পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
করোনা মোকাবিলায় প্রতিষেধক এখনও অমিল। তাই এই মুহূর্তে মারণ ভাইরাসের ছোবল থেকে মুক্তির একমাত্র রাস্তা লকডাউন। সকলেই একবাক্যে তা মানছেন। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, এই লকডাউনের দিনের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। ৪৯ দিন লকডাউনে করোনার ভয়াবহতা ঠেকানো সম্ভব। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লিতে সর্বদলীয় বৈঠকে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির ঈঙ্গিত দিয়েছেন। এখনও চূড়ান্ত ঘোষণা হয়নি। সকলেই মনে করছেন, ১১ এপ্রিল দেশের সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী এব্যাপারে তাঁর সিদ্ধান্ত জানাবেন।
লকডাউনের মেয়াদ বাড়লে সাধারণ খেটে খাওয়া ও মধ্যবিত্ত মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে, বাড়বে বেকারত্ব। এই অবস্থায় হাত পা ছড়িয়ে হা হুতাশ না করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুঁজছেন সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসার রাস্তা। লকডাউনের মেয়াদ বাড়লে কোন কোন পরিষেবাগুলো যুক্ত করা হবে, কোন কোন পরিষেবায় ছাড় দেওয়া হবে এবং কোন কোন পরিষেবাকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে, তার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিবকে মাথায় রেখে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করেছেন। সামগ্রিক আর্থিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অর্থসচিবকে মাথায় রেখে ‘টাস্ক ফোর্স অন ফিনান্স’ গঠন করেছেন। লকডাউনের মধ্যে রাজ্যের মানুষ যাতে জরুরি পরিষেবা এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সুষ্ঠুভাবে পান, তার জন্য রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবকে মাথায় রেখে গঠন করেছেন আরও একটি পৃথক টাস্ক ফোর্স।
এখানেই থেমে থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি করোনার পাশাপাশি আর্থিক সঙ্কট মোকাবিলার জন্য একটি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতী এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠন করেছেন গ্লোবাল অ্যাডভাইসারি বোর্ড। যে বোর্ডে খ্যাতনামা চিকিৎসকরা ছাড়াও রয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। রয়েছেন অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী বাঙালি অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওয়াকিবহাল মহলের আশা, এই বোর্ড মারণ ভাইরাস মোকাবিলায় যেমন কার্যকরী ভূমিকা নেবে, তেমনি গভীর সঙ্কটে তলিয়ে যেতে বসা অর্থনীতিকেও তুলে আনার দিশা দেখাবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, লকডাউন যদি বাড়ানোও হয়, তাহলেও আমরা যেন বিষয়টাকে মানবিকতার সঙ্গে দেখি। কড়াকড়ি করা হবে, কিন্তু বাড়াবাড়ি যেন না হয়। অর্থাৎ মহামারি ঠেকানোর স্বার্থে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হলেও তা মানবিকভাবে কার্যকর করার উপরেই তিনি জোর দিয়েছেন।
লকডাউনের মধ্যে ফুলবাজার চালুর মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে বিরোধীদের অনেকেই কটাক্ষ করছেন। অনেকেই বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী লকডাউন ভাঙার ক্ষেত্রে মদত দিচ্ছেন। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত যে হাজার হাজার ফুলচাষির মুখে হাসি ফুটিয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। লকডাউনের ফলে ফুলচাষিরা চরম সঙ্কটে পড়েছেন। তাঁরা গাছ থেকে ফুল তুলে মাঠেই ফেলে দিচ্ছিলেন। বাজার খোলায় তাঁরা অন্তত ঘাম ঝরানো ফসল অল্প হলেও বিক্রির সুযোগ পাচ্ছেন। একইভাবে অল্প সময়ের জন্য হলেও মিষ্টির দোকান খোলার সিদ্ধান্তকে অনেকেই সমালোচনা করেছেন। এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে যতই সমালোচনা হোক না কেন, রাজ্যের হাজার হাজার গোপালকের কাছে সরকারের মানবিক মুখটাই ফুটে উঠেছে। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলছেন, কড়াকড়ি দরকার, কিন্তু হতে হবে মানবিক।