কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
আমাদের সমাজে জনপ্রিয় অন্য একটি ধারণা হল—যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ! প্রবাদটির নিহিতার্থ হল—ক্ষমতা হাতে পেলে সকলেই পাল্টে যায়, ভীষণ খারাপ হয়ে যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রশ্নেও যে পৃথক, অনন্যসাধারণ—তার প্রমাণ তিনি রেখেছিলেন রাইটার্সে পা রাখার দিনেই। রাজভবন থেকে হেঁটে রাইটার্সে যাওয়ার পথে ভক্তরা তাঁর নামে জয়ধ্বনি দিয়েছিলেন, পুষ্পবৃষ্টি হয়েছিল তাঁকে ঘিরে। প্রাণপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে একটিবার চোখের দেখা দেখতে রাইটার্সের সামনে মেলার মতো ভিড় জমিয়েছিল বাংলার নানা প্রান্তের মানুষ। মানুষের সেই ভিড় স্থায়ী হয়েছিল প্রায় একমাস! ব্যক্তিগত দাবি অথবা ক্রনিক সমস্যার কথা জানাতেও অনেকে হত্যে দিয়েছেন রাইটার্সের গেটে। তাঁদের কারও কারও সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী দেখা করেছেন, কষ্টের কথা শুনেছেন, যতটা সম্ভব সুরাহা করে দিয়েছেন। একবার এক কিশোর তো তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য মহানগরের রাজপথে তাঁর কনভয় লক্ষ্য করে ছুটেছিল! পথে বিপাকে পড়ে যাওয়া এক বৃদ্ধ দম্পতিকে, তাঁর কনভয় থামিয়ে, বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করার কথা এ-শহর নিশ্চয় ভোলেনি। বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাজারে সারপ্রাইজ ভিজিট তিনি এখনও দেন, মানুষের কষ্টের কথা জেনে চটজলদি ব্যবস্থা নেবেন বলে। সরকারি বৈঠকে প্রয়োজনে অফিসারদের এবং দলীয় বৈঠকে নেতাদের হুঁশিয়ার করা, এমনকী অপ্রিয় পদক্ষেপ করাই তাঁর জনমুখী কাজের বৈশিষ্ট্য। এই করোনা পরিস্থিতিতেও আমরা দেখছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন একেবারে সামনে থেকে, রাস্তায় নেমে এসে।
আর মাত্র দু’দিন দূরে—পূর্ণ হতে চলেছে মমতা বন্দ্যোধ্যায়ের মুখ্যমন্ত্রিত্বের ন’বছর। এই রাজ্যে টানা দু’দশক বিরোধী নেত্রী থাকাকালে তিনি সংসদ সদস্য এবং একাধিকবার কেন্দ্রে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীও ছিলেন। এতগুলি বছর কি যথেষ্ট নয় একজন শাসককে চিনে নেওয়ার পক্ষে? বারবার তার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। স্বভাবতই এই মানুষটি যে এখনও মানুষের স্বার্থেই কাজ করবেন, তা আর আশ্চর্য কী! করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে যখন প্রয়োজন কেন্দ্রীয় সরকারকে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়েছেন, আবার যখন অনিবার্য হয়ে উঠেছে সমালোচনা, সৎ পরামর্শদান—তিনি তাও করেছেন। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের আবেদন নিবেদন ব্যর্থ হলে মানুষের স্বার্থে একাই চলেছে তাঁর রাজ্য প্রশাসন। এই যেমন বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকেদের ফিরিয়ে আনার ট্রেনভাড়া তাঁর সরকারই দেবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সীমিত আর্থিক ক্ষমতার মধ্যেও প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। একইসঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে আগত প্রবাসীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার এবং প্রয়োজনে চিকিৎসার—এরাজ্যে বসবাসকারী মানুষের স্বাস্থ্যরক্ষার কথা মাথায় রেখে। সব মিলিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজও মানবিক।