গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
সেদিন পরোক্ষে। পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ এবং পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ একইভাবে গর্বিত ভারত নামের ছোঁয়ায়। ভারত মহাসাগর—একমাত্র মহাসাগর যা কোনও একটি দেশের নামে পরিচিত। বিদেশি শাসকদের চক্রান্তে বিংশ শতকে এসে প্রাচীন ভারতবর্ষ রাজনৈতিকভাবে একাধিক টুকরো হয়ে গেলেও ভারতকে কেন্দ্র করে যে অঞ্চল সেটি এখনও ভারত উপমহাদেশ নামে পরিচিত।
ভারতের এই গুরুত্ব এমনি এমনি নয়। ভারতই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতা। ভারতের সংস্কৃতিই পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর। এই সংস্কৃতি ‘দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে’র ঐতিহ্যে সুমহান। যুগ যুগ ধরে সবাইকে আপন করে নিয়েছে। নিজেকে উজাড় করে দিয়েছে। কোনও প্রকার ভেদবুদ্ধিকে স্থান দেয়নি। অপরের সম্পদে লোভ করেনি। ভারতের একার এত আছে যে অন্যের দিকে প্রলোভনের হাত বাড়াবার প্রবৃত্তি হয়নি। প্রতিবেশীদের প্রিয় ভাই জ্ঞানে আগলে রেখেছে। ১৯৪৭ সালে স্বাধীন ভারতের সংবিধানের ভিত্তিও সাম্য ও শান্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু নীতি-নৈতিকতা-বিচ্যুত একাধিক প্রতিবেশী ভারতের এই মহিমায় ঈর্ষান্বিত। তাদের ভ্রান্ত ধারণা এই যে, ভারতকে বিশ্বের দরবারে খাটো করতে না পারলে তাদের উত্থান পদে পদে ব্যাহত হবে। তাই পশ্চিমের প্রতিবেশী পাকিস্তান জন্মলগ্ন থেকেই ভারতের ক্ষতি করার জন্য জান লড়িয়ে দিয়েছে। তাতে সে যে নিজে শেষ হয়ে যাচ্ছে, তাতেও কুছ পরোয়া নেই। পাকিস্তান একা পেরে উঠছে না। সম্ভব নয়। তাই সে দোসর খুঁজে নিয়েছে চীনকে। চীনও গত শতকের মাঝামাঝি থেকে ভারতের উত্থান রুখতে বদ্ধপরিকর। দুই দেশ একাধিকবার ভারতের সঙ্গে অনাবশ্যক যুদ্ধেও লিপ্ত হয়েছে। পাকিস্তানের তরফে ছায়াযুদ্ধ আগের মতোই জারি রয়েছে। সম্প্রতি চীন লাদাখ সীমান্তে ভারতকে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়াতে বাধ্য করেছে। তাতে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহিদও হয়েছেন। আরও বিপাকে ফেলতে ভারতের চিরকালের বন্ধু দেশ নেপালকেও ভারতের বিরুদ্ধে লড়িয়ে দিয়েছে চীন-পাক জোট।
এর পিছনে ভারত সরকারের কূটনৈতিক এবং গোয়েন্দা ব্যর্থতা কতটা, তা নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে স্বাভাবিক বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে সারা দেশ বরাবরের মতোই ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত সর্বদল বৈঠকে সমস্ত বিরোধী দলের নেতৃত্ব পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে তাঁরা সকলেই সরকারের পাশে আছেন। বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিকভাবে চীনকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পক্ষেই সওয়াল করেছেন সোনিয়া গান্ধী থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ প্রায় সকলেই। এজন্য তাঁদের সকলের প্রশংসা প্রাপ্য। এবার সরকারকেও উচিত পদক্ষেপ করতে হবে। চীনসহ সমস্ত ষড়যন্ত্রী উচ্চকাঙ্ক্ষীকে বুঝিয়ে দিতে হবে, ভারত শান্তির পক্ষে মানে কোনও অংশেই দুর্বল নয়। উন্নত ভারত তার স্বাধীনতা, অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব ও সুমহান ঐতিহ্য রক্ষার প্রশ্নে কোনও শক্তির সঙ্গে সামান্য আপসও করবে না।