বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
ভারতে ভোটের বাকি এখনও তিন দফা। তার মধ্যে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইতে ভারতের এই জয়ের গুরুত্ব বিরাট। স্বভাবতই সাফল্যের ভাগ দাবি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপির দাবি, এই জয় তাদের। অন্যদিকে কংগ্রেসের বক্তব্য, বিজেপির একার পক্ষে এই জয়লাভ সম্ভব ছিল না। কারণ তাদের দুটি ইউপিএ সরকারও টানা দশ বছর এই দাবিতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিরাট লড়াই চালিয়েছিল। এটিকে নস্যাৎ করে দিলে সত্যের অপলাপ হবে।
অবশ্য বাঁদরের পিঠেভাগের সময় এটা নয়। কারণ, ঘোষণাটি রাষ্ট্রসঙ্ঘ করলেও কাজের কাজটা কিন্তু করাতে হবে পাকিস্তানকে দিয়ে। এর চেয়ে কঠিন কাজ আর কিছু আছে কি? রাষ্ট্রসঙ্ঘের এই ঘোষণা অনুযায়ী, মাসুদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে, তাকে নিরস্ত্র রাখতে হবে এবং তার গতিবিধিও সীমাবদ্ধ করতে হবে। মাসুদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার ব্যাপারে শুক্রবার পাকিস্তান সরকার একটি নোটিস জারি করেছে। কিন্তু, সেনাবাহিনী আর আইএসআইয়ের হাতের পুতুল রাষ্ট্র পাকিস্তানের এর মধ্যে আন্তরিকতা কতটুকু আছে সে লাখ টাকার প্রশ্ন। উগ্র মৌলবাদীরা এই পদক্ষেপ সফল করতে দেবে বলেও ভরসা হয় না। তাই আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়াতে সক্রিয় হতে হবে ভারতকে। দাউদ এবং হাফিজের মতো পাকিস্তানের মাটিতে মাসুদকেও যদি মুক্ত বিহঙ্গ রেখে দেওয়ার মতলব করে ইমরানের প্রশাসন, তবে উদ্যোগটি বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়াই গণ্য হবে। পাকিস্তানের সরকার এবং আইন ও বিচারব্যবস্থা বস্তুত সে-দেশের সেনাবাহিনী এবং কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের নজরবন্দি। যতদিন-না পাকিস্তানের সরকার এই বন্দিদশা কাটিয়ে সত্যিকার মানুষের সরকার হয়ে উঠতে পারে ততদিন শান্তিকামী ভারতের প্রত্যাশা পূরণ হওয়ার আশা ক্ষীণ। শুধু অস্ত্রের জোগান বন্ধ করলেই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে দমানো সম্ভব নয়। তারা যে অর্থ দিয়ে অস্ত্র কেনাসহ পরিকাঠামো চাঙ্গা রাখে সেই অর্থ সরবরাহের দিকটিও বন্ধ করে দেওয়ার জন্য একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ রয়েছে, যেটিকে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) বলা হয়। এই উদ্যোগের পাশে কোন দেশ কতটা আন্তরিকতার সঙ্গে রয়েছে তারও একটি তালিকা তৈরি করা হয়। বলা বাহুল্য, এই প্রশ্নে কোনোদিনই পাকিস্তানের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ ছিল না। সম্প্রতি এফএটিএফ পাকিস্তানকে ফের একবার ‘ধূসর’ তালিকাভুক্ত করেছে। এরপরেও যদি আমাদের গুণধর এই প্রতিবেশীটি না-শোধরায়, তবে তাকে ‘কালো’ তালিকাভুক্ত করার সম্ভাবনা থাকছে। সেক্ষেত্রে পাকিস্তান যেসব আন্তর্জাতিক অনুদান পেয়ে থাকে তাও আটকে যেতে পারে। অবশ্য সে-দেশের উগ্র মৌলবাদীরা এ নিয়ে আদৌ ভাবিত নয়। তাদের এক ও একমাত্র লক্ষ্য হিন্দুস্থানের সঙ্গে সবরকম শত্রুতা এবং সেটা ক্রমান্বয়ে বাড়ানো। ইমরান খানের পাকিস্তান এই মনোভাব না-পাল্টালে তার সঙ্গে ভারতের স্বাভাবিক সম্পর্ক ফেরার সুযোগ দুরাশামাত্র। তাই পাকিস্তান নিয়ে এখনও আমরা আগের জায়গাতেই রয়েছি বলে ধরে নিতে হবে।