বিদ্যায় সাফল্যও হতাশা দুই বর্তমান। নতুন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। কর্মপ্রার্থীদের শুভ যোগ আছে। কর্মক্ষেত্রের ... বিশদ
কিন্তু, আজ রঙ্গ-কৌতুকের সময় নয়। দুঃসহ এ কাল নিয়ে আমাদের ঘরকন্নার দু’মাস পেরিয়ে গেল! তবুও দিশাহীন আমরা। সারা পৃথিবীর সাফল্য-ব্যর্থতার পোস্ট মর্টেমের ভিতর দিয়েই খুঁজে চলেছি জয় হাসিল করার পথ। এ সময় সমন্বয় চাই প্রশ্নাতীত। সমন্বয় দরকার ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে, পাড়ায় পাড়ায়, সমাজের ভিতরে বাইরে, রাজ্যে রাজ্যে। এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের। এমন এক জরুরি পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজ্যগুলির সার্বিক সমন্বয়ের প্রয়োজন কতটা, সে কি রাষ্ট্রের জানা নেই! যদি জানা থাকে, তবে কয়েকটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই: লকডাউন ঘোষণার পর কয়েক কোটি পরিযায়ী শ্রমিক নানা প্রান্তে আটকে গেলেন কীভাবে—ন্যূনতম সুরক্ষা ও স্বাচ্ছন্দ্য ছাড়াই? দু’মাস বাদে তাঁদের যখন নিজ নিজ রাজ্যে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, তখনও কেন তাঁদের নতুন দুর্ভোগের মধ্যে ফেলা হল—বিনা নোটিসে একাধিক শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের গন্তব্য বদলে দিয়ে? যেমন—মহারাষ্ট্রের ভাসাই রোড থেকে রওনা দেওয়া একটি ট্রেনের গন্তব্য ছিল উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর। কিন্তু সেটি পৌঁছাল ওড়িশার রাউরকেল্লা! হায়, কোথায় গোরক্ষপুর আর কোথায় রাউরকেল্লা! শ্রমিক স্পেশালের খেয়ালি চলনের আরও দৃষ্টান্ত: বেঙ্গালুরু থেকে বস্তিগামী ট্রেন যাত্রীদের অন্ধকারে রেখে থামল গিয়ে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে! আর হঠাৎ হঠাৎ কোনও স্টেশনে পাঁচ-দশ ঘণ্টা ‘বিশ্রাম’ নেওয়া তো জলভাত হয়ে গিয়েছে অনেক ট্রেনের। এতে হত দরিদ্র শ্রমিকদের সুরাহার পরিবর্তে দুর্ভোগ বাড়ছে না কি? ডোমেস্টিক ফ্লাইট চালুর প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা এমন ভয়ঙ্কর হল কী করে? বিনা নোটিসে বাতিল হয়ে গেল ৯১টি উড়ান! ভাবা হল কি—যাত্রীরা কত ঝক্কি পোহানোর পর টিকিট কেটেছিলেন? দ্বিতীয় দফার লকডাউন শেষ হলেই দূরপাল্লার ট্রেন এবং অন্তর্দেশীয় বিমান চলাচল শুরু হবে ধরে নিয়ে বহু মানুষ অনলাইন বুকিং করেছিলেন। কিন্তু লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে সমস্ত বুকিং বাতিল হয়ে যায়। সরকারি ঘোষণা মেনে বুকিং করা হয়েছিল ফের। বাতিল উড়ানের টিকিটের দাম যাত্রীর অ্যাকাউন্টে ফেরত আসেনি, ক্রেডিট নোট ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। চরম অর্থসঙ্কটের দিনেও বার বার আটকে রাখা হচ্ছে যাত্রীদের অনেক টাকা। অন্যদিকে, গাড়ি ভাড়া করে এয়ারপোর্টে যাওয়া এবং সেখান থেকে বহু দূরের গন্তব্যে পৌঁছনোর পরিকল্পিত ব্যবস্থাও চৌপাট হয়ে যাচ্ছে।
সকলে কণ্ঠ মিলিয়ে বলছি, আমরা করব জয় নিশ্চয়। কিন্তু, সরকার বাহাদুরের এই বিশৃঙ্খল আচরণে তা কি অহেতুক বিলম্বিত হয়ে উঠছে না? এই যুদ্ধে দেশবাসীকে আরও বেশি করে পাশে পাওয়া চাই। বিশ্বাস, আস্থা বার বার ভাঙলে রাষ্ট্রের পক্ষে মানুষকে পাশে পাওয়া কঠিন হয়ে যেতে পারে। তাই আন্তঃরাজ্য সম্পর্কিত প্রতিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলির ভিতরে সুসমন্বয়ই হোক শেষকথা। করোনার বিরুদ্ধে দেশকে টিমওয়ার্কের চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত তুলে ধরতেই হবে।