বিদ্যায় সাফল্যও হতাশা দুই বর্তমান। নতুন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। কর্মপ্রার্থীদের শুভ যোগ আছে। কর্মক্ষেত্রের ... বিশদ
ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভের এই বিষয়ক সর্বশেষ (২০১৫-১৬) রিপোর্ট উদ্ধৃত করে এমএসএমই মন্ত্রক জানাচ্ছে, শহর ও গ্রাম মিলিয়ে এমএসএমই প্রত্যক্ষভাবে ১১ কোটি ১০ লক্ষ পরিবারের অন্নসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। ম্যানুফ্যাকচারিং, ট্রেড, ইলেক্ট্রিসিটি এবং নানা ধরনের সার্ভিস বা পরিষেবা ক্ষেত্রে মাইক্রো, স্মল ও মিডিয়াম মিলিয়ে মোট সংস্থা ৬ কোটি ৩৩ লক্ষ ৮৮ হাজার। ব্যাপক লিঙ্গবৈষম্যের জন্য ভারতের দুর্নাম সুবিদিত। সেখানেও দেখা যাচ্ছে, এমএসএমই-র মালিকানায় মহিলাদের উপস্থিতি ২০.৩৭ শতাংশ। ভোট এলেই সব সরকার শিল্পায়নের ধুয়ো তুলে বাজার মাত করে। এ আমাদের কয়েক দশকের অভিজ্ঞতা। কিন্তু আমরা পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ করেছি যে, গর্জনের ছিটেফোঁটাও বর্ষণ হয় না। জুমলাবাজি জলের মতো পরিষ্কার হয়ে যাওয়ায়, ইদানীং বৃহৎ শিল্পস্থাপনকে আর শিল্পায়নের সমার্থক বলে ধরা হচ্ছে না। কী কেন্দ্র, কী রাজ্যে রাজ্যে সরকারগুলি জোর দিচ্ছে এমএসএমই ইউনিট বৃদ্ধির উপর। তারা বলছে, কৃষি থেকে শিল্প-অর্থনীতিতে উত্তরণের এটাই সর্বোত্তম পথ। দেরিতে হলেও এই উপলব্ধির বাস্তবতা ১৩৫ কোটি মানুষের অর্থনীতির পক্ষে স্বস্তিদায়ক।
তবে সবচেয়ে অস্বস্তির কারণ উদ্ভূত করোনা পরিস্থিতি। টানা দু’মাসের লকডাউনে এই শিল্প-বাণিজ্য ক্ষেত্র ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটাকে যে-কোনও উপায়ে বাঁচানোই রাষ্ট্রের মন্ত্র হওয়া উচিত। মোদি সরকার অবশ্য তাদের জন্য সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকার ঋণদান প্রকল্প ঘোষণা করে দাবি করছে যে, এর মাধ্যমেই পুনর্জীবন লাভ করবে এমএসএমই। যদিও কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস প্রভৃতি বিরোধী দলগুলির বক্তব্য, সরকার মানুষকে বোকা বানাতে চাইছে। প্রথম সারির একাধিক অর্থনীতিবিদেরও মত তাই। সত্যিই তো, ঋণগ্রহণের একটি পরিস্থিতি থাকে। ক’টি এমএসএমই ইউনিটের পরিস্থিতি আজ ঋণগ্রহণের পক্ষে অনুকূল? সে তো কঠিন গবেষণার বিষয়। সরকারের এই তথাকথিত স্টিমুলাস পেয়ে এমএসএমই নতুন করে ঋণের জালে ফাঁসবে না তো? এখন নতুন করে ফাঁসলে মৃত্যু ভিন্ন আর কেউই শিয়রে অপেক্ষা করবে না। বণিকসভা সিআইআইয়ের একটি সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, এমএসএমই-র মোট পাওনার ৩২ শতাংশের বেশি আটকে আছে সরকারের ঘরে—বিভিন্ন সরকারি বিভাগ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির কাছে। বিক্ষিপ্তভাবে ৪৫০টি সংস্থার উপর সমীক্ষায় ধরা পড়েছে: তাদের মোট প্রাপ্যের পরিমাণ ১৮১৯ কোটি টাকা। তার মধ্যে ১৭০৯ কোটি টাকা তারা পাবে সরকারের কাছে! সার্বিক চিত্রটি আরও কত খারাপ সম্ভবত কেউ জানেন না। সরকারের উচিত, এমএসএমই’র সমস্ত ন্যায্য পাওনা অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়া। ঋণ, খয়রাতির প্রসঙ্গ তার পরে। তাদের জিএসটি মকুবের দাবিটিও আজকের অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে অন্যায্য নয়। মোদি সরকার সেটাও বিবেচনা করুক সহানুভূতির সঙ্গে। দেশের স্বার্থেই এটি জরুরি। কারণ এমএসএমই মাথা তুলতে ব্যর্থ হওয়ার সরলার্থ হল, দেশের অর্থনীতিরও অপমৃত্যু।