বিদ্যার্থীদের কোনও বৃত্তিমূলক পরীক্ষায় ভালো ফল করবে। বিবাহ প্রার্থীদের এখন ভালো সময়। ভাই ও বোনদের ... বিশদ
তাই আজকের পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার জন্য গভীরভাবে ভাবতে হবে। কৌশল নির্ধারণের জন্য এগতে হবে সন্তর্পণে। খেয়ালখুশি মতো বা একক সিদ্ধান্তে চমক দেওয়ার দিন এটা নয়। বিশেষ করে রাষ্ট্রকে জানতে হবে করোনার সঙ্গে সম্ভাব্য দীর্ঘ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ জরুরি। ভারত পরিচালিত হয় যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায়। কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ই হল উন্নয়নের চাবিকাঠি। করোনা মহামারী একটি রাষ্ট্রীয় পরিস্থিতি। এমন ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে কেন্দ্রকে। মঙ্গলবারের কাগজে একটি প্রধান খবর হল—‘মোদির বৈঠকে বলার সুযোগ পাবে না বাংলা, ক্ষুব্ধ মমতা।’ আজকের অবাঞ্ছিত পরিস্থিতিতে দেশকে বাঁচাবার উপায় খুঁজছে কেন্দ্র। মঙ্গলবার, বুধবার দু’দিনের বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওই ভিডিও বৈঠকে নিজ নিজ বক্তব্য জানাতে পারবেন কয়েকটি ছোটবড় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গসহ অন্য কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকলেও তাঁদের বক্তব্য জানানোর সুযোগ হবে না। সঙ্গত কারণেই ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রিপুরা, গোয়া, লাক্ষাদ্বীপের মতো ক্ষুদ্র রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রতিনিধিরা বলার সুযোগ পেলেও ব্রাত্য বাংলা!
কেন্দ্রের তরফে একটা যুক্তি খাড়া করা হয়েছে বটে তবে তা ধোপে টেকে না। প্রায় দশ কোটি মানুষের একটি রাজ্যের বক্তব্য না জেনে প্রধানমন্ত্রী কোন ‘উপযুক্ত’ সিদ্ধান্ত নেবেন? জনঘনত্বের বিচারে পশ্চিমবঙ্গ দ্বিতীয় স্থানে, বিহারের পরেই। গত একমাসে দশ লক্ষাধিক পরিযায়ী শ্রমিক পশ্চিমবঙ্গে ফিরেছেন। এখনও ফিরছেন অগুনতি মানুষ, রোজ। সাম্প্রতিক উম-পুনে সবচেয়ে বিপর্যস্ত রাজ্যটিরও নাম পশ্চিমবঙ্গ। এই অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গকে তার বক্তব্য জানাবার সুযোগ না দেওয়ার মধ্যে স্বচ্ছতার অভাব প্রকট হয় না কি? করোনা পরিস্থিতিতে এর আগেও একবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বাদ রেখেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যগুলির ভিডিও বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। যদিও বাংলার নেত্রী চুপ ছিলেন না। সেবার তিনি চাঁচাছোলা ভাষাতেই বাংলার মানুষের দুঃখকষ্ট ও প্রয়োজনের কথা জানিয়ে তবে ক্ষান্ত হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী কি সেই ভয় পাচ্ছেন? হ্যাঁ, বাংলার মানুষেরও অনুমান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলার সুযোগ পেলে কোনও রাখঢাক করার মানুষ নন। বাংলার সব প্রয়োজনের কথা সোজাসাপটা বলে দেবেন। এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগ কাম্য। যদি অফিসার লেভেলের ভুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বাদ গিয়ে থাকে তবে সেটা সংশোধন করে নেওয়া হোক। তাঁর মুখ থেকে বাংলার কথা সবিস্তারে শুনুন প্রধানমন্ত্রী। বাংলার জন্য আন্তরিকভাবে কিছু করতে হলে অন্য কোনও পথ নেই।