতা অবাকই করে।
চীনের আগ্রাসনের জবাব কীভাবে ভারত দেবে তা নিয়ে গোটা দেশে আগ্রহ বাড়ছে। নরেন্দ্র মোদি সেনাবাহিনীর জয়গান করেছেন যা তাঁদের প্রাপ্যই ছিল। তিনি বললেন, বিদেশ থেকে আসা পণ্যের তুলনায় দেশীয় পণ্যের উপযোগিতা কম নয়। দেশীয় পণ্য ব্যবহারের শপথ নিতে হবে দেশবাসীকে। অতীত ঐতিহ্যের কথাও টেনেছেন। এও বলেছেন, আত্মনির্ভর ভারতই হবে শহিদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধার্ঘ্য। বক্তব্যের নিশানা যে চীন তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যোগ্য জবাব দেওয়াটাই প্রত্যাশিত। দক্ষ ভারতীয় সেনার প্রতি পূর্ণ আস্থাও আছে আপামর ভারতবাসীর। এটাও ঠিক, ভারত ঝগড়ায় নয়, বন্ধুত্বেই বিশ্বাসী। তাই লাদাখ সমস্যা নিরসনে সমাধানসূত্র বের করার চেষ্টাও হচ্ছে যা এখনও পর্যন্ত অধরা। তবে সমাধান কোন পথে আসবে তা নিয়ে জল্পনা যখন তুঙ্গে তখন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ধোঁয়াশা নানা বিতর্ককে উস্কে দিচ্ছে। চীনের নামোচ্চারণে কেন এত অনীহা সেই উত্তরের অপেক্ষায় দেশবাসী।