সন্তানের সাফল্যে গর্ব বোধ। আর্থিক অগ্রগতি হবে। কর্মে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। ঘাড়, মাথায় যন্ত্রণা বৃদ্ধিতে বিব্রত ... বিশদ
ক্যালিফোর্নিয়ার এক চিকিৎসকের সংগ্রহশালায় শোভা পাবে মঙ্গলকোটের বিখ্যাত শোলার তৈরি দশ মাথার রাবণ। এমনকী এখানকার রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শোলাশিল্পী আশিস মালাকারের তৈরি অন্ধ্রপ্রদেশের কলমকারি নকশাও যাচ্ছে ক্যালিফোর্নিয়ার সেই চিকিৎসকের কাছে। এই সময়ে ফের বাংলার কুটিরশিল্প বিদেশের মাটিতে পা দেওয়ায় খুশি শিল্পীমহল।
মঙ্গলকোটের বনকাপাশি গ্রাম শোলাশিল্পের জন্য দেশজুড়ে বিখ্যাত। প্রতি বছর গ্রামের শোলাশিল্পীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বড় বড় প্রতিমা বা মণ্ডপ সাজাতে যান। শোলার বিভিন্ন ধরনের চাঁদমালা, শোলার উপর চুমকি বা জড়ি বসিয়ে প্রতিমার সাজ নিয়ে তাঁরা পাড়ি দেন ভিন রাজ্যেও। আবার শোলার তৈরি নানা শোপিস বিদেশেও পাড়ি দেয়। তবে করোনার আবহের মন্দায় রুজি টানে শিল্পীদের অনেকেই পেশা ছেড়ে কেউ অটো চালাচ্ছেন, কেউ কৃষিকাজ করছেন। তবে পুজোর আগে ফের চাঙা হচ্ছে এই শিল্পের বাজার। অনলাইনের মাধ্যমেই যাতে শিল্পীরা তাঁদের শিল্পকর্ম বিক্রি করতে পারেন তার চেষ্টা চালাচ্ছেন। শোলাশিল্পী আশিসবাবু বলেন, প্রবাসী বাঙালি চিকিৎসক বিদেশে তাঁর বন্ধুবান্ধবদের কাছে বাংলার হস্তশিল্পের সৌন্দর্যকে তুলে ধরতে চান। তাই তিনি আমাকে অনলাইনের মাধ্যমে বরাত দেন। যেভাবে বানিয়ে দিতে বলা হয়েছিল, সেভাবেই বানিয়ে পাঠিয়েছি। করোনা আবহে আমাদের বন্ধ ব্যবসায় এবার একটু আশার আলো ফুটবে বলে মনে হচ্ছে। অনলাইনে বরাত আসতে শুরু করেছে।
জানা গিয়েছে, পেপার ক্লে দিয়ে রাবণের মুখগুলি তৈরি করা হয়েছে। আর রাক্ষসরাজের মুকুট সহ অন্যান্য সাজসজ্জা তৈরি হয়েছে শোলা দিয়ে। অন্ধ্রপ্রদেশের কলমকারিকে শোলার মধ্য দিয়েও ফুটিয়ে তোলা যায়। শাড়ি বা কুর্তির উপর যেমন কমলকারি নকশা ছাপা থাকে। হুবহু তেমনই নকশা শোলা কেটে ফুটিয়ে তোলেন শিল্পীরা। মুম্বইয়ের একটি শোরুম থেকে নিয়মিত বিক্রি হয় এই ধরনের কাজ।
উল্ল্যেখ্য, মঙ্গলকোটের বনকাপাশি গ্রামে ১৯৭৯ সাল থেকে শোলাশিল্পের জন্য প্রচুর পুরস্কার এনেছেন শিল্পীরা। ১৯৯০ সালে তৎকালীন দেশের রাষ্ট্রপতি রামস্বামী বেঙ্কটরামনের হাত থেকে পুরষ্কার এনেছিলেন শোলাশিল্পী আশিস মালাকার। তার আগে শোলাশিল্পের জন্য ১৯৭৯ সালে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছিলেন কাত্যায়নী মালাকার। পরে ১৯৭৪ সালে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পান আরেক শোলাশিল্পী আদিত্য মালাকার। ২০০৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকার আদিত্যবাবুকে ‘শিল্পগুরু’ পুরস্কারে সম্মানিত করেন।
তবে এবার ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসে দিল্লির লালকেল্লাতেও মঙ্গলকোটের শোলাশিল্পের স্টল থাকছে। সেখানেও আশিসবাবুর ২২টি শিল্পকর্ম থাকবে। দেশের প্রধানমন্ত্রী ওই সময়ে লালকেল্লায় আগত অতিথিদের কাছে বাংলার শিল্পকলাকে তুলে ধরা হবে।