বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
সংবাদে প্রকাশ, রাজধানী-শতাব্দী-দুরন্তের মতো উচ্চকোটির যাত্রীদের ট্রেন থেকে শুরু করে সাধারণ দূরপাল্লার ট্রেন—সবেতেই খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে। রাজধানী-দুরন্ত-শতাব্দীর এগজিকিউটিভ ক্লাসে এতদিন প্রাতঃরাশের মূল্য ছিল ৯০ টাকা, তা বাড়িয়ে ১৪০ টাকা করা হয়েছে। দুপুর বা রাতের খাবারের দাম ১৪০ টাকা থেকে বেড়ে ২৪৫ টাকা হয়েছে। সন্ধ্যার চা-জলখাবারের মূল্য ৭০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪০ টাকা করা হয়েছে। এ সম্পর্কে রেলকর্তাদের বক্তব্য, জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও খাবারের দাম দীর্ঘদিন বাড়ানো হয়নি। তাই এবার দাম কিছুটা বাড়ানো হল।
রেল বোর্ডের নয়া নির্দেশিকায়, পদ অনুযায়ী খাবার বিক্রির ব্যবস্থায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে। যেমন, এতদিন রেলের খাবারে আমিষ খাবার বলতে মূলত ডিম দেওয়া হতো। কেউ চিকেন খেতে চাইলে, তাঁকে আ-লা-কার্টে হিসেবে আলাদা দাম দিয়ে কিনতে হতো। আগে আমিষ থালির দাম ছিল ৫৫ টাকা। এখন নন-ভেজ মিল হিসেবে ডিমের পাশাপাশি চিকেন কারি রাখা হয়েছে। ডিম-ভাতের দাম বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯০ টাকা। আর, চিকেন মিল-এর দাম রাখা হয়েছে ১৩০ টাকা।
ট্রেনের খাবারের দাম বৃদ্ধিতে নিশ্চিতভাবেই যাত্রীদের পকেটে বাড়তি চাপ পড়বে। এমনিতেই ট্রেনে খাবারের মান নিয়ে অনেক সময় অভিযোগ করেন যাত্রীরা। তার উপরে খাবারের দাম বৃদ্ধির খবর চাউর হতেই যাত্রীরা চাইছেন, এবার খাবারের মানকে পাখির চোখ করুক রেল। খাবার তৈরি থেকে শুরু করে ট্রেনে পরিবেশন, গোটা প্রক্রিয়ায় কড়া নজরদারির দাবি তুলেছেন যাত্রীরা। রেলকর্তারা অবশ্য এই প্রসঙ্গে ইতিবাচক কথাই শোনাচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য, রেলের খাবারের মান বাড়াতে গত কয়েক বছর ধরেই নানা কর্মকাণ্ড চলছে। বিশেষত, নতুন ক্যাটারিং পলিসি রূপায়ণে খাবারের মান উন্নত হয়েছে। এই ব্যাপারে আগামী দিনেও নজরদারি রাখা হবে। খাবার নিয়ে অভিযোগ প্রমাণ হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
খাবারের মানের পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে বেশি দাম নেওয়ারও অভিযোগ তোলেন যাত্রীরা। বহু ক্ষেত্রেই ঠিকাদারি সংস্থাগুলি খাবার সরবরাহ করলেও উপযুক্ত রসিদ দেওয়া হতো না। ঠান্ডা বা বাসি-পচা খাবার সংক্রান্ত অভিযোগ লিপিবদ্ধ করার খাতা দেওয়া হতো না। কামরার বাথরুমের ধারে, বেসিনের পাশে খাবার রাখার জায়গা বেছে নেওয়া নিয়েও কিছুদিন আগে অভিযোগ উঠেছিল। রেলকর্তারা বলছেন, ইতিমধ্যেই খাবারে ‘বার কোড’ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট খাবারের নানা তথ্য থেকে শুরু করে ‘রান্নাঘর’-এর ছবিও চাইলে যাত্রীরা দেখতে পাচ্ছেন। সমস্যা হচ্ছে, ঘোষণা অনেক কিছুই হয়, যাত্রী সুরক্ষা নিয়েও রেল কর্তৃপক্ষ বহু কথা বলেছে, কিন্তু বাস্তব পরিপ্রেক্ষিতে তার অধিকাংশই চলন্ত ট্রেনে দেখা যায় না। এর দায় শুধু রেলের নয়, আমাদেরও সকলের। কেননা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থেকে ট্রেনের কামরাকে নিজের ঘরের মর্যাদা দিতে আমরাও পারিনি। চলার পথে সহযোগিতা, আন্তরিকতা ও অধিকারবোধ সম্পর্কে যাত্রীরাও তেমন একটা সচেতন নন। ফলে, রেলের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি আমাদেরও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি। বাজারহাটে দামের যা অবস্থা, তাতে হয়তো দাম বাড়ানো ছাড়া রেলের কোনও গত্যন্তর নেই, কিন্তু, সেই খাবার যেন মানুষের মুখে দেওয়ার মতো হয়, তাও সুনিশ্চিত করা জরুরি কর্তৃপক্ষের।