বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
সংবাদে প্রকাশ, কংগ্রেসের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির খেলায় রাহুল গান্ধী ও সীতারাম ইয়েচুরির হস্তক্ষেপে একটি জট কেটেছে। কিন্তু, বাম শরিক দলগুলির কোটার আসন নিয়ে দড়ি টানাটানির কোনও ফয়সালা না হওয়ায় জোট প্রক্রিয়ার জট নতুন করে পেকে উঠেছে। ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু তাঁর পূর্ব ঘোষণামতো বাম শিবিরের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারেননি বুধবারও। যদিও এ পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে কংগ্রেসকে ১২-১৩টির বেশি আসন দিতে রাজি নয় সিপিএম। এই জট কাটানোর জন্য দু’পক্ষের মধ্যে আরও আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
কিন্তু, কাদের সঙ্গে আলোচনা? এ হল সেই সিপিএম, যাদের নেতাদের একসময় ধরে ধরে জেলে পুরে রেখেছিল কংগ্রেস সরকার। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দলের নেতাদের হাজতবাস করিয়ে নির্মম অত্যাচার করেছিল কংগ্রেস। আবার অন্যদিকে ক্ষমতায় আসার পর শুধুমাত্র কংগ্রেস করার অপরাধে হাত কেটে নেওয়ার মতো জঘন্য অপরাধ করতেও হাত কাঁপেনি সিপিএমের। গান্ধীজির আন্দোলনে টাটা-বিড়লাদের মতো শিল্পপতি সাহায্য করেছিলেন বলে এই সিপিএমের বাপ-ঠাকুরদারা কংগ্রেসকে ধনিক শ্রেণীর স্বার্থে ধনিক শ্রেণীর পার্টি বলে মানুষের মনে সমাজতন্ত্রের আশার আলো দেখিয়েছিল। দেশের গরিব কৃষক-শ্রমিকের চোখে সোভিয়েতের ব্যাটারি লাগানো টর্চ জ্বেলে সাম্যবাদী সমাজব্যবস্থার সূর্য ওঠা দেখিয়েছিল। কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির গায়ে কালি ছেটাতে তাকে বর্ণহিন্দুদের দল বলেও প্রচার করতে পিছপা হয়নি। সেই কংগ্রেসের হাত ধরতে এখন লজ্জা করছে না সিপিএমের।
এটা সেই সিপিএম, যারা রাজীব গান্ধীর ভারতে কম্পিউটার যুগ নিয়ে আসাকে কত না কটূক্তি, কত না বিরোধিতা করেছিল। মানুষের দরজায় দরজায় গিয়ে বলে এসেছে ঘরের ছেলে বেকার হয়ে যাবে। ‘গলি গলি মে শোর হ্যায়, রাজীব গান্ধী চোর হ্যায়’ বলা সীতারাম ইয়েচুরিদের এখন সেই প্রয়াত রাজীবের ছেলের কাছে গিয়েই আশ্রয় চাইতে হচ্ছে। তাও কোথায় না, পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে একদা যা ছিল লাল দুর্গ। পারেননি কমরেডরা। না পারেননি। একসময়ের স্লোগান ছিল না—পার্টিকে চোখের মণির মতো রক্ষা করব। তা হয়নি। আখের গোছাতে আসা বেনো জল ভেসে গিয়েছে মন্দাকিনীর স্রোতে। অতএব, সব শেষে বলা যায় যে, প্রার্থী না হয় আজ-কালকের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে, কিন্তু, নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিয়ে সিপিএমের এই আখের গোছানোর রাজনীতি আর কতদিন চলবে?