বিদ্যার্থীরা পড়াশোনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাবে। নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়বে। অতিরিক্ত চিন্তার জন্য উচ্চ ... বিশদ
ইতালির দিকে যদি আমরা তাকাই, স্পেনের দিকে যদি তাকাই। কিংবা আমেরিকা, ফ্রান্স, বেলজিয়াম বা ব্রিটেন! আমরা দেখতে পাই কী বিবর্ণ সব চিত্র। অসহায়ভাবে, বিনা প্রতিরোধে মানুষ মরে যাচ্ছে। কোনও চিকিৎসা নেই। খাড়া ঊর্ধ্বমুখী মৃত্যু ও আক্রান্তের রেখচিত্র। যে ট্রাম্প একেবারে গোড়ার দিকে লকডাউনের প্রস্তাব ‘ফুঃ’ করে উড়িয়ে দিয়েছিলেন, তিনিও আজ ভয়ে কম্পমান। পৃথিবীর স্বঘোষিত এক নম্বর শক্তিমান দেশের শক্তির অহঙ্কার আজ ধুলোয় লুটোপুটি খাচ্ছে। এখন আমেরিকায় মৃত্যুর হার ঘণ্টায় ১৪ জন। ইতালির মতোই এক পরিস্থিতির দিকে এগচ্ছে আমেরিকা। প্রাথমিক পর্যায়ে করোনাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করার খেসারত দিয়ে আজ আমেরিকা হাঁটছে ইতালির পথেই। আমেরিকায় প্রতি ৪ মিনিট ৩ সেকেন্ডে একজন করে মানুষ ঢলে পড়ছেন মৃত্যুর কোলে। এখন তাকে এভাবেই ভুলের প্রয়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে।
পাশাপাশি, ইরান, পাকিস্তানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। আবার নতুন করে তা ছড়িয়ে পড়ছে চীনের হুবেই, উহান ও হেনান প্রদেশে। ওদিকে রাশিয়ার অবস্থাও ভালো নয়। ঠিক এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে বিশ্বের সামগ্রিক পরিস্থিতি দেখে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। আমরা কিন্তু দেরি করে ফেলিনি। আমরা কিন্তু সময়মতোই কোমর বেঁধে মোকাবিলায় নেমেছি। এখন দরকার, শুধু দেশের মানুষের সহযোগিতা। তাঁরা যদি সরকার এবং প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলেন, তাহলে কিন্তু আমাদের দেশ আর একটা ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন কিংবা আমেরিকা হবে না।
এখনও বাজারে গেলে দেখা যাবে, লাইন দিয়ে বাজার, দোকানপাট চলছে। রাস্তায় রাস্তায় বাইক, সাইকেল দিব্যি চলছে। স্রেফ ‘একটু ঘুরে দেখে আসি’ মানসিকতা নিয়েই তাঁরা বেরিয়ে পড়ছেন। কোনও কোনও ক্লাবে তাস-ক্যারমও চলছে। বোঝাই যাচ্ছে, অনেকেরই কোনও হেলদোল নেই। অনেকের মুখে মাস্ক নেই। দিব্যি আগের মতোই চলছে যেন। এরাই কিন্তু আমাদের রাজ্যে করোনার মৃত্যুবীজকে ছড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষকে সচেতন করতে পথে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নিজে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মানুষকে সচেতন হতে উদ্বুদ্ধ করছেন, কীভাবে সুরক্ষা পদ্ধতি মেনে চলবেন, তা তিনি বাজারে গিয়ে মানুষকে শেখাচ্ছেন। একইসঙ্গে ভবঘুরে ও দরিদ্র মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিয়ে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়ে করোনাকে ঠেকানোর চেষ্টা করে চলেছে। গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী তাঁর রেডিও বার্তা ‘মন কি বাত’-এ মানুষকে সচেতন করতে প্রয়াসী হয়েছেন। বলেছেন, মানবিকতা বজায় রেখে দূরত্ব রক্ষা করতে। এখনও এসব কানে না গেলে তার পরিণতি মারাত্মক হতে বাধ্য। পশ্চিমী দেশগুলির অবস্থা দেখে আমাদের শিক্ষা নিতেই হবে। যে রোগের ওষুধ নেই, তাকে কাছে আসতে না দেওয়াই একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি। তাই লকডাউনই সেরা চিকিৎসা।