গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
প্রশ্ন একটাই, এই বহু প্রচারিত এবং আড়ম্বরপূর্ণ সফরে কী চান ট্রাম্প? এখনও পর্যন্ত যা খবর, আমেরিকার কাছ থেকে ২৪টি এমএইচ-৬০ রোমিও সি-হক মাল্টি-রোল হেলিকপ্টার কিনছে ভারত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফরে যেসব চুক্তি সই হতে চলেছে, তার মধ্যে এটিই এখনও পর্যন্ত সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। এদেশের নৌসেনার জন্য মার্কিন সংস্থা লকহিড মার্টিনের তৈরি এই ২৪টি কপ্টারের জন্য ভারতকে ২৬০ কোটি ডলার গুনতে হবে। ভারতে স্বাধীনভাবে কৃষিজাত পণ্য এবং চিকিৎসা যন্ত্রাংশের ব্যবসা করতে চায় মার্কিন সরকার। ডিজিটাল পণ্য-সহ তাদের একাধিক পণ্য থেকে ভারত শুল্ক প্রত্যাহার করুক, এমনটাও দাবি আমেরিকার। অতীতেও এ নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ট্রাম্প। মার্কিন বাজারে ভারত বিশেষ সুযোগ সুবিধা ভোগ করলেও, ভারতীয় বাজারে মার্কিন পণ্যকে শুল্কছাড় দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি।
২০১৮ সাল থেকে ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে, কিন্তু শুল্ক, ভরতুকি, বৌদ্ধিক সম্পদ, ডেটা সুরক্ষা এবং কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্যের অধিকার নিয়ে মৌলিক মতানৈক্যের জেরে তা শ্লথ হয়ে পড়ে। মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদের দপ্তরের কাছে ডিজিটাল বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রথম বাধা বলে মনে হয়েছে, দেশের বাইরে বিভিন্ন কোম্পানির কাছে নাগরিকদের ডেটা পাঠানোর ব্যাপারে কড়াকড়ি। আমেরিকা চায় ভারত পেটেন্টের নিয়মে কড়াকড়ি করুক এবং ভারতে বিনিয়োগের জন্য মার্কিন সংস্থাগুলি যে সমস্যার মুখোমুখি হয়, সেগুলি দূর করুক। এ ব্যাপারে তিনি মার্কিন মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারক সংস্থা হার্লে ডেভিডসনের উদাহরণ দিয়েছেন। ২০১৮ সালে এই বাইকের শুল্ক ভারত ৫০ শতাংশ কমিয়ে দিলেও ট্রাম্পের মতে এখনও তা গ্রহণযোগ্য নয়। মনে করা হয়, এই বিশাল ইঞ্জিনের মোটরসাইকেল ভারতীয় ক্রেতাদের আয়ত্তের বাইরে থেকে যাওয়ার অন্যতম কারণ হল এর শুল্ক। আর তাই হার্লে এখনও ভারতীয় বাজারের কোনও বড় অংশ ধরতেই পারেনি। একইসঙ্গে চিকিৎসা যন্ত্রের খোলা বাজার চায় আমেরিকা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মুহূর্তে ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছনো আরও কঠিন হচ্ছে আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করায়। ভোট মাত্র ন’মাস দূরে হওয়ায় মার্কিন শিল্পপতি, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মন জয়ে মরিয়া ট্রাম্প। ভারতকে কিছু দেওয়ার পরিবর্তে তাই নিজের দেশের জন্য সফর থেকে কিছু নিয়ে যাওয়ার বাড়তি তাগিদ রয়েছে তাঁর। উল্টো দিকে, ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতির জেরে রাজস্বে ভাটা আর স্বদেশি লবির চাপে ভারতের বাজারের দরজা এখন হাট করা কঠিন দিল্লির পক্ষেও। তাই ট্রাম্পের ভারত সফরের প্রেক্ষাপটকে খুব একটা মসৃণ দেখাচ্ছে না এখনও।