বিদ্যার্থীদের উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে মধ্যম ফল আশা করা যায়, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। ব্যবসাতে যুক্ত ... বিশদ
পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে ট্রেন ঢুকলে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াটা স্বাভাবিক। তাই ভিনরাজ্যে তাঁরা যে যেখানে ছিলেন, সংক্রমণ রুখতে তাঁদের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা করাটা জরুরি ছিল। তাঁদের ঘরে ফেরানোর জন্য ট্রেন চালানোর বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের কাজে সমন্বয় থাকাটাও প্রয়োজন। দরকার ছিল এব্যাপারে রাজ্যের বক্তব্যকে মান্যতা দেওয়া। কারণ ওই শ্রমিকরা রাজ্যে ঢোকার পর সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেই তাঁদের থাকা খাওয়া, স্বাস্থ্য সুরক্ষার যাবতীয় দায়িত্ব বহন করতে হবে রাজ্যকে। দরকার পুরো প্রস্তুতিও। তাই প্রশ্ন উঠছে, যেভাবে একের পর এক ট্রেনে চাপিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা কেন্দ্র করল, তাতে বাংলার বক্তব্য কতটা গুরুত্ব পেল? যথাযথ পরিকল্পনা করেই ট্রেনের বিষয়ে যে তালিকা রেল মন্ত্রককে রাজ্য দিয়েছিল, তা মেনে আদৌ কি কাজ হচ্ছে? অভিযোগ, তা হচ্ছে না। কাজে অব্যবস্থা ও স্বচ্ছতার অভাব আছে। সমালোচনা হবেই। কারণ পরিযায়ীদের নিয়ে ঘরে ফেরার ট্রেনে বিনা চিকিৎসায় শিশুমৃত্যু বা স্টেশনে পড়ে থাকা মৃত মায়ের চাদর ধরে টানাটানি করা শিশুর ছবিটি প্রমাণ করে দিয়েছে, পরিস্থিতি কতটা শোচনীয়। এতে তো দেশের শাসকের লজ্জিত হওয়া উচিত।
করোনা সঙ্কটের সময় অন্তত রাজ্যের দেওয়া তালিকার ভিত্তিতে পরিকল্পনামাফিক ট্রেন চালানো উচিত ছিল। তা না করে করোনার পাশাপাশি উম-পুনের ক্ষয়ক্ষতির ধাক্কা সামলাতে ব্যস্ত বাংলাকে মারাত্মক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যেই অর্থনীতি বাঁচাতে ঘুরে দাঁড়ানোর সাধ্যমতো চেষ্টাও করছিল বাংলা। বেশ কিছু জায়গায় করোনা পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে এনে বিধিনিষেধে ছাড় দেওয়াও শুরু করেছে রাজ্য সরকার। এই সময়ে উপযুক্ত পরিকল্পনা ছাড়াই লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলায় ফেরানোয় সমস্যা আরও বাড়ল। আগতদের পাশে থাকতে রাজ্য সরকারের চেষ্টার ত্রুটি নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের কারণে রাজ্যের যেসব জেলায় করোনা সংক্রমণ ছিল না, সেখানেও তা ঢুকে গেল। আর গ্রামাঞ্চলে সংক্রমণ ছড়ালে পরিস্থিতি যে কী ভয়াবহ হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়। একথা ঠিক পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে রাজ্য প্রশাসনের সদিচ্ছার কোনও অভাব নেই। নিয়েছে উপযুক্ত ব্যবস্থাও। কিন্তু সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলার সরকারের নিখুঁত পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিয়ে দিল্লির কিছু হঠকারী সিদ্ধান্ত বাংলার বিপদকে বাড়িয়ে তুলল।