নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আগামী বছরে বিশ্বজুড়ে মন্দা আসতে পারে। সেই আতঙ্কে কাঁপছে প্রায় সব দেশ। আর তাতেই শাপে বর হতে পারে সোনার বাজারে, এমনটাই মনে করছে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল। আগামী বছরে বিশ্বে সোনার বাজার কেমন যাবে, তার জল মাপতে একটি রিপোর্ট পেশ করেছে তারা। সেখানেই দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরে হলুদ ধাতুর বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলেই তারা মনে করছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, আগামী বছর যদি মন্দা আসে, তা হবে স্থানীয়ভাবে। সেক্ষেত্রে বেকারত্ব বাড়বে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড থমকাবে। কিন্তু মুদ্রাস্ফীতি চড়া থাকবে। এক্ষেত্রে সোনা বাজার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বিনিয়োগের জায়গা হিসেবে উঠে আসবে। কারণ, টালমাটাল বাজারে সবসময়ই তুলনামূলক কম ঝুঁকির লগ্নি হিসেবে কাজ করে সোনা। তবে সোনার বাজার কতটা চাঙ্গা হবে, তা নির্ভর করবে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির উপর, বলছে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের রিপোর্ট। তাদের বক্তব্য, বর্তমানে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে লড়াই করতে হরেক পদক্ষেপ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি। তার মধ্যে অন্যতম হল সুদবৃদ্ধির মতো পদক্ষেপ। আগামী বছরও মুদ্রাস্ফীতির আঁচ কমাতে এই লড়াই চালিয়ে যাবে ব্যাঙ্কগুলি। তাই শেয়ার বাজারও অনিশ্চয়তায় ভুগবে। তার সুফল ভোগ করবে সোনা বাজার।
কেন রিপোর্টে এত দৃঢ়ভাবে মনে করা হচ্ছে সোনার ব্যবসা ভালো হবে? তার সপক্ষে কয়েকটি ঐতিহাসিক যুক্তি সামনে এনেছে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল। তারা বলছে, এর আগে যখনও হাল্কা মন্দা অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে এবং সাধারণ মানুষের আয় কমেছে, তখনই সোনার বাজার চাঙ্গা হয়েছে। মুদ্রাস্ফীতির কারণেই মার্কিন ডলার খুব একটা মাথা তুলতে পারবে না। এক্ষেত্রে সোনার বাজার চাঙ্গা হয়, এমনটাই অতীতে লক্ষ করা গিয়েছে। তাছাড়া মনে করা হচ্ছে, আগামী বছর চীনের অর্থনীতি ভালো হবে। সেক্ষেত্রে চীনে সোনার চাহিদা বাড়বে। যেহেতু বিশ্বের বৃহত্তম স্বর্ণক্রেতা চীন, তাই বাজার ভালো হতে বাধ্য। যেহেতু সুদের হার বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি, তাই বন্ডের বাজার ভালো থাকবে। কারণ সেখানে সুদের হার ভালো হবে। কিন্তু ইতিহাস বলছে, চাঙ্গা বন্ড মার্কেট সোনার বাজারকে বড় একটা বেকায়দায় ফেলেনি, বলছে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল।