পেশা ও ব্যবসায় অর্থাগমের যোগটি অনুকূল। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পেতে পারে। ... বিশদ
এতে শুধু ব্রাজিলের মানুষ এবং সংলগ্ন দেশগুলিই উদ্বিগ্ন নয়, প্রমাদ গুনছে সারা পৃথিবী। এমনিতেই ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণের সমস্যায় জর্জরিত পৃথিবী। দূষণ কমাবার জন্য প্রতি বছর আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়। বিশেষ উদ্যোগ নেয় রাষ্ট্রসঙ্ঘও। তার পরেও বিভিন্ন দেশ একে অপরের দিকে অভিযোগের তির তুলে দায় এড়ানোর প্রতিযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণের থেকে বাস্তবিক অনেক যোজন দূরে অবস্থান করছে আজকের পৃথিবী। ঠিক এমনি সময়ে আমাজন অরণ্যে এই ভয়ঙ্কর দাবানল আমাদের সকলের ফুসফুসের সামনে লালসংকেত ঝুলিয়ে দিল। এই বিপদ শুধু রাষ্ট্রীয় প্রশাসনগুলিকেই বিচলিত করে তোলেনি, ধর্মীয় সংস্থাগুলিকেও নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করেছে। ২৫ আগস্ট ভ্যাটিকানের পোপ ফ্রান্সিস এই বিপদ মোকাবিলায় সারা পৃথিবীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। বলেন, ‘‘পৃথিবীর কল্যাণের জন্য আমাজন বনাঞ্চল টিকিয়ে রাখা জরুরি। এই আগুন নেভাতে সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে।’’ আগুন নেভাতে ব্যর্থ ব্রাজিল প্রশাসনকে তুলোধনা করছেন সব প্রান্তের পরিবেশকর্মীরা। দক্ষিণপন্থী প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারোকে ‘পরিবেশ-বিরোধী’ খেতাব দেওয়ার জন্যও সোচ্চার অনেকে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, মেক্সিকো, চিলি, পেরু, সাইপ্রাস প্রভৃতি দেশে ব্রাজিল দূতাবাসের সামনে প্লাকার্ড হাতে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন বহু পরিবেশকর্মী। সাইপ্রাসে ব্রাজিল কূটনৈতিক মিশনের রেলিংয়ে ঝোলানো একটি ব্যানারে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে—‘‘আমাজন সারা পৃথিবীর সম্পদ, ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতির নয়।’’ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক টুইটবার্তায় বলেছেন—‘‘আমাদের ঘর জ্বলছে!’’ বিষয়টি নিয়ে জি-৭ সম্মেলনে আলোচনারও দাবি রেখেছেন তিনি। আগুন নেভাতে সাহায্য করতে চেয়ে টুইট করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এতটাই ক্ষুব্ধ যে ব্রাজিলসহ দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের হুমকি দিয়েছে।
ব্রাজিল সরকার ব্যাপারটিকে স্বাভাবিক প্রাকৃতিক বিপর্যয় বলে দায় এড়াতে চেয়েছিল। তারা এও দাবি করে বলেছিল যে, এই ব্যাপারে বহির্বিশ্বের নাক গলানোর প্রয়োজন নেই। কিন্তু এমন প্রতিক্রিয়া ব্রাজিলের বিপক্ষেই গিয়েছে। ঘরে-বাইরে প্রবল বিরূপতার মুখে শেষমেশ ব্রাজিল সরকার আগুন নেভাতে সেনা নামিয়েছে। কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়, এই অগ্নিকাণ্ডের যথার্থ কারণ খুঁজে বের করতে এরপর বিশ্বজুড়ে চাপ দেওয়া হোক। এর পিছনে সঙ্কীর্ণ রাজনীতি এবং গৃধ্নু অর্থনীতি থাকলে তাকেও প্রতিহত করার জন্য বিশ্বব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলা জরুরি। কারণ, আমাজন অরণ্যের অবস্থান যে-মাটিতেই হোক না কেন তাতে অধিকার সারা পৃথিবীর—সব মানুষের সব প্রাণীর। আমাজন আমাদের সকলের সম্পদ। আমাজনকে রক্ষা করার অঙ্গীকার আমাদের সরকলের। এই দায়িত্ব অবহেলা আত্মহত্যারই নামান্তর।