ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহারই যেখানে ঠেকানো যাচ্ছে না, সেখানে দোকান-ফেরত জিনিস ভর্তি ব্যাগই বা কীভাবে বন্ধ করা যাবে? প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ কার্যকর করতেই হবে। তাই আপাতত মাথায় হাত পড়েছে মন্ত্রকগুলির। বিশেষত খাদ্যমন্ত্রক। প্রথমেই যে বন্ধ করতে হবে প্লাস্টিকের বোতল! কিন্তু প্লাস্টিকের বোতলের বদলে কী? সেটাও যে লাখ টাকার প্রশ্ন। সেই বিকল্প খুঁজতে হিমশিম খাচ্ছে খাদ্যমন্ত্রক। প্রস্তুতকারক সংস্থাদের বৈঠকে ডাকা হচ্ছে। এ বিষয়ে গবেষণার এযাবৎ রিপোর্টও সংগ্রহ করতে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারি দপ্তরগুলির মধ্যে। শোনা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসগুলিতে নাকি এখন থেকে আর প্লাস্টিকের বোতলে জল খাওয়া হবে না। অন্তত এমনই একটি নির্দেশিকা জারি করার কথা ভাবা হচ্ছে। কর্মীরা বাড়ি থেকে বোতল নিয়ে আসবেন। আর যাঁরা আনবেন না, তাঁদের জন্য কাগজের গ্লাস। এভাবে যদি প্লাস্টিকের বোতলের ব্যবহার কমানো যায়! কিন্তু কতজন ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসে কাজ করেন? তার থেকে অনেক বেশি সংখ্যক ভারতবাসী ওই সব দপ্তরের বাইরে আছেন। তাঁদের জন্য কীভাবে নির্দেশিকা জারি হবে? কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ হর্ষ বর্ধন না হয় তাঁর মন্ত্রকে প্লাস্টিকের বদলে কাচের গ্লাসে জল খাওয়া অভ্যাস করাচ্ছেন। সাধারণ মানুষের কী হবে?
আসল কথাটা হল, একটি নির্দেশিকা জারি করে এত বড় অভিযান সফল করা মোটেই সম্ভব নয়। বা প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানও এক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। হিমাচল প্রদেশে তো বহু বছর ধরেই প্লাস্টিক নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও হিমাচলের পাহাড়ের কোলে আজও প্লাস্টিক বর্জ্য মেলে কীভাবে? কারণটা হল পর্যটন। বাইরের রাজ্য বা দেশ থেকে ঘুরতে যাওয়া লোকজন পরিবেশকে চিতায় তুলে সেই সব এলাকায় প্লাস্টিক ফেলে চলে আসছেন। সেই দায় কে নেবে? সবার আগে মানুষকে সচেতন হতে হবে। মানবজগতের যে পরিমাণ ক্ষতি প্লাস্টিক করে চলেছে, সে সম্পর্কে অবগত হওয়া সত্ত্বেও যে মানুষের হেলদোল নেই! মানব সমাজ নিজেই নিজের কবর খুঁড়ছে। দোকানে ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার চল উঠে গিয়েছে। বাজার করতে গিয়েও আমরা এখন প্লাস্টিকের ব্যাগের খোঁজ করছি। এর থেকে দুর্ভাগ্যজনক আর কীই বা আছে?
তবে দেশবাসীকে যদি সচেতন না করা যায়, তার বিকল্প কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে নরেন্দ্র মোদি সরকারকে। বন্ধ করে দিতে হবে এই ধরনের প্লাস্টিক প্রস্তুতকারী কারখানা। অভিযান চালাতে হবে দফায় দফায়। আচমকা। দোকানে, কারখানায়, বাজারে। যাতে কোনওভাবেই ফাঁক গলে একটিও প্লাস্টিক নোটের মতো ব্যবহার না হতে পারে। তবেই হয়তো বাঁচবে পরিবেশ। বাঁচবে পৃথিবীও।