বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
গাফিলতির অভিযোগ একেবারে উড়িয়ে দেওয়া সত্যিই যায় না। সেই সবই অবশ্য চাপা পড়ে গিয়েছে বায়ুসেনার পাল্টা আঘাতে। পাক জমিনে আঘাত করে জঙ্গি প্রশিক্ষণকেন্দ্র গুঁড়িয়ে দেওয়ার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব শুধুই বায়ুসেনার। কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে মাত্র। শত্রুর সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে কাজটা করতে হয় সেনাবাহিনীকেই। তাই সেলাম যদি কারও প্রাপ্য হয়, তা দেশের রক্ষাকর্তাদের। রাজনীতিকরা এখানে উপলক্ষ মাত্র। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তারপরই চুরুর জনসভায় দাঁড়িয়ে কী ঘোষণা করলেন? চিন্তা করবেন না, দেশ নিরাপদ হাতে আছে। দেশের মাথা কখনও ঝুঁকতে দেব না। অর্থাৎ, সব কৃতিত্বই বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের। সেনা তথা বায়ুসেনা এই দাবাখেলার ঘুঁটি মাত্র।
নরেন্দ্র মোদির ক্ষেত্রে এখানে সুবিধার বিষয় হল, সামনেই লোকসভা ভোট। নোট বাতিল এবং তারপর জিএসটির মতো প্রিম্যাচিওর সংস্কারের সিদ্ধান্তে আগেই দেশবাসীকে ভুগতে হয়েছে। দেশের অর্থনীতির টেনশন প্রভাব ফেলেছে প্রত্যেক মধ্যবিত্ত তথা নিম্নবিত্তের হেঁশেলে। তার উপর রাফাল দুর্নীতি নিয়ে কংগ্রেস তথা দলের সভাপতি রাহুল গান্ধী যেভাবে টানা নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে গিয়েছেন, তাতে বিস্তর সমস্যা তৈরি হয়েছে বিজেপি শিবিরে। মোদি বিরোধী সেই প্রচার এমন উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছে যে, রাহুল গান্ধী এখন জনসভায় দাঁড়িয়ে চৌকিদার শব্দটি উচ্চারণ করলে আর তাঁকে স্লোগান শেষ করতে হচ্ছে না। জনতাই সমস্বরে চিৎকার করে বলে উঠছেন ‘চোর হ্যায়’। দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে যা সত্যিই উদ্বেগের মতো বিষয়। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগী হয়ে দেশের প্রায় সব আঞ্চলিক নেতাকে এক মঞ্চে নিয়ে আসছেন। ফর্মুলা একটাই, একের বিরুদ্ধে এক। যে যেখানে শক্তিশালী, প্রার্থী সেই দেবে। তারপর হবে মহাজোট।
এমন একটা পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সঙ্গে এই টানাপোড়েনকে বিলক্ষণ কাজে লাগিয়েছে বিজেপি। সবটাই সেই ভোট রাজনীতি। এই মুহূর্তে সর্বত্র একটি বিষয় নিয়েই চর্চা। পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্তে যুদ্ধ পরিস্থিতি। মোদির আপাত সাফল্য হল তিনি প্রচার করতে পারছেন, বায়ুসেনার থেকে তাঁর সরকারের কৃতিত্বটাই বেশি। মানুষ যদি সেটাই বিশ্বাস করেন, তাহলে ভোটযন্ত্রে বিজেপির পক্ষে ইতিবাচক প্রভাব। বিরোধীরাও কিন্তু ছেড়ে দেওয়ার বান্দা নয়। বিরোধী শিবির থেকে সমবেতভাবে একটাই স্লোগান উঠছে, আমরা সেনাবাহিনীর পক্ষে। বায়ুসেনার পক্ষে। দেশ আগে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ বুঝিয়ে দিয়েছেন, শহিদ জওয়ানদের রক্তের যে রাজনীতি নরেন্দ্র মোদি করছেন, তা মেনে নেওয়া যায় না। বিরোধীরা মেনে নেবেও না।
এই আগুনে বিতর্কের উপসংহার একটাই হয়, রাজনীতিটা ভোটের ময়দানে সীমাবদ্ধ থাকলেই ভালো। না হলে জওয়ানদের আত্মত্যাগকে কিন্তু অপমানই করা হবে।