কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
ওষুধের অপপ্রয়োগের প্রথম বিপদ হতে পারে—পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। কিছু প্রতিক্রিয়া তাৎক্ষণিক। কিছু প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ ঘটে দেরিতে। প্রতিক্রিয়া প্রকট হতে কয়েক বছরও লেগে যায় কোনও কোনও ক্ষেত্রে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে নতুন অসুখের সৃষ্টি হতে পারে। ত্বক, কিডনি, লিভার, হার্ট, চোখ প্রভৃতির মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। অঙ্গহানি ঘটে যাওয়ারও আশঙ্কা থাকে। শরীরে ওষুধের অপপ্রয়োগের সবচেয়ে বড় বিপদটি হল, ড্রাগ রেজিস্ট্যান্সের সমস্যা। তার মানে, একই রোগে পুরনো ওষুধ আর কাজ করে না। কম মাত্রায়, বেশি মাত্রায় কিংবা অপ্রয়োজনে ব্যবহারের মাধ্যমেই এই বিপত্তি আমরা ডেকে আনি। শরীরে বাসা বাঁধা ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসকে ধ্বংস করার জন্য আমরা ওষুধ খাই বা অন্যভাবে ব্যবহার করি।
অন্যদিকে, জীবাণুরাও চেষ্টা করে ওষুধের সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে। প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে মরিয়া থাকে তারা। যে শরীরে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে ওষুধের প্রয়োগ হয়নি, জীবাণুদের জন্য ওষুধ-প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার পক্ষে সেই শরীরই আদর্শ। এমন শরীরে জীবাণুরা নিজেদের একাধিক উপায়ে পাল্টে ফেলে। প্রাকৃতিক উপায়ে পাল্টে যেতে পারে। নিজেদের জিনগত পরিবর্তন করে নিতে পারে। এক ধরনের জীবাণু অন্য আর-এক ধরনের জীবাণুর সাহায্য নিয়েও প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে নিতে পারে। এই রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসরা সবচেয়ে বিপজ্জনক। কোনও কোনও জীবাণু একাধিক ওষুধেও কাবু হয় না। তাদের বলে মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট (এমডিআর)। আবার কিছু জীবাণু হয়ে ওঠে এক্সটিনসিভলি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট (এক্সডিআর)। তার মানে, ওষুধের বিরুদ্ধে এই জীবাণুরা ব্যাপকভাবে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে নিয়েছে। ড্রাগ রেজিস্ট্যান্টদের মারার উপযুক্ত নতুন ওষুধ খুঁজতে বিজ্ঞানীদের হিমশিম অবস্থা। ঝড়ে কাক মরে ফকিরের কেরামতি বাড়ে। হাতুড়ে চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রবাদটি বেশ মানানসই। ছোটখাটো ক্ষেত্রে ‘ধন্বন্তরি’র খ্যাতি নিয়ে তাঁরা দুঃসাহসী হয়ে ওঠেন। হাতুড়েদের দুঃসাহস থেকেই ভারতজুড়ে ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট রোগীদের আধিক্য। টিবি নির্মূল হওয়ার পথে বড় বাধা ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট রোগীরা। বিপদ রয়েছে অন্য অনেক অসুখের ক্ষেত্রেও। করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থায় এই প্রবণতা কতটা মারাত্মক হতে পারে তা ভাবতেই শিউরে উঠছে চিকিৎসক মহল। কারণ, ইতিমধ্যেই করোনার একাধিক ওষুধ বাজারে চলে এসেছে। বাহ্যিক উপসর্গ মিলিয়ে কেউ কেউ তা খাচ্ছেন বলেও জানা যাচ্ছে। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া এই ধরনের ওষুধ বিক্রির রেওয়াজ সম্পূর্ণ বন্ধ হওয়া জরুরি। এটি বন্ধ করতে হবে সকলের স্বার্থে। আরও মনে রাখতে হবে, করোনা-যুদ্ধটা সবচেয়ে কঠিন।