বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে আজকের দিনটা শুভ। কর্মক্ষেত্রে আজ শুভ। শরীর-স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। লটারি, শেয়ার ... বিশদ
নামজাদা বহু স্কুলের সামনে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, সার বেঁধে পুলকার দাঁড়িয়ে রয়েছে... যাদের নম্বর প্লেট সাদা রঙের। অর্থাৎ ওই গাড়িগুলি বাণিজ্যিক স্বার্থে ব্যবহারযোগ্য নয়। তেমনটা হলে নম্বর প্লেট হলুদ রঙের হতো। এরপর কাগজপত্র দেখলে একের পর এক বেড়াল ঝুলি থেকে বেরতে শুরু করবে। কারও হয়তো ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই। কোনও গাড়ির পলিউশন ফেল। তো কোনও গাড়ি ইনসিওরেন্স ছাড়াই স্কুল পড়ুয়াদের আনা-নেওয়া করছে। যেখানে আসন রয়েছে হয়তো আট জনের, সেই গাড়িতেই গাদাগাদি করে তোলা হচ্ছে ১২টি শিশুকে। অভিভাবকরাও অধিকাংশ ক্ষেত্রে নির্বিকার। পুলকার চালকদের হাতে সন্তানদের ছেড়ে দিয়ে তাঁদের অনেকেও নিশ্চিন্ত থাকার ভান করছেন। আর অভিযোগ, ওই গাড়িগুলিও বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তরের একাংশকে ঘুষ দিয়ে বুক ফুলিয়ে বেআইনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। চালককে প্রশ্ন করলে তিনি বলছেন, আমি কিছু জানি না। মালিককে জিজ্ঞেস করবেন। আর মালিকের টিকিটিও পাওয়া যায় না অনেকসময়।
প্রায় ২৫ বছর আগে অভিনেতা কমল হাসানের একটি ছবি মুক্তি পেয়েছিল। ‘ইন্ডিয়ান’। তাতে দেখানো হয়েছিল, কীভাবে প্রশাসনের একাংশ ঘুষের লোভে সাধারণ মানুষকে অনিশ্চয়তার অতলে ঠেলে দিচ্ছে। চাকরির জন্য ঘুষ, রেশনের জন্য টাকা। এমনকী শিশুদের বাসের অবস্থা শোচনীয় হওয়া সত্ত্বেও পর্যবেক্ষক শুধু টাকার লোভে ফিটনেস সার্টিফিকেট লিখে দিচ্ছেন। আর সেই বাসই শেষমেশ পড়ছে দুর্ঘটনার কবলে। প্রাণ হারাচ্ছে বহু শিশু। এই দায় তাহলে কার? শুধুই কি প্রশাসনের ছাতার তলায় থাকা ওই ব্যক্তির? না। এর নেপথ্যে রয়েছে আমাদের সমাজের দীন চরিত্রটাও। যেখানে আদর্শ, মানবিকতা, সততার থেকেও বেশি গুরুত্ব পায় গান্ধীজির ছবি আঁকা কয়েকটা কাগজের টুকরো। শামিম আখতারের মতো বহু মানুষ বিপদের মুখে ঠেলে দেয় আগামী প্রজন্মকে... যারা এখনও ঠিকমতো বুঝতে শেখেনি দুর্ঘটনা কাকে বলে। যারা জানে না প্রাণ সংশয় হলে কীভাবে তার থেকে বেরিয়ে আসতে হয়...।
তাই ঘুরে দাঁড়াতে হবে সমাজকে। মানবিকতার খাতিরে। সন্তানের খাতিরে। তবেই বদল আসবে প্রশাসনের চরিত্রে। হয়তো একাংশই এই ধরনের গর্হিত অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু এক বালতি দুধ নষ্ট করতে এক ফোঁটা চোনাই যথেষ্ট। উপড়ে ফেলতে হবে সেই অংশটাকেই। তবেই সমস্যার শিকড় পর্যন্ত পৌঁছনো যাবে। তাহলে আর ঋষভদের এভাবে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে একেবারে অকালে চলে যেতে হবে না।