রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
হিসেবটি রাখে ইউনিসেফ। প্রতি বছর কোন দেশে কত শিশু ওই দিনটিতে জন্ম নিচ্ছে, সেই হিসেব। মনে করা হয়, বছরের প্রথম দিন নবজাতকের জন্য অত্যন্ত পবিত্র। এই দিন জন্মগ্রহণ করলে সেই শিশু সৌভাগ্যের প্রতীক হয়। ভারতে এমনিতেই এখন বহু ডাক্তার নর্মাল ডেলিভারিতে খুব একটা বিশ্বাস করেন না। সিজারিয়ান শিশুদের যুগে সাধারণত মায়েরাও আর অত ঝঞ্ঝাটে যেতে চান না! তাই এখন ট্রেন্ড হল ‘ডেট ফিক্স’ করা। অর্থাৎ, ডেলিভারির কাছাকাছি সময়ে কোন দিনটা ভালো, তা হিসেব করে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে রাখা। সংস্কার হতে পারে, বা অন্য কিছু। তাতে বাস্তবটা কিন্তু বদলায় না। আর কঠিন বাস্তব প্রশ্নটা হল, আমরা আমাদের এই নবজাতকদের জন্য কী রেখে যাচ্ছি?
গ্রেটা থুনবার্গ নিছক একজন স্কুল কামাই করা মেয়ে হিসেবেই থেকে যেত। যদি না বিশ্ববাসী বুঝত, কেন তার এই ত্যাগ। দাবি তো তার একটাই—এই পৃথিবীকে দূষণমুক্ত, শিশুদের বাসযোগ্য করতে হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সবচেয়ে অপছন্দের মানুষ। কারণ, এই ধনকুবের রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে অর্থনীতি এবং শিল্প প্রাধান্য পায়। দূষণ নয়। গ্রেটা যা বরদাস্ত করতে পারে না। প্রত্যেক দিন শুধু দূষণের কারণে বিশ্বের কত মানুষ প্রাণ হারায়! আর অনাহারে মৃত্যু তো রয়েইছে। মানুষ বাঁচার জন্য বিশ্বের প্রাণশক্তি, অর্থাৎ সবুজ ধ্বংস করে বসতি বানাচ্ছে। চাষের জন্য, পর্যটনের জন্য পাহাড়ের বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হচ্ছে। এরপরও ভারতের মতো দেশে অর্থনীতির এই বেহাল দশা! এই দায় কার?
শুধু রাষ্ট্রনেতাদের নয়, এই দায় সবার। আমরা কি সচেতন? এই প্রশ্ন কেন আমরা নিজেদের করতে পারি না? সচেতনতা শুধু পরিবেশ নিয়ে নয়। জনবিস্ফোরণ নিয়েও। ভারতের সবচেয়ে বড় সমস্যা কী? উত্তর হল, সচেতনতার অভাব। ১০ জনকে সচেতন করা যতটা সহজ, সেই পরিশ্রমে ১০০ মানুষকে সচেতন করা যায় না। আর এক কোটি তো নয়ই! জনসংখ্যা যত বাড়বে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমবে শিক্ষার হার। বাড়বে অনাহার, কর্মহীনতা। খালি পেটে সচেতনতার শিক্ষা সম্ভব নয়। তাই এই পৃথিবীকে যদি সত্যিই শিশুর বাসযোগ্য করতে হয়, জোর দিতে হবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে। ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে কোনও শিশু অপুষ্টিতে না ভোগে। বছরের প্রথম দিনে নবজাতকের জন্ম দেওয়ার নিরিখে প্রথম হওয়াকে গৌরবের ভাবা ঠিক নয়। ভারতের মস্তক তখনই উন্নীত হবে, যেদিন এদেশে কর্মহীনতা থাকবে না, অপরাধ নির্মূল হবে শিকড়েই, আর মানুষ বাস্তবিক সচেতন হবে।
অপেক্ষা সেই দিনটার।