ব্যবসায়ে যুক্ত হলে এই মুহূর্তে খুব একটা ভালো যাবে না। প্রেম প্রণয়ে বাধা। কারও সাথে ... বিশদ
চিকিৎসকের পরামর্শ অগ্রাহ্য করে ওই তরুণী গৃহবধূ কেবল তাঁর নিজেরই বিপদ ডেকে আনেননি। বিপদে পড়েছে ৯ মাসের ও তিন বছরের দুই শিশু সহ পাঁচজন। তাদের মধ্যে একজন ১১ বছরের বালকও রয়েছে। ওই পরিবারের পাঁচ সদস্যের করোনার রিপোর্ট পজেটিভ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা এক ধাক্কায় দেড়গুণ হয়ে গিয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যাটা ছিল ১০। রাতারাতি বেড়ে হয়ে গেল ১৫।
মাত্র ৯ মাসের ও তিন বছরের শিশুর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরে আতঙ্কে উঠেছে গোটা রাজ্য। যাঁরা এই খবরটা জানতে পারছেন তাঁরাই হা হুতাশ করছেন। শিশুদের কষ্টের কথা ভেবে সকলেরই মন খারাপ। একই সঙ্গে দুষছে ওই তরুণী এবং তাঁর পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের। সকলের মুখে একটাই কথা, এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজটা করলেন কী করে?
অভাব সচেতনতার। অভাব শিক্ষার। দু’ চারটে পুঁথি পড়লেই শিক্ষিত হওয়া যায় না। সামাজিক শিক্ষাও দরকার হয়। এই মুহূর্তে নিজেকে বিপদ থেকে রক্ষা করার অর্থ যে রাজ্য ও দেশকে সুরক্ষিত রাখা, এই বোধটাই তৈরি হয়নি। করোনার ভয়াবহতা এবং বিপদ উপলব্ধি করতে না পারার মাশুল গুনতে হচ্ছে ওই পরিবারটিকে। তিন তিনটি শিশু ও নাবালককে। যাদের বিপদ সম্পর্কে কোনও ধারণাই তৈরি হয়নি। কোনও দোষ না করেও পড়ে গেল কঠিন শাস্তির মুখে। বাড়ির বড়দের অবিবেচক কাজের জন্য আজ তাদের জীবন বিপন্ন।
আমরা একটা কথা প্রায়ই বলে থাকি, অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে। কিন্তু, তা যে কেবল মুখের কথা, মনের কথা নয়, সেটা আমরা বারেবারে প্রমাণ করে দিচ্ছি। স্বরাষ্ট্র দপ্তরের উচ্চ পদস্থ আমলার পরিবারের অবিবেচক কাজ নিয়ে গোটা রাজ্যে শোরগোল পড়ে যাওয়ার পরেও ফের প্রায় একই ধরনের ঘটনা ঘটল। সেই বিলেত ফেরত মানুষের সান্নিধ্য, পার্টি এবং করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারণ ভাইরাস ছড়ানোর ঘটনা।
একটা কথা বলা বোধ হয় বাড়াবাড়ি হবে না, চিকিৎসকের পরামর্শ অগ্রাহ্য করার প্রবণতা তথাকথিত শিক্ষিতদের মধ্যেই বেশি দেখা যাচ্ছে। পুঁথি পণ্ডিতদের অনেকের মধ্যেই কেমন যেন একটা ‘ডোন্ট কেয়ার’ মনোভাব। আর সেটা করতে গিয়ে নিজেরা ডুবছেন, অন্যদেরও ডোবাচ্ছেন। কিছুতেই সম্বিত ফিরছে না।
সব চেয়ে বড় কথা, বিশ্বের বড় বড় বিজ্ঞানীরা যে ভাইরাসের চরিত্র, গতিপ্রকৃতির নাগাল পাচ্ছেন না, তাকে মামুলি ফ্লু বলে অনেকেই পাণ্ডিত্য জাহির করার চেষ্টা করছেন। ভুল হচ্ছে। নিজেদের জাহির করার অনেক সময় পাওয়া যাবে। কিন্তু, এটা সেই সময় নয়। এখন আমাদের সকলকে হতে হবে শৃঙ্খলাপরায়ণ সৈনিক। মেনে চলতে হবে চিকিৎসক এবং প্রশাসনের পরামর্শ। তবেই আমরা সুস্থ থাকব এবং রাখতে পারব।